প্রকাশিত:
৩০ আগষ্ট ২০২৩, ২২:৪৪
বাজারে সিন্ডিকেট আছে কিন্তু আমরা হাত দিতে পারি না— বাণিজ্যমন্ত্রীর এমন বক্তব্য নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এ কথা ‘বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন? বাণিজ্যমন্ত্রীকে ধরব তো’।
প্রধানমন্ত্রীর ‘ধরার’ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, গতকাল সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী কি বলেছেন, কি মিন (বোঝাতে) করেছেন সেটা তিনি ভালো জানেন। এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে পারব না। বাজারে সিন্ডিকেট আছে, ভাঙা হবে এ ধরনের কোনো কথা আমি কোথাও বলিনি।
বুধবার (৩০ আগস্ট) রাজধানীর একটি হোটেলে আমেরিকান চেম্বার্সের সঙ্গে বৈঠক করেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, গতকাল সংবাদ সম্মেলনের পর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দুই ঘণ্টা ছিলাম, আমেরিকান চেম্বার্সের প্রতিনিধিরাও ছিল। কিন্তু এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমার কোনো কথা হয়নি, উনিও জিজ্ঞেস করেননি।
তিনি বলেন, বাজারে সিন্ডিকেট আছে, সিন্ডিকেট ভাঙা হবে এ ধরনের কথা আমি কখনো বলিনি। আমি বলেছি, মাঝে মধ্যে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যায়, সেক্ষেত্রে আমাদের করণীয় কী? ভোক্তা অধিকারসহ নানা সংস্থা কাজ করছে। কিন্তু জনবল কম। এটা নিয়ে নানা সময়ে কথা বলেছি।
আপনি বলেছিলেন যে, যখন ক্রাইসিস শুরু হয় তখন ব্যবসায়ীরা সুবিধা নিলেও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে আরও বেশি ক্রাইসিস তৈরি হতে পারে। সে কারণে ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। জাতীয় সংসদেও আপনি এটি বলেছেন— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি যে কথাটা বলেছিলাম, জেল-জুলুম এ ধরনের ব্যবস্থা নিলে পরে...।
আমি সেটেল করছি আলোচনার মাধ্যমে। যেটা লজিকাল হয়। হঠাৎ করে জেল-জুলুম দিলে পরে মানুষের দুর্ভোগ বাড়বে। আমি এটাই বলেছিলাম। তবে আলোচনা করে আমরা ব্যবস্থা নিতে চাই।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ডিমের দাম বেড়ে যাওয়ার পর আমি বলেছিলাম, প্রয়োজনে সরবরাহ ঠিক রাখতে ডিম আমদানি করা হবে। সে ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছি সব সময়।
তাহলে কি বলছেন সিন্ডিকেট বলতে কোনো কিছু নেই বাজারে— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সিন্ডিকেটের একটি বিশাল অর্থ বিশাল ব্যাপার। আজ দেখেন সিন্ডিকেটের অল্প কিছু, ডিম নিয়ে দেখেন গ্রামে গ্রামে লাখ লাখ ডিম উৎপাদন হয়। সেখানে সিন্ডিকেটের কথা বলব কেমন করে। একজন দুজন তো ডিমের ব্যবসা করছে না।
কোনোভাবেই তো বাজার নিয়ন্ত্রণে আসছে না, আজ একটা বাড়লে কাল আরেকটার দাম বাড়ছে। সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠছে, ভারতের বাজার আর আমাদের বাজারের তারতম্য অনেক— এমন প্রশ্নের জবাবে টিপু মুনশি বলেন, ভারতের সঙ্গে সব বিষয়ে তুলনা করা সম্ভব নয়। আজ ভারতে চিনির দাম কম, কারণ তাদের উৎপাদন যেটা হয় চাহিদা মেটানোর পরও রপ্তানি করে।
আর আমাদের ৯৯.৯ শতাংশ বাইরে থেকে আনতে হয়। সব জিনিস একরকম হবে তা কিন্তু নয়। কখনো কখনো কোনো কোনো জিনিস একরকম হয়। পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেল, তখন ভারতে রেশনিং চালু করেছিল। যখন কাঁচা মরিচের দাম বাড়ল তখন ৩৫০ রূপিতে বিক্রি হয়েছে।
এই মুহূর্তে দেখেন পেঁয়াজের ওপর ট্যাক্স বাড়িয়ে দিয়েছে। তারা তাদের অর্থনীতির ওপর নির্ভর করে কাজ করে। আমরা বিকল্প সোর্স থেকে আনার চেষ্টা করি। সব কিছু একরকম নয়। তবে হেবিটটা একরকম পাশাপাশি দেশ বলে।
ডিমের বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমি সেদিনও বলেছি, ডিমের কি দাম হওয়া উচিত সেটা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ঠিক করবে না। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় দাম নিদিষ্ট করে দিয়েছে, এরকম দাম হওয়া উচিত। আমরা চেষ্টা করছি তারা যে দামটা নির্ধারণ করে দিয়েছেন সেটা যেন বাজারে থাকে।
সার্বিক মূল্যস্ফীতি নিয়ে তিনি বলেন, গ্লোবাল অবস্থাটা দেখেন, আপনারা যখন দেখেন ইংল্যান্ডের দোকানেও যখন তিনটার বেশি টমেটো কেনা যাবে না, সে বিষয়ে রেস্ট্রিকশন দিয়ে দেয়।
জার্মানিও দোকানগুলোতে তেলের বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়। আমাদের এখানেও নিশ্চয়ই প্রভাব পড়েছে। মুহূর্তের মধ্যে সমাধান হবে তেমন তো নয়, তবে আমাদের প্রতিনিয়ত চেষ্টা চলছে। গ্লোবাল এই দুরবস্থার মধ্যেও যেন আমরা ঠিক থাকতে পারি। সূত্র: দেশ রূপান্তর
বাংলা গেজেট/বিএম
মন্তব্য করুন: