[email protected] শুক্রবার, ২৭শে ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ই পৌষ ১৪৩১

ব্যাটে-বলে বিশ্বকাপেও জ্বলে উঠবেন মিরাজ!

খেলাধুলা ডেস্ক

প্রকাশিত:
৬ অক্টোবার ২০২৩, ১৯:৪৮

ফাইল ছবি

বয়স যে খুব বেশি তা কিন্তু নয়, মাত্র ২৫। তবে বিশ্ব ক্রিকেটে পরিচিত মুখ তো বটেই অভিজ্ঞও। আগের বিশ্বকাপে খেলার অভিজ্ঞতা নিয়ে এবার ভারতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন। মেহেদী হাসানের মূল দায়িত্বটা বল হাতে। কিন্তু ব্যাট হাতেও তিনি সমান পারঙ্গম।

সাধারণত লোয়ার অর্ডারে ব্যাট করেন। কিন্তু দলের প্রয়োজনে যে কোনো স্থানে ব্যাট হাতে ঝড় তুলতে পারার অসাধারণ ক্ষমতা রয়েছে তার। এমনকি ওপেনার হিসেবে ব্যাট চালাতে পিছপা হন না। এশিয়া কাপেই ওপেনার হিসেবে সেঞ্চুরি করার রেকর্ড রয়েছে মিরাজের। বল হাতেও একই দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা রয়েছে। ডানহাতি এ অফব্রেক বোলার বোলিংয়ের প্রয়োজনে নতুন বল হাতে নিতে প্রস্তুত।

ওয়ানডে ক্যারিয়ার (২০১৬-২০০৩) : ম্যাচ: ৮২, রান: ১০৪৬, সর্বোচ্চ ১১২*, গড়: ২৩.২৪, সেঞ্চুরি: ২টি, হাফ সেঞ্চুরি : ২টি, উইকেট: ৯১, সেরা: ৪/২৫, গড়:৪২.৬, ৪ উইকেট: ৫ বার)

বরিশালে জম্ম হলেও মেহেদী হাসান মিরাজ বেড়ে উঠেছেন খুলনায়। মাত্র আট বছর বয়সে ক্রিকেট হাতেখড়ি তার। সাবেক ক্রিকেটার শেখ সালাউদ্দিনের স্নেহের ছায়ায় ক্রিকেটের সঙ্গে সখ্য গড়ে ওঠে মিরাজের। কাশিমপুর ক্রিকেট একাডেমিতে প্রশিক্ষণে থাকার সময় মিরাজ অনুর্ধ্ব-১৪ দলে ডাক পান। এরপর থেকে মিরাজের শুধু সামনে এগিয়ে চলা। তারই ধারাবাহিকতায় ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ ক্রিকেটে তার হাতে তুলে দেয়া হয় দলের নেতৃত্ব।

ঘরের মাঠে অনুষ্ঠিত অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে দলকে শিরোপা এনে দিতে পারেননি। তবে দারুণ একটা টুর্নামেন্ট শেষ করেছিলেন। সেমিফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হেরে ফাইনালে উঠতে ব্যর্থ হলেও আলো ছড়িয়েছিলেন মিরাজ। ২৪২ রান আর ১২ উইকেট নিয়ে হয়েছিলেন টুর্নামেন্ট সেরা।

এমন একটা টুর্নামেন্টের পর তার মেধা নিয়ে কারো সন্দেহ ছিল না। তাইতো অফব্রেক বোলার হওয়া সত্ত্বেও অভিষেক টেস্টে তার হাতে নতুন বল তুলে দেওয়া হয়েছিল। ওই ম্যাচে ইংল্যান্ডের হয়ে অভিষেক হয়েছিল বেন ডাকেটের। কাকতলীয় বিষয়, বেন ডাকেটের উইকেটটা মিরাজের ঝুলিতে জমা পড়ে।

অভিষেক টেস্টে পাঁচ উইকেট নেয়ার কীর্তি গড়েছিলেন। শুধু হাই নয়, পরের টেস্ট উভয় ইনিংসে ছয়টি করে উইকেট নেন তিনি। সব মিলিয়ে দুই টেস্টে ১৯ উইকেট নিয়ে সিরিজ সেরা হয়েছিলেন মিরাজ। অভিষেক সিরিজে বাংলাদেশের মধ্যে তো প্রথমই, বিশ্ব ক্রিকেটে এর আগে এমন ঘটনা ঘটেছিল মাত্র আটবার।

অভিষেকের পর থেকে মিরাজ শুধু নিজেকেই ছাড়িয়ে যাচ্ছেন। একজন নিবেদিতপ্রাণ ক্রিকেটার হিসেবে তার সুখ্যাতি। দলের জন্য নিজেকে পুরোপুরি উজাড় করে দিতে পারেন। বোলিংয়ের পাশাপাশি ব্যাটিংয়ে দলের মধ্যে আস্থার প্রতীক হয়ে উঠেছেন। ২০২২ সালে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৪৫ রানে ৬ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর আফিফকে নিয়ে অনবদ্য এক জয় এনে দিয়েছিলেন তিনি। ভারতের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছেন।
এশিয়া কাপে ‘মেকশিফট ওপেনার’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে নেমে দারুণ আস্থার পরিচয় দিয়েছেন। সেঞ্চুরি করে ম্যাচ জয়ের নায়কে পরিণত হন।

বিশ্বকাপের আগে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচের একটিতে তিন নম্বরে, অন্যটিতে ব্যাট করতে নেমেছিলেন চার নম্বরে। দুই পজিশনেই করেছেন হাফ সেঞ্চুরি।

ওপেনিংয়ে বরাবরই সমস্যায় রয়েছে বাংলাদেশ। তামিম ইকবাল নেই। জুনিয়র তামিমের (তানজিদ হাসান তামিম) আস্থা রাখার পরও যদি কাঙ্খিত সাফল্য না আসে, তাহলে হয়তো মেকশিফট ওপেনার হিসেবে মিরাজকেই দেখা যেতে পারে ইনিংস ওপেন করতে।

পরিস্থিতি এমন অবস্থায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে যে, দলীয় সাফল্যের জন্য সাকিব আল হাসানের পর মেহেদী হাসান মিরাজের ব্যাট এবং বলের দিকেই তাকিয়ে থাকবে বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা। বোলিংয়ের পাশাপাশি ব্যাটিংয়ে যদি মিরাজের ব্যাট বিশ্বকাপে কথা বলে তাহলে স্বপ্ন দেখতেই পারে বাংলাদেশ।

 

বাংলা গেজেট/এমএএইচ


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর