[email protected] শনিবার, ২রা নভেম্বর ২০২৪, ১৭ই কার্তিক ১৪৩১

জাইকার শীর্ষ ৩ ঋণগ্রহীতার তালিকায় বাংলাদেশ

জাতীয় ডেস্ক

প্রকাশিত:
৮ নভেম্বার ২০২৩, ২০:১২

ফাইল ছবি

জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) শীর্ষ তিন ঋণগ্রহীতার তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ। জাইকা সদরদপ্তরের সাউথ এশিয়া ডিভিশনের ডিরেক্টর জেনারেল ইতো তেরুয়ুকি এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, বাংলাদেশকে জাইকা সর্বমোট ৩ ট্রিলিয়ন জাপানি ইয়েনেরও বেশি সহযোগিতা দিয়েছে, যার অর্থমূল্য প্রায় ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি।

বাংলাদেশের সঙ্গে জাইকার অংশীদারত্বের ৫০ বছর পূর্তির মাইলফলককে স্মরণীয় করে রাখতে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। বুধবার (৮ নভেম্বর) অর্থমন্ত্রীর দপ্তর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি। এছাড়া, আয়োজনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাইকা সদরদপ্তরের সাউথ এশিয়া ডিভিশনের ডিরেক্টর জেনারেল ইতো তেরুয়ুকি এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সিনিয়র সচিব শরিফা খান।

অর্থমন্ত্রীর দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, এখন পর্যন্ত অফিসিয়াল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসিসটেন্স বা আনুষ্ঠানিক উন্নয়ন সহযোগিতা (ওডিএ) লোন হিসেবে তিন হাজার ২৮৫ বিলিয়ন জাপানি ইয়েন (প্রায় ২২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার), ২০২২ সাল পর্যন্ত অনুদান সহায়তা (গ্র্যান্ট এইড) হিসেবে ১৪৪ বিলিয়ন জাপানি ইয়েন (প্রায় ৯৬৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার), ২০২২ সাল পর্যন্ত টেকনিক্যাল কো-অপারেশনের জন্য ১০৪ বিলিয়ন জাপানি ইয়েন (প্রায় ৬৯৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) এবং লোন ও ইক্যুইটি হিসেবে এখন পর্যন্ত প্রাইভেট সেক্টর ইনভেস্টমেন্ট ফাইন্যান্সের জন্য ২৫ বিলিয়ন জাপানি ইয়েন (প্রায় ১৬৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) বাংলাদেশকে দেওয়া হয়েছে।

এছাড়াও জাইকা ১৪ হাজারেরও বেশি সরকারি কর্মীর প্রশিক্ষণ ও শিক্ষার ব্যবস্থা করেছে এবং এক হাজার ২৮৬ জন জাপানিজ ওভারসিজ কো-অপারেশন ভলান্টিয়ার্সকে দেশে নিযুক্ত করেছে।

অনুষ্ঠানে ইতো তেরুয়ুকি আরও বলেন, জাইকা সর্বমোট ৩ ট্রিলিয়ন জাপানি ইয়েনেরও বেশি সহযোগিতা দিয়েছে, যার অর্থমূল্য প্রায় ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি। বাংলাদেশ এখন বিশ্বে আমাদের শীর্ষ তিন ঋণগ্রহীতা দেশের একটি।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, আমাদের দেশসহ বিশ্বের জন্য আদর্শ উদাহরণ জাপান। জাইকা ও জাপানের সহযোগিতায় আমাদের কমিউনিটির বিকাশ ও উন্নয়ন সাধিত হবে। জাপান আমাদের পরীক্ষিত বন্ধু। এই অংশীদারত্ব আমাদের দেশের লক্ষ্যপূরণে সহায়তা করবে বলে আমরা আশাবাদী।

বাংলাদেশ ও জাপানের অসামান্য বন্ধুত্বের ওপর গুরুত্বারোপ করে জাইকার চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ ইচিগুচি তোমোহিদে বলেন, ৫০ বছরের এই যাত্রার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধু হিসেবে টেকনিক্যাল কো-অপারেশন, রেয়াতি ঋণ (কনসেশনাল লোন), অনুদান সহায়তা (গ্র্যান্ট এইড), স্বেচ্ছাসেবী ও বিভিন্ন পদ্ধতিতে বহু খাতে সহযোগিতা করেছে জাইকা।

তিনি বলেন, সবসময় সরকারি কর্মকর্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি, অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন, জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন, বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো এবং বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যকার শক্তিশালী বন্ধুত্ব গড়ে তোলাই ছিল জাইকার লক্ষ্য।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সিনিয়র সচিব শরিফা খান বলেন, গত ৫০ বছরের মধ্যে জাপানের সহযোগিতা বাংলাদেশের সর্বত্র পৌঁছে গেছে। দেশের ১৫টি খাতের সবগুলোতে জাপানের অংশগ্রহণ রয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশের বৃহত্তম দ্বিপক্ষীয় উন্নয়ন সহযোগী জাপান। দেশের উন্নয়নে নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করার ক্ষেত্রে জাইকা অত্যন্ত ইতিবাচক ও সহযোগিতা-পরায়ণ। তাই, গত ৫০ বছরে সব ধরনের সহযোগিতার জন্য জাপান সরকারের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।

জাইকা বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদি ইতিবাচক প্রভাব তৈরি করেছে- এমন উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে- মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরসহ মহেশখালী-মাতারবাড়ি ইন্টেগ্রেটেড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ, তিনটি ঢাকা মেট্রো লাইনের জন্য ঢাকা মাস র্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্প, দ্বিতীয় কাঁচপুর, মেঘনা ও গোমতী সেতু নির্মাণ প্রকল্প, আড়াইহাজারে বাংলাদেশ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য প্রকল্প এবং ব্রিজেস রিহ্যাবিলিটেশন অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন প্রজেক্টস।

জাইকার ৫০ বছরের এই সহযোগিতার মধ্যে আরও রয়েছে- শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি ও গ্রামীণ উন্নয়ন, সুশাসনের বিকাশ, বেসরকারি খাতের উন্নয়ন, দুর্যোগ ঝুঁকি প্রশমন, পানি সরবরাহ ও পয়োনিষ্কাশন, কঠিন (সলিড) বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি। সূত্র: জাগো নিউজ।

বাংলা গেজেট/এসএডি-৫


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর