[email protected] সোমবার, ২০শে মে ২০২৪, ৬ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

সন্তানদের জন্য আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় চান আমলারা

মর্নিং টাইমস ডেস্ক

প্রকাশিত:
৪ মে ২০২৪, ১৬:২৯

ছবি : সংগৃহীত

এবার সরকারের কাছে নতুন আবদার রেখেছেন আমলারা। তারা তাদের সন্তানদের লেখাপড়ার জন্য আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় চান। এছাড়া সারা দেশে অবস্থিত সরকারি এবং এমপিওভুক্ত কলেজে ব্যাপকভাবে অনার্স ও মাস্টার্স কোর্স চালুকরণ বন্ধ করে বিদ্যমান অনার্স ও মাস্টার্স লেভেলে প্রতি বছর নতুন নতুন বিষয় অন্তর্ভুক্তকরণ নিয়ন্ত্রণ করার প্রস্তাবও দিয়েছেন তারা। সবশেষ অনুষ্ঠিত জেলা প্রশাসক সম্মেলনের প্রথম দিবসে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারদের মুক্ত আলোচনায় ২৪ দফা একটি প্রস্তাব দেন সরকারি আমলারা।

এতে বলা হয়, সিভিল সার্ভিস অফিসারদের জন্য মাস্টার্স এবং উচ্চতর ডিগ্রি ও প্রশিক্ষণ এবং তাদের সন্তানদের লেখাপড়ার জন্য আলাদা সিভিল সার্ভিস বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা যেতে পারে। এ সময় জনপ্রশাসন মন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব এবং সমন্বয় ও সংস্কার বিভাগের সচিব উপস্থিত ছিলেন। মুক্ত আলোচনায় জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনাররা প্রধানমন্ত্রীর সামনে ২৪টি প্রস্তাব উপস্থাপন করেন। প্রস্তাবগুলোর মধ্যে রয়েছে, বৈদেশিক শান্তিরক্ষা মিশনগুলোতে প্রশাসন ক্যাডার কর্মকর্তাদের জন্য পদ সৃজন এবং পদায়নের ব্যবস্থা করা। উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের দীর্ঘদিনের ব্যবহৃত গাড়ি পরিবর্তন করে নতুন গাড়ি সরবরাহ করা। মোবাইল কোর্ট সম্পর্কিত আপিল মামলাটি সরকার পক্ষে দ্রুত নিষ্পত্তির ব্যবস্থা গ্রহণ এবং প্রয়োজনে মোবাইল কোর্টকে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন।

এছাড়াও এ প্রস্তাবনায় রয়েছে, ভারতের সাথে তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে বাস যোগাযোগ চালু করা, পাথরঘাটা উপজেলায় জেলেদের স্বার্থ রক্ষায় একটি কোল্ড স্টোরেজ বা মৎস্য সংরক্ষণাগার স্থাপন করা এবং গাইবান্ধা জেলায় নারী ও শিশুদের জন্য একটি সেইফ হোম স্থাপন করা। এছাড়াও এতে বলা হয় পদ্মা নদীর প্রবেশমুখে (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) এবং রাজশাহী জেলায় নদীটির কিছু অংশ ড্রেজিং করে বড় জাহাজ চলাচলের উপযোগী নদীর চ্যানেল সৃষ্টির মাধ্যমে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে রাজশাহী ও রূপপুর হয়ে দক্ষিণ অঞ্চল পর্যন্ত অবিচ্ছিন্ন নৌপথ তৈরি করা হলে রাজশাহী অঞ্চলের সাথে দেশের দক্ষিণ অঞ্চলের নৌপথ চালু হবে এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় আম প্রক্রিয়াজাতকরণের ব্যবস্থা গড়ে তোলা প্রয়োজন।

ঐতিহাসিক মহাস্থানগড়ের প্রত্নতত্ত্বগুলোর সংরক্ষণ ও সুরক্ষা এবং এর প্রসারে মহাস্থানগড়ের প্রত্নতত্ত্ব এলাকাভুক্ত ব্যক্তি মালিকানা জমি অধিগ্রহণ করে যথাযথ পদক্ষেপ নিয়ে পর্যটক ও গবেষকদের জন্য আকর্ষণীয় করে গড়ে তোলা। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মাধ্যমে আগাছানাশক তথা ঘাস মারার যেকোনো ধরনের রাসায়নিকের ব্যবহার নিষিদ্ধ করে আগাছা দমনে বিকল্প জৈবিক উপায় ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা প্রয়োজন বলেও প্রস্তাবনায় উল্লেখ করেন আমলারা। এতে মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলায় স্যার জেসি বোসের নামে গবেষণাধর্মী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করারও প্রস্তাব দেয়া হয়। সারা দেশে অবস্থিত সরকারি এবং এমপিওভুক্ত কলেজে ব্যাপকভাবে অনার্স ও মাস্টার্স কোর্স চালুকরণ বন্ধ করে বিদ্যমান অনার্স ও মাস্টার্স লেভেলে প্রতি বছর নতুন নতুন বিষয় অন্তর্ভুক্তকরণ নিয়ন্ত্রণ করার কথাও বলা হয়।

বান্দরবানে ফল প্রসেসিং কারখানা স্থাপন এবং ময়মনসিংহ শহরের যানজট নিরসনে বর্তমান রেললাইনটি স্থানান্তর করে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শহরের বাইপাস মোড় হয়ে ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের পেছনে সরিয়ে নিলে এবং পুরাতন রেললাইনের স্থলে ৩০০ ফুট প্রশস্ত রাস্তা নির্মাণ করা হলে ময়মনসিংহ শহরের তীব্র যানজট ও জনভোগান্তি কমে যাবে বলেও জানানো হয়।

এতে আরও বলা হয়, উপজেলা পর্যায়ে ডাক্তার-নার্সদের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক মানসম্মত ও আধুনিক আবাসন ব্যবস্থা নির্মাণ করা যেতে পারে। জেলার হাসপাতালগুলোতে রোগীদের কাছ থেকে আদায় করা অর্থের একটি অংশ যদি স্থানীয়ভাবে খরচ করার সুযোগ দেয়া হয়, তাহলে হাসপাতালগুলোর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার মান উন্নত হবে এবং বিপুল পরিমাণ যন্ত্রপাতি নিয়মিত মেইনটেইন্যান্স করা সম্ভব হবে।

প্রস্তাবনায় আরও বলা হয়, পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পূর্ণরূপে চালুকরণ, গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী বা রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলায় একটি নির্দিষ্ট করা কারিগরি ও বৃত্তিমূলক উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান, তথা একটি বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে। খুলনা অঞ্চলে সুপেয় পানির পুকুর সংরক্ষণ করা যেতে পারে। রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকার জন্য পৃথক/বিশেষ থানা গঠন করা যেতে পারে, অথবা বিদ্যমান থানা ২টির আনুপাতিক জনবল ও সক্ষমতা বাড়ানো যেতে পারে এবং রোহিঙ্গাদের মাধ্যমে সংঘটিত অপরাধ বিচারার্থে স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল গঠন করা যেতে পারে। রোহিঙ্গাদের বায়োমেট্রিক সম্বলিত ডেটাবেজে সরকারি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রবেশাধিকার থাকা প্রয়োজন বলেও মনে করেন আমলারা।


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর