প্রকাশিত:
১৬ নভেম্বার ২০২৩, ১৯:৫৯
বঙ্গোপসাগরে থাকা গভীর নিম্নচাপটি আজ বৃহস্পতিবার রাতেই ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। ঘূর্ণিঝড় হলে এর নাম হবে ‘মিধিলি’। এটি আগামীকাল শুক্রবার রাতের দিকে বাংলাদেশের স্থলভাগ অতিক্রম করতে পারে। তবে ঘূর্ণিঝড় হলেও এখন পর্যন্ত এটি সাধারণ বা দুর্বল ঘূর্ণিঝড় হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ আজ বিকেলে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘গভীর নিম্নচাপটি আরো কিছুটা ঘণীভূত হয়েছে। সেক্ষেত্রে মনে হচ্ছে এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। তবে ঘূর্ণিঝড় হলেও তা সাধারণ বা দুর্বল ঘূর্ণিঝড় হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৬০-৮০ কিলোমিটার হতে পারে।
বজলুর রশিদ জানান, আগামীকাল শুক্রবার দুপুরের পর এটি বাংলাদেশের উপকূলের কাছাকাছি চলে আসতে পারে। সন্ধ্যা থেকে রাতের মধ্যে এটি বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে। তবে এটি দুর্বল হওয়ায় এর সময়ের কিছুটা পার্থক্য হতে পারে। সাধারণত দুর্বল ঘূর্ণিঝড়গুলো কিছুটা অনিশ্চিত আচরণ করে। উপকূলের কাছাকাছি এসে আবার এটি দুর্বল হয়ে গভীর নিম্নচাপেও পরিণত হতে পারে।
এর আগে গত ২৪ অক্টোবর (মঙ্গলবার) রাতে ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূলে আঘাত হানে। তখন ঘূর্ণিঝড়টি খুব অল্প সময়ের মধ্যে (২৪ ঘণ্টার মধ্যে) গভীর নিম্নচাপ থেকে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়ে বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানে। ‘হামুন’ দুর্বল ঘূর্ণিঝড় হওয়ায় তা দ্রুত অগ্রসর হয়ে উপকূলে আঘাত করে বলে তখন জানিয়েছিলেন আবহাওয়াবিদরা। এতে ৬ জনের প্রাণহানি এবং বসতবাড়ি ও ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে যায় চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার অনেক অঞ্চল।
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গভীর নিম্নচাপটি পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর ও আশপাশের এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আরো উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হতে পারে। আজ দুপুর ১২টায় নিম্নচাপটি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৭২৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার থেকে ৬৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৯০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল।
গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার যা দমকা বা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছিল। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের কাছাকাছি এলাকায় সাগর উত্তাল ছিল।
গভীর নিম্নচাপটির অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও আশপাশের বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং দ্বীপ ও চরগুলোর ওপর দিয়ে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ ভারী (৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার) থেকে অতিভারী (৮৯ মিলিমিটারের বেশি) বর্ষণ হতে পারে।
ঝোড়ো হাওয়ার আশঙ্কায় চট্টগ্রাম, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দর এবং কক্সবাজারকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অফিস। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে থাকা মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে অতি দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে।
বাংলা গেজেট/ এসএডি-৪
মন্তব্য করুন: