প্রকাশিত:
৩১ অক্টোবার ২০২৩, ২০:১০
সারাদেশের মতো রাজশাহীতেও পালন হচ্ছে বিএনপি-জামায়াতের ডাকা অবরোধ কর্মসূচী। দেশব্যাপী বিএনপি জামায়াতের ডাকা অবরোধের কারণে বাস টার্মিনালে যাত্রী সংকট দেখা দিয়েছে। দূরপাল্লার বাস চলাচল অব্যাহত রাখলেও যাত্রী না থাকার কারণে বাস বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছেন বাস মালিকরা।
মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) বিএনপির ডাকা তিন দিনের মধ্যে চলছে প্রথম দিনে রাজশাহী থেকে দূরপাল্লা বা অভ্যন্তরীণ রুটে কোনো গণপরিবহন চলাচল না করলেও ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। এছাড়া স্বাভাবিক রয়েছে নগরের অভ্যন্তরীণ রুটে, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত পরিবহনগুলোর চলাচল।
পরিবহন নেতারা বলছেন, রাজশাহীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। যাত্রী সংখ্যা খুব সীমিত থাকায় বাস কম চলছে। সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে ও ৯ টায় রাজশাহী মহানগরীর শহীদ কামারুজ্জামান চত্ত্বর (রেলগেট) থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ গামী যাত্রীবাহী বাস ছেড়ে গেছে। বাস মালিক বা শ্রমিক সংগঠন থেকে বাস চলাচল স্বাভাবিক থাকার নির্দেশান দিয়েছেন। আমরা যাত্রীর অপেক্ষায় আছি যাত্রী হলেই বাস ছেড়ে যাচ্ছি।
কাউন্টারগুলোতে কথা বলে জানা যায়, সকাল থেকে এ পর্যন্ত নির্ধারিত সময়ে বাস ছাড়ার কথা থাকলেও দূরপাল্লার কোনো টিকিট বিক্রি না হওয়ায় কোন বাস ছাড়তে পারছেনা তারা। তারা বলছেন, অবরোধের কারণে আগে অনেক বাস চলাচল করলেও এখন কোনো যাত্রী নেই, তাই টিকিট বিক্রি হচ্ছে না।
নগরীর শিরোইল বাস টার্মিনাল, ভদ্রা, রেলগেট কামারুজ্জামান চত্ত্বর, বর্ণালী, বহরুমপুর, তালাইমারীসহ বিভিন্ন জায়গা ঘুরে দেখা গেছে, আজ সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজশাহী থেকে দূর পাল্লার কোন যানবাহন চলাচল করতে দেখা যায়নি। তবে রিকশা, অটোরিকশা, সিএনজি, প্রাইভেট কার, মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক ভাবে চলতে দেখা গেছে।
অটোরিকশা চালকরা বলছেন, অন্যান্য দিনেরই মতই আমরা গাড়ী চালাচ্ছি। এখন পর্যন্ত কোথাও কোন সমস্যা হয়নি। তবে মনে এক রকম আতঙ্গ বিরাজ করছে। আমরা চাই হরতাল না দিয়ে অন্যকোন কর্মসূচির মাধ্যমে আন্দোলন বিএনপি করুক।
অটোরিকশায় আসা এক স্কুল শিক্ষার্থীর মা বলেন, আমি আমার মেয়েকে নিয়ে অগ্রণী স্কুলে গিয়েছিলাম। তাকে স্কুলে রেখে বাসায় যাচ্ছি। তবে রাস্তায় কোন অসুবিধা হয়নি। অন্যদিনের মতোই স্বাভাবিকভাবে বাচ্চাকে স্কুলে রেখে আসলাম।
রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মাতিউল হক টিটু বলেন, স্থানীয় পর্যায়ে কিছু বাস চলছে। তবে যাত্রী হচ্ছে না। তাই অনেক গাড়িই ছেড়ে যাচ্ছে না। যাত্রীরা অনেকটা ভয়ের মধ্যে আছে। এছাড়াও সকাল থেকে কোনো দূরপাল্লার বাস ছেড়ে যায়নি। মূলত নাশকতার শঙ্কায় বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।
এদিকে সকালে সড়কে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। নগরীর বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ ও র্যাবকে বিভিন্ন রাস্তায় টহল দিতে দেখা গেছে। একই সঙ্গে নিরাপত্তায় আছে বিজিবিও। নগরজুড়ে চলছে র্যাব পুলিশের টহল।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার জামিলুর ইসলাম বলেন, যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বাড়তি সতর্কতা গ্রহণ করা হয়েছে। রাজশাহীর প্রতিটি পয়েন্ট পুলিশ ও সাদা পোশাকে পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত তেমন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।
সরকারের পদত্যাগ দাবিতে বিএনপি-জামায়াত ও বিরোধী দলগুলোর দেশব্যাপী সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি আজ থেকে শুরু হয়েছে। তিন দিনের এ অবরোধ কর্মসূচি চলবে ২ নভেম্বর পর্যন্ত।
বাংলা গেজেট/বিএম
মন্তব্য করুন: