[email protected] সোমবার, ২৫শে নভেম্বর ২০২৪, ১১ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

বিশ্বকাপের যত বিদঘুটে কাণ্ডকারখানা

খেলাধুলা ডেস্ক

প্রকাশিত:
১৯ অক্টোবার ২০২৩, ১২:৫২

ফাইল ছবি

বিশ্বকাপের মঞ্চে প্রায়ই দেখা যায় এক শক্তিশালী দলের বিপক্ষে অন্য শক্তিশালী দলের লড়াই। কিন্তু দুর্বল দলের কাছে ফেভারিট দলের হার তেমনটা চোখে পড়ে না।

বিশ্বকাপে ঘটে যাওয়া অঘটনগুলো যেন ইংল্যান্ডের সঙ্গে একটু বেশি ঘটেছে। যেমন চলতি বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের কাছে ইংলিশদের হার, আলোড়ন সৃষ্টি করেছে পুরো ক্রিকেট বিশ্বে।

বিশ্বকাপের এবারের আসরে দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে নিয়ে ছেলেখেলা করেছে আফগানিস্তান। এ ম্যাচে আফগানদের দেওয়া ২৮৫ রান তাড়া করতে নেমে রশিদ-মুজিব-নবির বোলিং তোপে ২১৫ রানেই গুটিয়ে যায় ইংল্যান্ড। বিশ্বকাপে এ জয়টা রশিদ-মুজিবদের জন্য এক নতুন ইতিহাস। এমন ঘটনায় হতবাক হয় পুরো বিশ্ব।

শরণার্থী শিবির থেকে উঠে আসা আফগানরা এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো ক্রিকেট বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে। আগের দুই আসরে তাদের অর্জন বলতে কেবল স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ২০১৫ বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বে এক উইকেটের জয়।

তবে এটাই কি বিশ্ব আসরে ছোট দলের কাছে ইংল্যান্ডের প্রথম হার? না, ইংল্যান্ডের এই হোঁচট খাওয়ার গল্প আজকে থেকে নয়। এর আগেও বেশ কয়েকবার বিশ্ব মঞ্চে অঘটনরে শিকার হয়েছে ইংলিশরা। বিশ্বকাপের মঞ্চে ‘দুর্ভাগা’ বললে যেমন দক্ষিণ আফ্রিকার নাম উঠে আসে, তেমনই ‘অঘটন’ শব্দটার সমার্থক শব্দ হয়ে উঠেছে ইংল্যান্ড। প্রতি বিশ্বকাপেই কোনো না কোনো অঘটনের শিকার হয় থ্রি লায়ন্সরা। চলুন জানা যাক ইংল্যান্ডের সেই অঘটনের ইতিহাস।

ইংল্যান্ডকে বলা হয়ে থাকে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের জনক। ১৯৭৫ সালে বিশ্বকাপ আসর শুরুর পর থেকে টানা তিনটি আসর আয়োজন করে। তবে একটিতেও শিরোপা নিজেদের করতে পারেনি। পরবর্তী দুই আসর অর্থাৎ ১৯৮৭ ও ৯২ বিশ্বকাপে ফাইনালে পৌঁছালেও শিরোপা ছোঁয়ার স্বপ্ন পূরণ হয়নি থ্রি লায়ন্সদের। এরপর কখন কোয়ার্টার ফাইনাল আবার কখনও গ্রুপ পর্বের সীমানা পেরুতে পারেনি ইংলিশরা। ৪৪ বছর চেষ্টার পর ২০১৯ বিশ্বকাপে প্রথম চ্যাম্পিয়ন তকমা গায়ে জড়ায় ইংল্যান্ড।

চ্যাম্পিয়ন হিসেবে খেলতে এসে এবার নিউজিল্যান্ড, বাংলাদেশের সঙ্গে দাপুটে ক্রিকেট খেলেছে ইংল্যান্ড। এটাই তো স্বাভাবিক। তবে দারুণ ছন্দে থাকা ইংলিশদের পা কাটল পঁচা শামুকে। বাংলাদেশের কাছে নাস্তানাবুদ হয় আফগানিস্তান, তারাই কিনা হারাল বিশ্ব ক্রিকেটের সবচেয়ে অভিজ্ঞ দলকে। এই ঘটনাকে আপনি অঘটন ছাড়া আর কী বলতে পারেন!

ইংলিশদের এমন অঘটনের যাত্রা শুরু হয় ১৯৯২-এর বিশ্বকাপ থেকে। সেই আসরের সবচেয়ে দুর্বল দল জিম্বাবুয়ের কাছে হেরেছিল ইয়ান বোথাম, গ্রাহাম গুচরা। ১৩৫ রানের সহজ লক্ষ্য পেয়েও ৯ রানের পরাজয়ে ডুবেছিল তারা।

পরের অঘটনটা ২০০৩ বিশ্বকাপে। সেই আসরে অবশ্য না-খেলেই তারা জিম্বাবুয়ের কাছে হার মেনে নেয়। নিরাপত্তার অজুহাতে সহ-আয়োজক জিম্বাবুয়েতে খেলতে অস্বীকৃতি জানায় ইংলিশরা। ওয়াকওভার পেয়ে যায় জিম্বাবুয়ে। তাতে পরের ৫ ম্যাচের ৩ ম্যাচ জিতেও গ্রুপপর্বের বাধা টপকাতে পারেনি তারা।

অঘটনকে সঙ্গী করে ক্রিকেট মাঠে নামা ইংলিশরা ২০১১ বিশ্বকাপে শিকার হয় দুই অঘটনের। গ্রুপপর্বের ম্যাচে প্রথমে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৩ উইকেটে হারে ইংল্যান্ড। এরপর বাংলাদেশের বিপক্ষে ২ উইকেটে হেরে যায় তারা। দুই অঘটনের পরও অবশ্য ওই আসরের কোয়ার্টার ফাইনালে পা রাখে ইংলিশ বাহিনী। তবে ২০১৫ সালে অ্যাডিলেডে বাংলাদেশের বিপক্ষে ১৫ রানের হারে গ্রুপ পর্বের বাধা টপকানো হয়নি পরাশক্তিদের।

ক্রিকেটের এতো বড় দল হয়েও কেন বারবার ছোট দলের কাছে হোঁচট খায় ইংলিশরা? কারণ যেটাই হোক না কেন, বিশ্বকাপের মঞ্চে এমন অঘটন কে না দেখতে চায়? বিশ্বকাপের মূল মজাই তো এই অঘটনে! কে জানে হয় তো এবারের আসরে এমন অঘটন আরও ঘটতে পারে।

 

বাংলা গেজেট/এমএএইচ


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর