প্রকাশিত:
২৫ সেপ্টেম্বার ২০২৩, ১৮:৪৩
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, সরকার ২ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়ার পরে দেশে প্রবাসী আয়ের যে প্রবাহ তৈরি হয়েছিল, সেটা আমরা ধরে রাখতে পারিনি। প্রতিবছর অনেক মানুষ বিদেশে কাজের জন্য যাচ্ছে। বর্তমানে ১ কোটি মানুষ বিদেশে কর্মরত রয়েছে। কিন্তু প্রবাসী আয় সেভাবে বাড়ছে না।
আজ সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে একটি হোটেলে আয়োজিত পাবলিক ফিনানশিয়াল ম্যানেজমেন্ট বা পিএফএম সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। বিশ্বব্যাংক ও বাংলাদেশ সরকার যৌথভাবে এ সম্মেলনের আয়োজন করেছে।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের গভর্নেন্স গ্লোবাল প্রাকটিস দপ্তরের ব্যবস্থাপক হিশাম ওয়ালি ও বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ প্রধান (কান্ট্রি ডিরেক্টর) আবদুলায়ে সেক। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, সাবেক অর্থসচিব জাকির আহমেদ খান, মোহাম্মদ তারেক, ফজলে কবীর, মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী ও আব্দুর রউফ তালুকদার (বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান গভর্নর)।
অনুষ্ঠানে প্রবাসী আয় বাড়াতে দ্রুত প্রয়োজনীয় সংস্কার কাজ হাতে নেওয়া প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, এটি করা গেলে এক প্রবাসী আয় দিয়েই বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভসহ অনেক বিষয় মোকাবিলা করা সম্ভব হবে।
এ সময় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উদ্দেশ করে আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, প্রবাসী আয় বাড়ানোর জন্য আপনারা এভিডেন্স নির্ভর পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করুন। মাইক্রো লেভেলে কেস টু কেস উদাহরণ দেখুন। তাহলে আমাদের প্রবাসী আয় ও রাজস্ব বাড়বে।
বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ প্রধান (কান্ট্রি ডিরেক্টর) আবদুলায়ে সেক বলেন, পাবলিক ফিনানশিয়াল ম্যানেজমেন্ট (পিএফএম) হচ্ছে দেশের সুশাসন কাঠামোর মেরুদণ্ড। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে পিএফএফের মাধ্যমে উন্নত পরিষেবা প্রদান, দারিদ্র দূরীকরণ, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন ও নাগরিকের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করা।
বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের গভর্নেন্স গ্লোবাল প্রাকটিস দপ্তরের ব্যবস্থাপক হিশাম ওয়ালি বলেন, অনেক সমস্যার সমাধান হচ্ছে সুশাসন। আর সুশাসনের কেন্দ্রে রয়েছে পিএফএম। সরকারের পিএফএম কার্যক্রম দুর্বল থাকলে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নেও দুর্বলতা থাকে। এজন্য সরকারকে স্থানীয় ও অন্য দেশের পিএফএম কার্যক্রমের সফলতা ও ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নেওয়া প্রয়োজন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান গভর্নর ও সাবেক অর্থসচিব আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, কার্যকর পাবলিক ফিনানশিয়াল ম্যানেজমেন্টের জন্য এই খাতে প্রফেশনালিজম ডেভলপ করা প্রয়োজন। এক লোক সব কাজ করবে এই ধারণা থেকে বের হয়ে একেক বিষয়ে একেকজন পারদর্শী হবেন সেই লক্ষ্যে কাজ করা উচিত।
সরকারের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে স্ট্রাটেজিক প্ল্যানিং বিভাগ থেকে অপারেশনাল প্ল্যানিং কার্যক্রমকে আলাদা করার পরামর্শ দিয়েছেন সাবেক অর্থসচিব মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী। ভারতেও এমনটা করা হয়েছে বলে জানান তিনি। এ ছাড়া সব ধরনের স্থানীয় সরকারে বাজেট তৈরি ও ব্যয়ের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন তিনি।
সাবেক অর্থসচিব মোহাম্মদ তারেক বলেন, সরকারকে এখন অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের ওপর গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। আমাদের পিএফএম ব্যবস্থা এখনো অনেক দুর্বল। আমরা এক বছরের জন্য বাজেট করি। এ কারণে নির্দিষ্ট দপ্তর বা মন্ত্রণালয়ের অ্যাসেট সম্পর্কে জানা যায় না। তাই সব সরকারি সংস্থায় ইন্টারনাল বাজেটিং ও অডিটিং ব্যবস্থা রাখা প্রয়োজন।
আরেক প্রাক্তন অর্থসচিব ফজলে কবির বলেন, আমলাতন্ত্রে বিদ্যমান ব্যবস্থার যেকোনো পরিবর্তনের বিষয়ে এক ধরনের বিপরীত চিন্তা রয়েছে। ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য এ ধরনের চিন্তা থেকে বের হয়ে আসা প্রয়োজন। সূত্র: দেশ রূপান্তর
বাংলা গেজেট/বিএম
মন্তব্য করুন: