[email protected] শনিবার, ২৮শে ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪ই পৌষ ১৪৩১

সাত পৃষ্ঠার চিঠি লিখে তরুণীর আত্মহত্যা

মর্নিং টাইমস ডেস্ক

প্রকাশিত:
১৬ জুলাই ২০২৪, ১৯:৪৭

ছবি : সংগৃহীত

শেরপুরে সাত পৃষ্ঠার চিঠি লিখে ফাঁসিতে ঝুলে গৃহবধূ জান্নাতুল ফেরদৌসী সুমাইয়া (১৯) আত্মহত্যার ঘটনায় স্বামী শিপনসহ চারজনের বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা হয়েছে। মারা যাওয়া গৃহবধূর বাবা আবু বকর সিদ্দিক এ মামলাটি করেছেন।

ফেসবুকে প্রেম ভালোবাসা ও অভিভাবকের অমতে বিয়ে করে যৌতুকের চাপে সংসারে বনিবনা না হওয়ায় গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শনিবার রাত ১০টার দিকে নালিতাবাড়ীর বিশগিরি পাড়া গ্রামে ওই গৃহবধূ আত্মহত্যা করেন।

রোববার সকালে গৃহবধূ সুমাইয়ার লাশ ও চিঠি উদ্ধার করে পুলিশ। সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির পর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট শেরপুর জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে লাশের ময়না তদন্ত শেষে ওইদিন রাতেই লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

নালিতাবাড়ী থানার ওসি মনিরুল আলম ভুঁইয়া জানান, গত ৮ মাস আগে সদর উপজেলার সাপমারী এলাকার শিপন নামে এক যুবকের সঙ্গে ফেসবুকে প্রেম ভালোবাসার মাধ্যমে বিয়ে হয় নালিতাবাড়ীর বিশগিরি পাড়া গ্রামের আবু বকর সিদ্দিকের মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌসী সুমাইয়ার। এদিকে অভিভাবকের অসম্মতিতে বিয়ে হওয়ায় মেনে নিচ্ছিল না স্বামী শিপনের পরিবার৷ এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রী ও পরিবারের লোকজনদের মধ্যে বনিবনা না হওয়ায় প্রায়ই পারিবারিক কলহ লেগে থাকত।

এমনকি শিপন যৌতুকের ৮ লাখ টাকার জন্য সুমাইয়াকে নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করে আসছিলেন। এসব বিষয় নিয়ে রাগারাগি করে গত রোজার ঈদের সময় সুমাইয়া তার বাবার বাড়িতে চলে গিয়ে সেখানেই ছিলেন। শনিবার রাতে সুমাইয়া মনের ক্ষোভে ৭ পৃষ্ঠার একটি চিঠি লিখে শয়নকক্ষে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন।

সুমাইয়া চিঠিতে লিখেন, বিয়ের গোসলটাও পেলাম না। শেষ গোসলটাও পাব না। জানাজাও পাব না। আমার ঠিকানা হবে জাহান্নাম। অনেক ভালোবাসি তোমাকে শিপন। কিন্তু তুমি শেষ পর্যন্ত তোমার সঙ্গে থাকতে দিলা না।

তিনি আরও লিখেন, আমি চাইলে দ্বিতীয় বিয়ে করে জীবনটা ভালোভাবে চালাতে পারতাম। কিন্তু আমি চাই না দ্বিতীয় কেউ আমার শরীরটা উপভোগ করুক।

বাবা-মাকে উদ্দেশ্য করে সুমাইয়া লিখেন, তোমরা মনে কষ্ট নিও না। শিপনকে সুখে রাখার জন্য আমি চলে যাচ্ছি। আমার মুখ তাকে দেখতে দিও না। আমার শরীরটা কাটতে দিও না। আমি কষ্ট পাব।

নালিতাবাড়ী থানার ওসি জানান, সুমাইয়ার লাশ ময়না তদন্ত শেষে রোববার রাতেই তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। গৃহবধূর বাবার করা মামলার আসামিদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর