প্রকাশিত:
২৯ আগষ্ট ২০২৩, ০৩:২৪
নওগাঁর আত্রাই উপজেলার ভোঁপাড়া গ্রামের প্রবাসী যুবক শফিকুল ইসলাম। ২০০৯ সালে একই গ্রামের মঞ্জিল শেখের মেয়ে মুন্নি আক্তারের সঙ্গে বিয়ে হয় তার। তাদের ঘরে আট বছরের একটি ছেলেসন্তান আছে।
২০১০ সালে কাজের সন্ধানে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই যান। বিদেশ থাকাকালে মাঝে মাঝে বাড়িতে আসেন। এরপর ২০১৪ সালে আবার মালয়েশিয়ায় যান কাজের সন্ধানে।
শফিকুল ইসলাম জানান, গত ৫ আগস্ট তিনি জানতে পারেন, মুন্নির সঙ্গে একই গ্রামের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য বিপ্লব আকন্দ ঘর-সংসার করছেন। এরপর শফিকুল ইসলাম ছুটি নিয়ে ২২ আগস্ট দেশে এসে মুন্নির বাবার বাড়ি গেলে তাকে বাড়িতে প্রবেশ করতে বাধা দেয়া হয়। সে সময় মুন্নি ও তার পরিবারের সদস্যরা জানান, শফিককে তালাক দিয়ে বিপ্লবের সঙ্গে মুন্নির বিয়ে হয়েছে, কিন্তু কোনো তালাকনামা দেখাতে পারেনি মুন্নির পরিবার।
তিনি জানান, ইউপি সদস্য প্রভাবশালী হওয়ায় তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে চাইছেন না কেউ। এ ছাড়া শফিকুলের পাঠানো প্রায় ১৮ লাখ টাকা ও দুই ভরি স্বর্ণ হাতিয়ে নিয়েছেন মুন্নি ও বিপ্লব।
তালাকের বিষয়ে শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমাকে যে তালাক দিয়েছে, তার কোনো বৈধ কাগজপত্র নাই। তালাক দিতে হলে কাজী অফিসে বা কোর্টের মাধ্যমে তালাক দিতে হয়, সেটা করা হয়নি।
‘এ ছাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে তালাকনামার কপি যাবে, কিন্তু সেটাও করা হয়নি বা আমাকে জানানো হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিদেশ থাকাকালে আমি প্রতি মাসেই মুন্নিকে টাকা পাঠাই। এ পর্যন্ত প্রায় ১৮ লাখ টাকা পাঠিয়েছি। সে টাকাগুলো মুন্নি ও বিপ্লব আত্মসাৎ করে আমাকে পথে বসিয়েছে।’
মুন্নির বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। মুন্নির মা ছালেয়া বেগমের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি বলেন, ‘আমার মেয়ে আর শফিকুলের সঙ্গে সংসার করবে না। শফিকুলকে তো তালাক দিয়েছে।’
তালাক দিলে তালাকনামা দেখাতে পারছেন না কেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোনো উত্তর না দিয়ে ফোনের সংযোগ কেটে দেন।
বিপ্লব আকন্দ বলেন, ‘মুন্নি আর শফিকুলের বউ নাই। মুন্নি আমার বউ। আমি তাকে বিয়ে করেছি।’
তালাকনামার কাগজপত্র দেখতে চাইলে তিনি নিউজবাংলাকে উত্তেজিত হয়ে বলেন, ‘আপনাকে সবকিছু দেখানোর প্রয়োজন মনে করছি না।’ এরপর তিনি ফোন কেটে দেন।
ভোঁপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন মন্ডল বলেন, ‘আমি জানি বিপ্লব ও মুন্নির বিয়ে হয়েছে, তবে কতটুকু আইন মেনে বিয়ে করেছে, তা জানা নেই।
‘শফিকুল মৌখিকভাবে অভিযোগ করেছেন। সবাই বসে বিষয়টা সুরাহা করা হবে।’
শফিকুল এ ঘটনার সুষ্ঠ বিচার চান। বিপ্লব ও তার পরিবার প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে থানায় অভিযোগ করারও সাহস পাচ্ছেন না বলে জানান তিনি।
বাংলা গেজেট/এফএস
মন্তব্য করুন: