প্রকাশিত:
২২ নভেম্বার ২০২৩, ২০:৫৪
আমানতের তুলনায় ঋণ বিতরণের পরিমাণ বেশি হওয়ায় তারল্য সংকটে পড়েছে বেশকিছু ব্যাংক। আর গতকাল মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) এসব ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ধার করেছে ১৫ হাজার ৮৯ কোটি টাকা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, মঙ্গলবার ৩১টি ব্যাংক ও দুইটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ধার করেছে। এর মধ্যে সাতদিন মেয়াদি রেপোর বিপরীতে ১৮টি ব্যাংক ও দুইটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান নিয়েছে ৬ হাজার ৩৫৯ কোটি টাকা। ‘স্ট্যান্ডিং লেন্ডিং ফ্যাসিলিটি’ হিসেবে একটি ব্যাংক ১৯০ কোটি টাকা নিয়েছে।
এছাড়াও একদিন মেয়াদি তারল্য সুবিধার আওতায় ১২টি বেসরকারি ব্যাংক ৮ হাজার ৩২৬ কোটি টাকা ধার করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে।
সাতদিন মেয়াদি রেপোর বার্ষিক সুদহার ৭ দশমিক ৩৫ শতাংশ। স্ট্যান্ডিং লেন্ডিং ফ্যাসিলিটির সুদহার ৯ দশমিক ২৫ শতাংশ। আর তারল্য সুবিধার সুদের হার ছিলো ৭ দশমিক ২৫ শতাংশ।
ব্যাংক কর্মকর্তারা বলেছেন, দীর্ঘদিন ধরে দেশের মূল্যস্ফীতি প্রায় ১০ শতাংশ। বিভিন্ন উদ্যোগ নিলেও এটি কমানো সম্ভব হয়নি। গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে সরকার ১ লাখ ২২ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিলো। এর সিংহভাগ বাংলাদেশ ব্যাংক দিয়েছিল। এর উপর সুদের হার এক জায়গায় ধরে রাখা হয়েছিল। এছাড়া রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে বাজার থেকে টাকা উঠে আসছে। এর ফলে ব্যাংক খাত তারল্য সংকটে ভুগছে।
করোনার পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও বিশ্ব অর্থনীতির নানা সংকট দেখিয়ে ঋণ পরিশোধে বিশেষ ছাড় দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এর সুযোগ নিয়ে ব্যাংকগুলোর অনেক বড় বড় গ্রাহক বছরের পর বছর ঋণ বাড়াচ্ছে কিন্তু টাকা ফেরত দিচ্ছে না। আবার অনেকে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ও জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ঋণ নিয়ে লুটপাট করে বিদেশে অর্থ পাচার করে দিচ্ছে। এতে করে ব্যাংক থেকে যেভাবে টাকা বেরিয়ে যাচ্ছে সেই হারে ফেরত আসছে না বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।
অর্থনীতিবিদরা অনেক আগে থেকেই সরকারকে ঋণ না দিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে অনুৎসাহিত করে আসছে। তাদের মতে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে সরাসরি ঋণ দেওয়ার অর্থ নতুন টাকা ছাপানোর মতোই। এ প্রবণতা মূল্যস্ফীতিকে উস্কে দেয়।
আইএমএফের ঋণের শর্তের কারণে গত জুলাই মাস থেকে সুদহারের সীমা তুলে নতুন ব্যবস্থা করা হয়েছে। আর ৪ অক্টোবর রেপোর সুদহার ৭৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ৭ দশমিক ২৫ শতাংশ করা হয়েছে।
বাংলা গেজেট/এমএএইচ
মন্তব্য করুন: