[email protected] শনিবার, ২৩শে নভেম্বর ২০২৪, ৮ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

কঙ্গোতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনবিরোধী বিক্ষোভে নিহত অন্তত ৪৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত:
১ সেপ্টেম্বার ২০২৩, ১৭:৩০

সংগৃহীত ছবি

কঙ্গোতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনবিরোধী বিক্ষোভে অন্তত ৪৩ জন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও ৫৬ জন। জাতিসংঘবিরোধী এই বিক্ষোভে দেশটির সেনাবাহিনী কঠোরভাবে দমন করা শুরু করলে এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।

বুধবার আফ্রিকার এই দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় শহর গোমায় সহিংস বিক্ষোভ ও এর জেরে সেনাবাহিনীর শক্তিপ্রয়োগে প্রাণহানির এ ঘটনা ঘটে। খবর রয়টার্সের।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার পূর্ব কঙ্গোলিজ শহর গোমায় জাতিসংঘ বিরোধী হিংসাত্মক বিক্ষোভে সেনাবাহিনীর কঠোর দমনপীড়নে ৪৩ জন নিহত এবং আরও ৫৬ জন আহত হয়েছেন বলে দেশটির সরকার জানিয়েছে।

রয়টার্স বলছে, বিক্ষোভের সময় একজন পুলিশ সদস্যের ওপর হামলার ফুটেজ সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পরে কঙ্গোলিজ সেনারা ক্র্যাকডাউন শুরু করে এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন এবং অন্যান্য বিদেশি সংস্থার বিরুদ্ধে আয়োজিত বিক্ষোভ এই জোরপূর্বক ছত্রভঙ্গ করে দেয়। রয়টার্স অবশ্য সেই ফুটেজ যাচাই করতে পারেনি।

কঙ্গোতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনটি মনুস্কো নামে পরিচিত। জাতিসংঘের এই মিশনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সহিংসতার বিরুদ্ধে বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে। মূলত বছরের পর বছর ধরে চলে আসা এই সহিংসতার কারণে বুধবার দেশটির ওই শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

রয়টার্স বলছে, ২০২২ সাল থেকে জাতিসংঘের মনুস্কো মিশন দেশটির নাগরিকদের প্রতিবাদের সম্মুখীন হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, শান্তিরক্ষীরা বহু বছরের মিলিশিয়া সহিংসতার বিরুদ্ধে বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে।

প্রতিবাদ-বিক্ষোভের আয়োজকরা অবশ্য এই বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণভাবে করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ছবিগুলোতে দেখা গেছে, বেসামরিক পোশাকে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া নারী ও পুরুষরা লাঠি ও পাথর দিয়ে একজন পুলিশকে মাটিতে ফেলে মারধর করছেন।

এর আগে কঙ্গোর কর্তৃপক্ষ বলেছিল, এক পুলিশ সদস্যকে পাথর ছুঁড়ে হত্যা করা হয়েছে এবং সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে ছয় বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে। তবে বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে দেশটির সরকার বলেছে, বিক্ষোভে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৩ জনে। এছাড়া আরও ১৫৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং এই ঘটনায় সামরিক তদন্ত শুরু করা হয়েছে।

সামাজিকমাধ্যমের ভিডিও ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, কঙ্গোর সেনারা একটি লরিতে বহু মৃতদেহ স্তূপাকার করে রাখছে এবং গাড়িতে করে সেগুলো নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। অবশ্য এই ফুটেজটিও যাচাই করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

গোমায় ইন্টারন্যাশনাল রেড ক্রসের স্থানীয় শাখার প্রধান অ্যান-সিলভি লিন্ডার বলেছেন, প্রতিবাদ-বিক্ষোভের পর তার ক্লিনিকে গুরুতর ছুরিকাঘাত ও গুলিবিদ্ধ হয়ে বহু আহত মানুষ এসেছেন। তিনি বলেন, ‘ক্লিনিকে পৌঁছানোর সময়ই অনেকে মৃত অবস্থায় ছিল।’

এদিকে এই ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছে কঙ্গোর জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন মনুস্কো। এক বিবৃতিতে তারা সহিংসতার ঘটনায় উদ্বিগ্ন বলেও জানিয়েছে। এছাড়া সহিংসতার ঘটনায় তাৎক্ষণিক ও স্বাধীন তদন্ত পরিচালনা করতে এবং আটককৃতদের সাথে মানবিক আচরণ করতে ও তাদের অধিকারকে সম্মান করার আহ্বানও জানিয়েছে মনুস্কো।

এর আগে ২০২২ সালের জুলাই মাসে মনুস্কো তথা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন বিরোধী বিক্ষোভের ফলে গোমা এবং বুটেম্বো শহরে ১৫ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। নিহতদের মধ্যে তিনজন শান্তিরক্ষীও ছিলেন। সূত্র: যুগান্তর

বাংলা গেজেট/বিএম


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর