প্রকাশিত:
৬ অক্টোবার ২০২৩, ২২:১৫
নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলায় পরকীয়া প্রেম নিয়ে বিরোধের জেরে অটোরিকশাচালক দিদারুল ইসলাম ওরফে মাহফুজকে (১৮) হত্যা করা হয়। এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত পাঁচ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সেই সঙ্গে উদ্ধার করা হয়েছে ছিনতাই হওয়া ইজিবাইক।
শুক্রবার (৬ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার মো. তারিকুল ইসলাম এসব তথ্য জানান।
এর আগে গতকাল ওই যুবকের মরদেহ উদ্ধারের পর থেকে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটনে নেমে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- নাটোর সদর উপজেলার ইব্রাহীমপুর গ্রামের মৃত ফিরোজ মোল্লার ছেলে হাবিল হোসেন (৩০), আমিন চান শেখের ছেলে রানা শেখ (১৯), বাগাতিপাড়া উপজেলার চকহরিরামপুর গ্রামের মোতাহার আলীর ছেলে মো. রানা (২২), কুঠি বাঁশবাড়িয়া গ্রামের সুমন আলীর ছেলে সামিউর ইসলাম শুভ (১৯) এবং নূরপুর মালি এলাকার জালাল প্রামানিকের ছেলে ইমন প্রামাণিক (২০)।
পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম জানান, গত বুধবার (৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় মাহফুজ তার অটোরিকশা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে আসেন। অনেক রাতেও তিনি বাড়ি না ফিরলে তার বাবা মাহফুজের মোবাইলে কল দিয়ে ফোন বন্ধ পান।
এরপর বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার দেবনগর এলাকার খ্রিস্টানপাড়ার একটি আম বাগানে মাহফুজের রক্তাক্ত দেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। পরে তারা মাহফুজকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা দেলোয়ার হোসেন অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে বাগাতিপাড়া থানায় মামলা করেন। পরে হত্যার মূল রহস্য উদ্ঘাটন ও জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে বেশ কয়েকটি টিম কাজ শুরু করে।
পুলিশ সুপার জানান, এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে প্রথমে নাটোর সদর থানার ইব্রাহীমপুর গ্রাম থেকে গতকাল রাত ৮টা ২০ মিনিটে হাবিল হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে লালপুর উপজেলার গোধড়া বাজার এলাকা থেকে মো. রানা ও রানা শেখকে লুণ্ঠিত অটোরিকশাসহ হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়।
পরবর্তীতে গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত রক্তমাখা হাতুড়ি রানা শেখের বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়। পরে সেই রাতেই ঘটনার সঙ্গে জড়িত আরও দুই আসামি সামিউর ইসলাম শুভ এবং মো. ইমন প্রামাণিককেও গ্রেপ্তার করা হয়। তারা সকলেই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন।
পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় আসামি মো. রানার স্ত্রীর সঙ্গে মাহফুজের পরকীয়া প্রেমকে কেন্দ্র করে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আসামি মো. রানার পরিকল্পনায় অন্যান্য আসামিদের সহায়তায় হাতুড়ি দিয়ে মাথায় এলোপাতাড়িভাবে আঘাত করে মাহফুজকে গুরুতর আহত অবস্থায় মৃত ভেবে ফেলে রেখে আসামিরা তার অটোরিকশা নিয়ে পালিয়ে যান। এ ঘটনায় আরও কেউ জড়িত রয়েছে কিনা সেটি তদন্ত চলছে বলে জানান তিনি।
বাংলা গেজেট/এফএস
মন্তব্য করুন: