প্রকাশিত:
১৮ নভেম্বার ২০২৩, ২০:২৮
চলচ্চিত্র জগতে সিলভার জুবিলির মাইলফলক স্পর্শ করলেন চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ। এ বছরই সিনেমায় তার ২৫ বছর পূর্ণ হয়েছে। প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ‘হঠাৎ বৃষ্টি’ দিয়েই তিনি তারকাখ্যাতি পান। এই সিনেমা তাকে এনে দেয় শ্রেষ্ঠ অভিনেতার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও। আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি এই নায়ককে। শুধুই সামনের দিনে এগিয়ে চলেছেন।
জনপ্রিয় এই নায়কের সেই কালজয়ী সিনেমা ‘হঠাৎ বৃষ্টি’র পচিশ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে চ্যানেল আই বিশেষ আয়োজন করেছে। আজ বিকেলে সেই আয়োজন বসবে চ্যানেলটির ছাদ বারান্দায়। জানা গেছে, অনুষ্ঠানটির মূল বিষয়বস্তু একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন। বইটির নাম ‘চিত্রনাট্য ও অন্যান্য প্রসঙ্গ’। অর্থাৎ এই বইয়ে থাকছে বাসু চ্যাটার্জির রচনায় ‘হঠাৎ বৃষ্টি সিনেমা’র মূল চিত্রনাট্য এবং সঙ্গে থাকছে এই সিনেমার অনেক স্থিরচিত্র, শিল্পী-কলাকুশলির অভিজ্ঞতার কথা ইত্যাদি।
স্বাভাবিকভাবেই অনুষ্ঠানের লাইমলাইটে থাকবেন ফেরদৌস আহমেদ। পাশাপাশি দেশের আরও বরেণ্য সব তারকারা উপস্থিত থাকবেন বলে চ্যানেল আই কতৃপক্ষ জানিয়েছেন। বইটি সম্পাদনা করেছেন প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ছটকু আহেমেদ। তিনিসহ আরও উপস্থিত থাকবেন ‘হঠাৎ বৃষ্টি’র প্রযোজক হাবিবুর রহমান খান এবং ইমপ্রেস টেলিফিল্মস ও চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর।
‘হঠাৎ বৃষ্টি’ সিনেমার সঙ্গে যুক্ত হওয়া প্রসঙ্গে ফেরদৌস আহমেদ বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘সালমান শাহর মৃত্যুর পর তার অর্ধেক কাজ করা ‘বুকের ভেতর আগুন’ ও ‘পৃথিবী আমাকে চায় না’ ছবি দুটির সঙ্গে যুক্ত হই। সেই সময়েই আবার ‘‘হঠাৎ বৃষ্টি’’র নায়ক খুঁজতে বাসু চ্যাটার্জি ঢাকায় আসেন। সেই গল্প অনেকেই জানে। তো ‘‘হঠাৎ বৃষ্টি’’ হয়ে যাওয়ার পর আব্বা ওয়াস সো হ্যাপি। কারণ আব্বা আবার প্রচুর সিনেমা দেখতেন। তার প্রিয় সিনেমা ছিল বাসু দা’রই ছবি ‘‘শৌখিন’’। সেই পরিচালকের ছবিতেই কাজ করেছি, এটা তাকে তৃপ্ত করে।’
‘হঠাৎ বৃষ্টি’র প্রথম দিনের শ্যুটিং অভিজ্ঞতা আজীবন মনে রাখবেন ফেরদৌস। তিনি বলেন, ‘আমি আসলে প্রথম যেদিন বাসু চ্যাটার্জির পরিচালনায় ‘‘হঠাৎ বৃষ্টি’’র জন্য ক্যামেরার সামনে দাঁড়াই, শট শেষ হতেই অবাক হয়ে দেখি কয়েক শ জার্নালিস্ট এসেছেন। কারণ বাসু চ্যাটার্জি প্রথম বাংলা সিনেমা করছেন, তিনি না বলিউড, না কলকাতা, না ভারতের অন্য কোনো ইন্ডাস্ট্রি থেকে নায়ক নিলেন! কেন বাংলাদেশি একটি ছেলেকে নিলেন, সেটা দেখতেই সাংবাদিকরা এসেছেন। আমাকে তারা অনেক প্রশ্ন করেন। আমি আমার মতো উত্তর দিয়েছিলাম। এখন মনে হয় সব বোকা বোকা উত্তরই হয়তো দিয়েছিলাম। তবে একটা চিন্তা আমার মধ্যে খেলতে শুরু করে। সেটি হলো দায়িত্ববোধ। কারণ আমি একটি দেশের প্রতিনিধিত্ব করছি। আই হ্যাভ টু প্রুভ মাইসেলফ। এ জন্য কখনোই আমি এমন কিছু করিনি যাতে আমার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের বদনাম হয়। এ জন্য আই হ্যাভ টু ডু লট অব সেক্রিফাইস।’
ক্যারিয়ারের শুরুর দিকের সিনেমা ‘হঠাৎ বৃষ্টি’র জন্য সেরা অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পেলেন। সেই অনুভূতি এতো বছর পর আবারও জানালেন নায়ক, ‘হ্যাঁ। সেই খবরও আব্বা শুনেছিলেন। তার পর তো তিনি আর আমাদের মাঝে রইলেন না। তো এখন পেছন ফিরে তাকালে আনন্দ লাগে যে আব্বার মন ভরাতে পেরেছি। হয়তো তিনি আমার এত বড় সফলতা দেখে যেতে পারেননি। কিন্তু প্রথম দিককার সিনেমায় আমার অর্জন, নামডাক দেখে তিনি ছেলেকে নিয়ে চিন্তামুক্ত হয়েছিলেন।’
বাংলা গেজেট/এমএএইচ
মন্তব্য করুন: