[email protected] শনিবার, ২৮শে ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪ই পৌষ ১৪৩১

আমরা যুদ্ধবিরতি চুক্তির খুব কাছাকাছি: বাইডেন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত:
২২ নভেম্বার ২০২৩, ০৯:২২

ফাইল ছবি

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী হামাসের সাথে ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি চুক্তির কাছাকাছি রয়েছি বলে মন্তব্য করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

মঙ্গলবার ওয়াশিংটনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেছেন, ‘‘আমরা কয়েক সপ্তাহ ধরে জিম্মিদের বের করে আনার জন্য কাজ করছি। আমরা এখন চুক্তির খুব কাছাকাছি রয়েছি।

‘‘আমরা শিগগিরই কিছু জিম্মিকে ইসরায়েলে আনতে পারি। তবে সবকিছু সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত কিছুই বলা যাচ্ছে না,’’ যোগ করেন তিনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মার্কিন এক কর্মকর্তা ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, আলোচিত চুক্তি অনুযায়ী ৫০ জন জিম্মির মুক্তির বিনিময়ে ইসরায়েলের কারাগারে বন্দী ১৫০ ফিলিস্তিনি মুক্তি পাবেন; যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। আর এই যুদ্ধবিরতির মেয়াদ হবে চার থেকে পাঁচদিন।

হামাস-ইসরায়েল চুক্তির বিষয়ে জো বাইডেন বলেছেন, ‘‘আমরা এখন খুব কাছাকাছি, খুব কাছাকাছি রয়েছি। এবং খুব শিগগিরই কিছু জিম্মিকে ইসরায়েলে আনতে পারি। আমি এই বিষয়ে বিস্তারিত বলতে চাই না। আমাদের অনেক কিছু বলার আছে, আমরা বলবো। তবে এই মুহূর্তে সবকিছু ভালো দেখা যাচ্ছে।’’

মার্কিন এই প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘‘আমরা এই চুক্তির বিষয়ে কয়েক সপ্তাহ ধরে নিবিড়ভাবে কাজ করছি, যেমনটা আপনারা জানেন।’’ এ সময় তিনি গত কয়েক দিনে হামাস-ইসরায়েলের চুক্তিতে মধ্যস্থতাকারী কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানি ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সাথে টেলিফোনে কথোপকথনের দিকে ইঙ্গিত করেন।

মার্কিন কর্মকর্তারা গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ওই অঞ্চলের দেশগুলো চষে বেড়াচ্ছেন বলেও জানিয়েছেন বাইডেন। তবে কতসংখ্যক মার্কিন জিম্মি এই চুক্তির আওতায় মুক্তি পেতে যাচ্ছেন, সেই বিষয়ে সিএনএনের এক প্রশ্নের কোনো জবাব দেননি তিনি।

গাজা উপত্যকায় হামাস-ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতির চূড়ান্ত চুক্তি আর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ঘোষণা হতে পারে বলে ইসরায়েলি গণমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে। ইসরায়েলের সাথে হামাসের এই চুক্তিতে কী কী শর্ত উভয়পক্ষ জুড়ে দিয়েছে, সেই বিষয়ে ইসরায়েলি টেলিভিশন চ্যানেল-১২ বলছে, গাজায় হামাস এবং অন্যান্য গোষ্ঠীগুলোর হাতে বন্দী জিম্মিদের মুক্তির জন্য যে চুক্তিটি বাস্তব রূপ পেতে যাচ্ছে, তাতে আগামী কয়েক দিনে অন্তত ৫০ জন ইসরায়েলিকে মুক্তি দেওয়া হবে।

ইসরায়েলের সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে চ্যানেল-১২ বলছে, মঙ্গলবার চূড়ান্ত করা চুক্তিতে ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির বিষয়টিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। আর এই জিম্মিদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। তবে বিদেশি জিম্মিদের মুক্তির বিষয়ে এই মুহূর্তে টেবিলে কোনো আলোচনা নেই।

হামাস এবং গাজার অন্যান্য গোষ্ঠীগুলো গত ৭ অক্টোবর হামলা চালিয়ে ইসরায়েল থেকে ২৪০ জনের বেশি মানুষকে ধরে নিয়ে উপত্যকায় জিম্মি করে রেখেছে। এই জিম্মিদের মধ্যে প্রায় ৪০ শিশু, কয়েকজন বৃদ্ধ এবং কয়েক ডজন থাই ও নেপালি নাগরিক রয়েছেন।

চুক্তির বিষয়ে অবগত দুটি সূত্রের বরাত দিয়ে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি বলছে, শর্ত অনুযায়ী ইসরায়েলের ৫০ থেকে ১০০ বেসামরিক জিম্মিকে মুক্তি দেবে হামাস। তবে কোনো সামরিক কর্মকর্তাকে মুক্তি দিতে রাজি হয়নি তারা। 

চুক্তি অনুযায়ী, কয়েক দিন ধরে জিম্মিদের ধাপে ধাপে মুক্তি দেওয়া হবে। প্রত্যেক দিন ১০ জিম্মির বিনিময়ে ইসরায়েলের কারাগারে বন্দী ৩০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিতে হবে। একই সূত্র বলেছে, চুক্তিতে চার থেকে পাঁচ দিনের জন্য স্থলভাগে ‘‘সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতি’’ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

চ্যানেল-১২ বলেছে, বহুল প্রত্যাশিত চুক্তিতে ইসরায়েলে প্রায় ১৫০ থেকে ৩০০ ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তির শর্ত রয়েছে। আর মুক্তিপ্রাপ্ত ফিলিস্তিনি বন্দীদের মধ্যে নারী ও শিশুরা থাকবে।

সূত্রের বরাত দিয়ে এএফপি বলেছে, চুক্তি অনুযায়ী গাজায় খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তার পাশাপাশি ১০০ থেকে ৩০০ ট্রাককে প্রবেশের অনুমতি দিতে হবে। চ্যানেল-১২ বলছে, গাজা থেকে জিম্মিদের মুক্তি আগামী বৃহস্পতিবার বা শুক্রবার শুরু হতে পারে। প্রাথমিকভাবে ৫০ কিংবা আর কিছু জিম্মির মুক্তির পর বাকিদের মুক্ত করতে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বৃদ্ধি করতে পারে ইসরায়েল।

গত ৭ অক্টোবর সীমান্ত পেরিয়ে ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গাজার ক্ষমতাসীন সশস্ত্রগোষ্ঠী হামাস। ওই দিন স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে ইসরায়েলে ঢুকে শত শত ইসরায়েলিকে হত্যা এবং ২৪০ জনের বেশি ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিককে ধরে নিয়ে গাজায় জিম্মি করে হামাস।

এই হামলার পর গাজায় তীব্র আক্রমণ শুরু করে ইসরায়েল। ফিলিস্তিনি এই উপত্যকায় ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত ১৩ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে; বাস্তুচ্যুত হয়েছেন আরও লাখ লাখ মানুষ।

বাংলা গেজেট/এফএস


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর