[email protected] শুক্রবার, ১৭ই মে ২০২৪, ৩রা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

বাংলাদেশ বিশ্বকাপ জিতলে ‘মিরাকল’ হবে

খেলাধুলা ডেস্ক

প্রকাশিত:
৩০ সেপ্টেম্বার ২০২৩, ১৯:৪৩

ছবি: সংগৃহীত

সেই ১৯৯৯ বিশ্বকাপ থেকে শুরু। এরপর থেকে বিশ্বক্রিকেটের শীর্ষ মঞ্চে বাংলাদেশ খেলেছে একে একে ৫টি বিশ্বকাপ। সঙ্গে এশিয়া কাপ, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি মিলিয়ে বহুজাতিক টুর্নামেন্টে কম খেলেনি দল। তবে তার একটিতেও কখনো শিরোপার স্বাদ পায়নি বাংলাদেশ। আরও একটা বিশ্বকাপ দুয়ারে কড়া নাড়ছে। যা আগে কখনো হয়নি, তা কি এবার হবে? এ প্রসঙ্গে বর্তমান নির্বাচক, সাবেক ক্রিকেটার ও সাংবাদিকরা জানালেন তাদের মত।

২০০৭ বিশ্বকাপের এদিক ওদিকে সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ যখন বাংলাদেশের ক্রিকেটে আসেন, তখন দলটা মোটাদাগে ছিল ছোট দলই। কিন্তু শেষ দেড় দশকে সে তকমাটা মুছে গেছে, তাতে বড় অবদান আছে সাকিব-মুশফিক আর রিয়াদের। বিশেষ করে ওয়ানডে ফরম্যাটে, যে ফরম্যাটের বিশ্বকাপ শুরু হতে যাচ্ছে এই আগামী সপ্তাহেই।

এই তিনজন, সঙ্গে তামিম ইকবাল আর মাশরাফি বিন মুর্তজা একসঙ্গে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের জার্সি গায়ে নেমেছিলেন ২০০৭ সালে, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার এইটে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। তার আগ পর্যন্ত সব ফরম্যাট মিলিয়ে ২১৮ ম্যাচের ভেতর জিতেছিল মোটে ৪০টিতে। তার ভেতর হাতে গোণা কয়েকটাই কেবল ছিল র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ দলগুলোর বিপক্ষে।

তবে শেষ দেড় দশকে বাংলাদেশ প্রায় ৪০ শতাংশ মাচে জিতেছে। শীর্ষ অনেক দলের বিপক্ষে আছে অন্তত পাঁচটি করে জয়। টি-টোয়েন্টির বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ জয়ে আরও একটা বক্সে টিক দিয়েছে বাংলাদেশ, যে কোনো ফরম্যাটে সব দলের বিপক্ষে এখন অন্তত একটি করে হলেও সিরিজ জয় আছে দলের।

তবে এই সিরিজ জয়গুলো পূর্ণতা পাবে দল যদি বড় কোনো প্রতিযোগিতার শিরোপা ঘরে তোলে। যা এখনো বাংলাদেশ পারেনি। ২০১৯ বিশ্বকাপের ঠিক আগে আয়ারল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ত্রিদেশীয় সিরিজটা একপাশে রাখলে আর কোনো বহুজাতিক টুর্নামেন্টও জেতা হয়নি বাংলাদেশের। সর্বোচ্চ সাফল্যটা এশিয়া কাপ ফাইনালে খেলা। ২০১২, ২০১৬ আর ২০১৮ সালের আসরে ফাইনালে খেলে হেরেছিল সবকটিতে।

’আর আইসিসি টুর্নামেন্টে দলের সর্বোচ্চ সাফল্য ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালে খেলা। সেখানেও ভারতের কাছে হেরে দেশে ফিরতে হয়েছিল বাংলাদেশকে। সাফল্যের কাছে গিয়েও বারবার এমন বঞ্চনাই যেন নিয়তি।

যদিও দলটির সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশার জানালেন, এই দলটার আরও ভালো কিছুই প্রাপ্য ছিল। তিনি বলেন, ‘দল হিসেবে এই গ্রুপটার আরও বড় কিছু প্রাপ্য ছিল। এই খেলোয়াড়রা বাংলাদেশ ক্রিকেটে এমন কিছু করেছে, যা অতীতে কখনো হয়নি। তারা অনেক কিছু অর্জন করেছে, নিঃসন্দেহে। কিন্তু বড় কোনো শিরোপা এখনো জিততে পারেনি, এটা আফসোসের বিষয়।’

বাংলাদেশ বর্তমানে আছে ওয়ানডে র‍্যাঙ্কিংয়ের সাতে। দলের পরিস্থিতিটাও খুব একটা ভালো নয়। এবারের বিশ্বকাপেও সে খরা কাটাবে দল, তার পক্ষে বাজি ধরার লোকও একেবারেই মিলবে না এখন।

বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সেরা সাফল্য ২০১৫ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে খেলা।

তবে সে সাফল্য এবার গ্রুপ পর্ব পেরোলেই পেছনে ফেলতে পারবে বাংলাদেশ, দ্বিতীয় রাউন্ডটাই যে সেমিফাইনাল! যদিও সে সম্ভাবনা ক্ষীণ বলেই মনে করেন সাংবাদিক ও ক্রিকেট বিশ্লেষক এম এম কায়সার। তার ভাষ্য, ‘বিশ্বকাপের ঠিক আগে দলের যে বিল্ড আপ আমরা দেখেছি, তাতে আমি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সম্ভাবনা নিয়ে খুব বেশি আশাবাদী হতে পারছি না।’

বিশ্বকাপের তিন মাস আগে বাংলাদেশের অধিনায়ক করা হয় সাকিব আল হাসানকে। এরপর বিশ্বকাপের ঠিক আগে সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবালের সঙ্গে শীতল সম্পর্কের বিষয়টি আরও স্পষ্টভাবে চলে এসেছে জনসম্মুখে। যার ফলে দলের পরিবেশটা আরও খারাপের দিকেই গিয়েছে বৈকি!
এমন পরিস্থিতি থেকেও বাংলাদেশ বিশ্বকাপটা জিতে যেতে পারে, বিশ্বাস সাবেক ওপেনার জাভেদ ওমর বেলিমের। তবে এক্ষেত্রে তিনি একটা শর্ত জুড়ে দিয়েছেন। বিশ্বকাপে ঘটাতে হবে ‘অলৌকিক’ কিছু।

তার কথা, ‘এখানে সবাই ভালো খেলোয়াড়। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আমরা তাদের সীমাটা আমরা দেখে ফেলেছি। পরের পর্যায়ে যেতে হলে, যেমন ধরুন বিশ্বকাপ জেতা… সেটা করতে হলে তাদের অসাধারণের চেয়েও বেশি ভালো খেলতে হবে, কিংবা অলৌকিক কিছু ঘটিয়ে ফেলতে হবে।’
আগামী ৭ অক্টোবর ধর্মশালায় আফগানিস্তানের বিপক্ষে মাচ দিয়ে নিজেদের এবারের বিশ্বকাপ মিশন শুরু করবে বাংলাদেশ।

 

 

বাংলা গেজেট/এমএএইচ


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর