[email protected] শুক্রবার, ১লা নভেম্বর ২০২৪, ১৭ই কার্তিক ১৪৩১

খুনিদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে কানাডা 

জাতীয় ডেস্ক

প্রকাশিত:
২৯ সেপ্টেম্বার ২০২৩, ২০:৪১

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন। ফাইল ছবি

পালটে যাচ্ছে কূটনৈতিক দৃশ্যপট। খালিস্তানি নেতা হরদীপ সিং নিজ্জার হত্যার কারণে ভারত ও কানাডার মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির পর, বাংলাদেশ এখন কানাডার প্রত্যর্পণনীতির বিরুদ্ধে নিজস্ব অভিযোগ তুলেছে। বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা শেখ মুজিবুর রহমানের খুনি নূর চৌধুরীকে হস্তান্তর করতে কানাডার অস্বীকৃতি এখন এ বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে। 

ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন একটি মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, কানাডা সব খুনিদের আবাসস্থল হতে পারে না। একদিকে খুনিরা কানাডায় গিয়ে নিরাপদে রয়েছে, অন্যদিকে নিহতের পরিবারের আত্মীয়রা কষ্টে দিনযাপন করছেন। খবর যুগান্তর।

মোমেন মৃত্যুদণ্ডের বিষয়টি আরও বিশদভাবে বর্ণনা করে বলেন, আমাদের বিচার বিভাগ খুবই স্বাধীন এবং সরকার এতে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। তবে নূর চৌধুরী মৃত্যুদণ্ডের আসামি। নূর চৌধুরী এবং রশিদ চৌধুরী উভয়েই যদি বাংলাদেশে ফিরে আসেন এবং দেশের প্রেসিডেন্টের কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করেন তাহলে প্রেসিডেন্ট তাদের প্রাণভিক্ষার আবেদন মঞ্জুর করে তাদের সাজা মৃত্যুদণ্ড থেকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে পরিবর্তন করতে পারেন। 

ইন্ডিয়া টুডের সঙ্গে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাক্ষাৎকারে প্রশ্ন করা হয়, বাংলাদেশের জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর পালিয়ে আসা দুই ব্যক্তি হলেন নূর চৌধুরী ও রশিদ চৌধুরী। একজন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে গেছে অন্যজন কানাডায়। নূর চৌধুরীর বয়স এখন ৭০।

২০১৯ সালের দিকে কিছু কথোপকথনের পরিপ্রেক্ষিতে আশা ছিল যে, কিছু সমাধান হয়তো বের হতে পারে। আসলে তা ঘটেনি। আপনি কি মনে করেন যে, মৃত্যুদণ্ডই একমাত্র কারণ যার কারণে নূর চৌধুরীকে কানাডা প্রত্যর্পণ করছে না, নাকি ভারত বা বাংলাদেশ যেই হোক না কেন কানাডার মধ্যে অনীহা রয়েছে এসব লোকদের ফেরত পাঠানোর ক্ষেত্রে?

উত্তরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কানাডার সমস্যা হলো তাদের একের পর এক অজুহাত রয়েছে এবং সেটাই বোধগম্য নয়। তাদের আইন আছে, কিন্তু আইন অবশ্যই একজন খুনিকে রক্ষা করবে না। আইন অবশ্যই এ খারাপ লোকদের রক্ষা করবে না; কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত কানাডা করছে। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে, ১৯৭৫ সালে যখন আমাদের জাতির পিতাকে হত্যা করা হয়েছিল তখন আমাদের একের পর এক সামরিক সরকার ছিল এবং সেই সামরিক সরকারগুলো এই খুনিদের শুধু পুরস্কৃত করেনি, তারা তাদের গুরুত্বপূর্ণ মিশনে এবং ভালো চাকরিতে দাখিল করেছিল।

সামরিক সরকার একটি আইন পাশ করেছে যে, আপনি খুনিদের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারবেন না, তাই পরিবারের সদস্যরা খুনিদের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে না। পরিবারের সদস্যদের, বিশেষ করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে সেই শাসন পরিবর্তনের জন্য ক্ষমতায় আসতে প্রায় ২১ বছর ধরে লড়াই করতে হয়েছিল।

আমরা সেই লোকদের বিরুদ্ধে আদালতে যথাযথ প্রক্রিয়া শুরু করেছি যারা আমাদের জাতির পিতার খুনি এবং বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত দ্বারা দোষী সাব্যস্ত হয়েছে। আমরা কানাডিয়ান সরকারের কাছে সমস্ত বিবরণ জমা দিয়েছি যে, প্রক্রিয়াটি ন্যায্য, ন্যায়পরায়ণ ছিল এবং এটি সমস্ত পদ্ধতি অনুসরণ করে করা হয়েছে। দুর্ভাগ্যবশত এই খুনিরা কানাডায় আশ্রয় নিয়েছিল। নূর চৌধুরী এবং রশিদ চৌধুরী এই দুই খুনি কানাডায় ভালো জীবনযাপন করছে, যদিও  ভুক্তভোগীদের পরিবার এখনো কষ্ট পাচ্ছে।

 

বাংলা গেজেট/এফএস


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর