প্রকাশিত:
২১ সেপ্টেম্বার ২০২৩, ২২:১২
বাংলাদেশের নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্র হস্তক্ষেপ করতে চায় না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটাস ডি. হাস। তিনি বলেন, নির্বাচন যেন অবাধ ও সুষ্ঠু হয় সে বিষয়ে গুরুত্ব দেবে যুক্তরাষ্ট্র।
বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর বসুন্ধরায় বেসরকারি নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে ‘বিশ্ব শান্তি দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন। খবর সমকাল।
সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব পলিসি অ্যান্ড গভর্নেন্সের (এসআইপিজি) সেন্টার ফর পিস স্টাডিজ (সিপিএস) এবং নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির (এনএসইউ) অফিস অব এপটারনাল অ্যাফেয়ার্স যৌথভাবে দিবসটি পালন করে। এ বছর আন্তর্জাতিক শান্তি দিবসে জাতিসংঘের প্রতিপাদ্য ‘শান্তির জন্য পদক্ষেপ: বৈশ্বিক লক্ষ্যের জন্য আমাদের উচ্চাকাঙ্ক্ষা’।
পিটার হাস বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র সারা বিশ্বে পাঁচটি লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে। এর মধ্যে একটি হলো—অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে যেকোনো দেশের জনগণ যেন তাঁদের নেতা নির্বাচন করতে পারেন তা নিশ্চিত করা। বাংলাদেশে কয়েক মাস পরেই নির্বাচন। সেই নির্বাচন যেন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়, সে বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র নজর রাখবে।’
পিটার হাস আরও বলেন, ‘এই নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করার কোনো লক্ষ্য যুক্তরাষ্ট্রের নেই। যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য হচ্ছে, বাংলাদেশের জনগণকে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনে সহায়তা করা। এর মাধ্যমে জনগণ তাঁদের নেতা নির্বাচন করতে পারবেন।’ নির্বাচনে গণমাধ্যম যাতে ভয়ডরহীনভাবে কাজ করতে পারে, সেদিকও খেয়াল রাখতে হবে বলেও জানান তিনি।
শান্তি দিবস প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক শান্তি দিবস বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শান্তির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়।’
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আতিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে এনএসইউর মূল অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত এই সেশনে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে সহস্রাধিক দর্শক উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে সবাইকে স্বাগত জানিয়ে এনএসইউ বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান জাভেদ মুনীর আহমেদ বলেন, ‘সংঘাতপূর্ণ বিশ্বে শান্তি এখন সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ।’
সিপিএসের সমন্বয়ক ড. আবদুল ওয়াহাব গবেষণা, সংলাপ এবং কমিউনিটি সম্পৃক্ততার মাধ্যমে শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং কূটনীতি প্রসারে সিপিএসের ভূমিকা তুলে ধরে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন।
প্রশ্নোত্তর পর্বে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় যুক্তরাষ্ট্রে দৃঢ় নিষ্ঠার কথা তুলে ধরেন। বিশেষ করে রোহিঙ্গা সংকট এবং আন্তর্জাতিক শান্তি দিবসের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বৈশ্বিক শান্তি প্রচেষ্টায় তরুণদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
পররাষ্ট্রনীতির বিষয়ে পিটার হাস সামরিক পদক্ষেপের চেয়েও কূটনীতিতে রাষ্ট্রের অগ্রাধিকারের ইঙ্গিত দেন এবং বাংলাদেশের মতো গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, পারস্পরিক বিশ্বাস, আস্থা ও যোগাযোগ উন্নয়নের পথে নিয়ে যায় এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আনে। তিনি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি জোরদার করার জন্য দুর্নীতিবিরোধী পদক্ষেপের ওপর ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলের গুরুত্বের কথাও উল্লেখ করেন।
উপাচার্য ড. আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘স্থিতিশীল দেশগুলোও উল্লেখযোগ্য বৈষম্য ও রাজনৈতিক বিভাজনের সম্মুখীন হয়। এই কারণে বিশ্বে জরুরি ভিত্তিতে শান্তি প্রয়োজন।’
বাংলা গেজেট/এফএস
মন্তব্য করুন: