[email protected] বৃহঃস্পতিবার, ২১শে নভেম্বর ২০২৪, ৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

জেনে নিন গর্ভাবস্থায় জ্বর নিরাময়ের ঘরোয়া উপায়

নারী ও শিশু ডেস্ক

প্রকাশিত:
৪ সেপ্টেম্বার ২০২৩, ২১:৪৯

ফাইল ছবি

মানুষের শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৯৮.৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কিন্তু যখন শরীরের তাপমাত্রা ১০০.৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা বা তার বেশি হয় তখন তাকে জ্বর বলা হয়।

জ্বর মূলত শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার এক ধরনের প্রতিক্রিয়া। সাধারণত কোনো রোগ বা ইনফেকশন হলে তার লক্ষণ হিসেবে আমাদের জ্বর আসে।

তবে গর্ভাবস্থায় জ্বর হলে তা গুরুত্ব সহকারে নেওয়া জরুরি। কারণ গর্ভাবস্থায় জ্বর বা অতিরিক্ত তাপমাত্রা গর্ভের শিশুর ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। এমনকি অনেক সময় মা ও শিশু দুজনের জন্যই প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে।

কারণ তবে গর্ভাবস্থায় একজন নারীর রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা আগের তুলনায় দুর্বল হয়ে যায়, কারণ মা এবং শিশু উভয়কে রক্ষা করার জন্য অতিরিক্ত কাজ করতে হয়। তাই গর্ভবতী নারীদের জ্বর হলেই সাথে সাথে তা কমানোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

গর্ভাবস্থায় জ্বরের সাধারণ কারণ

১. মূত্রনালীর সংক্রমণ (ইউটিআই)
ইউটিআই বা মূত্রনালীর সংক্রমণ গর্ভাবস্থায় খুবই সাধারণ এবং এর উপসর্গ হিসাবে জ্বর হতে পারে।

২. ইনফ্লুয়েঞ্জা
গর্ভাবস্থায় সাধারণত ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাল সংক্রমণের কারণেও জ্বর হতে পারে। এই সময় সর্দি, কাশি এবং গলা ব্যথা হতে পারে। এটি সাধারণত ৩-৪ দিনের মধ্যে ভাল হয়ে যায়।

৩. ঊর্ধ্ব শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ
গর্ভাবস্থায় উচ্চ শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের কারণে ও অনেক সময় জ্বর হতে পারে। এটি শ্বাস নালীর একটি ভাইরাল সংক্রমণ। এটা সাধারণত দুই সপ্তাহের মধ্যে ভালো হয়ে যায়।

৪. পাকস্থলী ও অন্ত্রের প্রদাহ
অনেক সময় গর্ভাবস্থায় গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সংক্রমণ হতে পারে, যার কারণে জ্বর হওয়াটা স্বাভাবিক লক্ষণ। তবে এ সংক্রমণে আক্রান্ত গর্ভবতীর ডায়রিয়া এবং বমির মতো উপসর্গ থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করা উচিত।

গর্ভাবস্থায় জ্বর নিরাময়ের ঘরোয়া প্রতিকার

গর্ভাবস্থায় জ্বর হওয়াটা স্বাভাবিক, তাই জ্বর হলে বেশি চিন্তা না করে কি কারণে জ্বর হয়েছে তা বের করতে হবে এবং প্রতিকারের উপায় বের করতে হবে। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

তাই জ্বর কমাতে ঘরে বসে যে পদ্ধতিগুলো করা যায়,

১. গর্ভাবস্থায় সারাদিন হাইড্রেটেড থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর জন্য প্রচুর পানি ও তরল জাতীয় খাবার খাওয়া উচিত। যাতে করে শরীরে পানির অভাব না হয়।

২. একটি কাপড় ঠান্ডা পানিতে ভিজিয়ে নিংড়ে নিয়ে কপালে দিয়ে রাখুন। কাপড় গরম হয়ে এলে আবার পানিতে ভিজিয়ে নিংড়ে নিন এবং কপালে দিন। এভাবে করে তাপমাত্রা কিছুটা কমানো যায় এবং আরাম পাওয়া যায়।

৩. হালকা গরম বা উষ্ণ পানিতে গোসল করুন। এতে করে শরীর কিছুটা ঠান্ডা হয় ও আরাম পাওয়া যায়। তবে পানি যেনো বেশি গরম বা বেশি ঠান্ডা না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

৪. গোসল করতে না চাইলে উষ্ণ পানি দিয়ে স্পঞ্জ বাথ করুন। অর্থাৎ একটা স্পঞ্জ ভিজিয়ে নিয়ে তা দিয়ে সারা শরীর মুছে নিন।

৫. বাইরে রোদ বা গরম স্থানে না থেকে ঠান্ডা পরিবেশে থাকার চেষ্টা করুন। ঘরে ফ্যান বা এসি থাকলে তা চালু করে দিন। এতে করে শরীরের তাপমাত্রা কমে আসার পাশাপাশি ঠান্ডা হবে।

৬. যথাসম্ভব আরামদায়ক পোশাক পড়ুন। সুতি, হালকা ও ঢিলেঢালা কাপড়ের পোশাক পড়ার চেষ্টা করা উচিত।

গর্ভাবস্থায় জ্বর প্রতিরোধের উপায়

১. সর্দি বা কাশি আছে এমন কারো সংস্পর্শে না যাওয়া উচিত।

২. খুব গরমে বাইরে বের না হওয়াই ভালো। তবে বের হতে হলে বাহির থেকে ফিরেই হাত মুখ ভালো করে ধুয়ে নেয়া উচিত।

৩. বেশি বেশি করে ফল, শাক-সবজি খাওয়া উচিত। তবে আধা সিদ্ধ ডিম, মাংস, পনির এবং সামুদ্রিক খাবার না খাওয়াই শ্রেয়।

৪. মূত্রনালীর সংক্রমণ এড়াতে প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করা উচিত। সূত্র: দেশ রূপান্তর

বাংলা গেজেট/বিএম


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর