প্রকাশিত:
১৬ আগষ্ট ২০২৩, ০০:৪৪
গভীর শ্রদ্ধায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করেছে রাজশাহীবাসী। জাতির জনকের ৪৮তম শাহাদতবাষির্কীতে মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) দিনভর আয়োজন ছিল নানান কর্মসূটির।
রাজশাহী জেলা প্রশাসন, সিটি করপোরেশনসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তর, সংস্থা, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করে দিবসটি।
সকালে জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে এনিয়ে আলোচনা সভা আয়োজন করে রাজশাহী জেলা প্রশাসন। ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক এ সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর।
বিভাগীয় কমিশনার বলেন, আজকে আমরা যে দিবস পালন করতে এসেছি এর অতীত ছিল অনেক নির্মম এবং নিষ্ঠুর। ৭৫’র এই দিনে ভোরবেলা বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদেরকে হত্যা করা হয়, এমন কি তাঁর ১০ বছরের ছেলে রাসেলকেও হত্যা করে ঘাতকেরাÑ এই ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে কলঙ্কিত এক অধ্যায়।
ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সঠিক ভাবে জানতে হলে ব্যক্তি হিসাবে না- তাঁর নীতি ও আদর্শকে জানতে হবে। আমরা যদি তাঁর নীতি ও আদর্শকে সঠিকভাবে ধারণ ও লালন করি, তবেই আজকে এই দিনটি সার্থকভাবে পালিত হবে।
তিনি আরও বলেন, নিরাপত্তার কথা ভেবে অনেক মহল থেকে বঙ্গবন্ধুকে গণভবনের বাসায় ওঠার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল; কিন্তু তিনি উঠেননি। তিনি বলেছিলেনÑ ‘ধানমন্ডির ৩২নং রোডের ৬৭৭নং বাসা ছেড়ে গেলে আমি মানুষের কাছ থেকে অনেক দূরে সরে যাব- আমি তা চাই না, আমি মানুষের পাশে থাকতে চাই।’
অনেকেই বলেছিল সেনা সদস্যরা আপনাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করছে, তা শুনে বঙ্গবন্ধু হেসে উড়িয়ে দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেনÑ ‘পাকিস্তানি সেনারা ষড়যন্ত্র করে আমার কিছু করতে পারেনি, আর ওরা তো আমার নিজের মানুষ, ওরা আমার কিছুই করবে না।’ তিনি ছিলেন একজন নির্ভীক মানুষ।
৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ প্রসঙ্গে বিভাগীয় কমিশনার বলেন, বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চ ১৮ মিনিটের ভাষণের মাধ্যমে বাঙ্গালি জাতিকে জাগিয়ে তুলেছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় এনে দিয়েছেন একটি স্বাধীন রাষ্ট্র। সেই জাতি কতটা নিষ্ঠুর তাঁর বুকেই ১৮টি গুলি করে তাঁকে নির্মমভাবে হত্যা করতে পারে। আগেও ষড়যন্ত্র হয়েছে, এখনও ষড়যন্ত্র চলছে মন্তব্য করে তিনি সকলকে ষড়যন্ত্রের উর্ধ্বে থেকে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার জন্য এগিয়ে আসার উদাত্ত আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ছিলেন- রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট আব্দুল হাদী। জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদের সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন-রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মোঃ আনিসুর রহমান, আরএমপি’র কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার, পুলিশ সুপার মো: সাইদুর রহমান।
অনুষ্ঠানে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, মুক্তিযোদ্ধা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ অংশ নেন। আলোচনা সভা শেষে রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন বিভাগীয় কমিশনার।
এর আগে নগরীর বঙ্গবন্ধু চত্বরে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তর, সংস্থা, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানানো হয়। পরে সেখান থেকে একটি শোক র্যালি বের হয়। র্যালিটি জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে গিয়ে শেষ হয়।
বাংলা গেজেট/এফএস
মন্তব্য করুন: