প্রকাশিত:
৪ সেপ্টেম্বার ২০২৩, ১৮:১৪
‘আমরা এখন আফগানিস্তান-শ্রীলঙ্কা ম্যাচের দিকে তাকিয়ে থাকবো। আশা করছি পরের রাউন্ডে (সুপার ফোর) যেতে পারবো’-ম্যাচ শেষে প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন বল হাতে জয়ের নায়ক তাসকিন আহমেদ। তবে বাংলাদেশ যেভাবে জয় তুলে নিয়েছে তাতে তাসকিনের আশাই সত্যি হতে যাচ্ছে।
লাহোরে (৩ সেপ্টেম্বর) আফগানদের উড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। ‘মাস্ট উইন গেইমে’ সাকিব আল হাসানের দল কর্তৃত্ব দেখিয়েই জয় নিশ্চিত করেছে। ব্যাট হাতে এশিয়া কাপে সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহের রেকর্ডের পর বল হাতে আফগানদের আড়াইশর আগেই অলআউট করে ৮৯ রানের জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।
আর তাতে বাংলাদেশের রান রেট দাঁড়িয়েছে ০.৩৭৩। ০.৯৫১ রান নিয়ে সবার উপরে শ্রীলঙ্কা। আর মাইনাস ১.৭৮০। গ্রুপ বি থেকে দ্বিতীয় ম্যাচ শ্রীলঙ্কা জয় পেলে কোনো সমীকরণ ছাড়াই বাংলাদেশ চলে যাবে সুপার ফোরে, আর যদি আফগানরা ১০০ রানের মার্জিন কিংবা ১৫ ওভার হাতে রেখে জিতে তাহলে তারাই সুপার ফোরে যাবে বাংলাদেশের সঙ্গে। তখন রানরেটে পিছিয়ে যাবে শ্রীলঙ্কা, বাদ পড়বে তারা। সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশ বি গ্রুপে শক্তিশালী স্থানে অবস্থান করছে।
টস জিতে বাংলাদেশ মেহেদি হাসান মিরাজ-নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাটে ভর করে ৫ উইকেটে ৩৩৪ রান করে বাংলাদেশ। রান তাড়া করতে নেমে আফগানিস্তান ৪৪.৩ ওভারে ২৪৫ রানে অলআউট হয়।
রান তাড়া করতে শুরুতে শরিফুলের আঘাতে সাফল্য বাংলাদেশ। তবে দ্রুত ধাক্কা সামলে প্রতিরোধ গড়ে রহমত শাহ-ইবরাহীম জাদরান। দুজনে ৯৭ বলে ৭৮ রান যোগ করেন। রহমতকে ৩৩ রানে ফিরিয়ে সেই জুটি ভাঙেন তাসকিন। রহমত ফিরলে এবার অধিনায়ক হাশমতুল্লাহকে সঙ্গে নিয়ে আবার ফিফটির জুটি গড়েন ইবরাহীম। দুজনে রানের চাকা সচল রেখে ৫৮ বলে ৫২ রান যোগ করেন।
ইবরাহীম ফিরলে ভাঙে সেই জুটি। তার ব্যাট থেকে আসে সর্বোচ্চ ৭৫ রান। ইবরাহীম ফিরলে নাজিবুল্লাহকে সঙ্গে নিয়ে এবার ফিফটির জুটি গড়েন আফগান অধিনায়ক। দুজনের জুটি থেকে আসে ৫২ রান। নাজিবুল্লাহ ফিরলে ভাঙে এই জুটি। এরপর আর দাঁড়াতে পারেনি। ৪৯ রানে আফগানরা বাকি ৫ উইকেট হারিয়ে অলআউট হয়।
বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন তাসকিন। তিনি মাত্র ৪৪ রান দিয়ে এই উইকেটগুলো নেন। শরিফুলের ঝুলিতে জমা হয় ৩ উইকেট। তবে তিনি ছিলেন কিছুটা খরুচে। ৬১ রান দেন শরিফুল। ১টি করে উইকেট নেন হাসান মাহমুদ ও মিরাজ।
এর আগে বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ে নামে ওপেনিং জুটিতে পরিবর্তন এনে। নাঈম শেখের সঙ্গী হন মিরাজ। দুজনে ভালো শুরু এনে দেন। নাঈম ঝলক দেখালেও ২৮ রানের বেশি করতে পারেননি। এরপর শুরু হয় শান্ত-মিরাজের মহাকাব্য। দুজনে জুটিতে যোগ করেন ১৯৪। এশিয়া কাপে যা বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জুটি। এর আগে সর্বোচ্চ ছিল ১৬০। ইমরুল কায়েস-জুনয়াদে সিদ্দিকী এই কীর্তি গড়েছিলেন।
শান্ত-মিরাজ দুজনেই তুলে নেন দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। ১১৫ বলে সেঞ্চুরি করা মিরাজ রিটায়ার্ড হার্ট হন ১১২ রানে। মিরাজ ফেরার পর শান্ত সেঞ্চুরি তুলে নেন ১০১ বলে। ব্যাট কোলে দুলিয়ে পুত্রকে সেই সেঞ্চুরি উদযাপন করেন শান্ত। তবে রানআউটে ১০৪ রানে কাটা পড়েন শান্ত। রানআউটে মুশফিকুর রহিম (২৫) ফিরলেও সাকিব ১৮ বলে ৩২ রানের ক্যামিও ইনিংসে বাংলাদেশকে এনে এশিয়া কাপে দলীয় সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়েন। অভিষিক্ত শামীম ছক্কা মেরে ইনিংস শুরু করলেও ১০ রানের বেশি করতে পারেননি। রানআউটে তিনি ফেরেন।
বাংলাদেশ আজ নামে তিন পরিবর্তন নিয়ে। বাদ পড়েন তানজীদ হাসান তামিম, মোস্তাফিজুর রহমান ও শেখ মেহেদি। পরিবর্তে আসেন আফিফ হোসেন, শামীম পাটোয়ারি ও হাসান মাহমুদ। টিম ম্যানেজম্যান্ট সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়ে মিরাজকে ওপেনিংয়ে পাঠায়। সেই সিদ্ধান্তে শতভাগ সফল বাংলাদেশ।
ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে বলেছিলেন তাদের প্রত্যাশা পরের পর্বে (সুপার ফোর) যাওয়া। বড় জয়ে বাংলাদেশের সুপার ফোর প্রায় নিশ্চিত এবার টিম বাংলাদেশের সামনে বড় প্রত্যাশা। সূত্র: রাইজিংবিডি
বাংলা গেজেট/বিএম
মন্তব্য করুন: