প্রকাশিত:
২০ আগষ্ট ২০২৪, ২৩:৪৬
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সামনে রেখে ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের শিকাগোয় আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে ডেমোক্রেটিক দলের জাতীয় সম্মেলন। সোমবার রাত (স্থানীয় সময়) থেকে শুরু হওয়া এই সম্মেলন চার দিনব্যাপী চলবে।
ডেমোক্রেট নেতাদের সঙ্গে সম্মেলনে যোগ দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তবে নির্ধারিত সময়ের অনেকটা আগে হঠাৎই মঞ্চে এসে উপস্থিত হন ডেমোক্রেট প্রার্থী কমলা হ্যারিসও। এ সময় নভেম্বরে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রতিদ্ব›দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পরাজিত করে নিজের জয়ের অঙ্গীকার করেন তিনি। বিবিসি।
বাইডেন মঞ্চে ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই ‘ধন্যবাদ জো’ বলে স্লোগান দিতে থাকে জনতা। সেই সঙ্গে কয়েক মিনিট ধরে দাঁড়িয়ে থেকে বাইডেনকে করতালির মাধ্যমে অভিবাদন জানায় তারা। এ ঘটনার পর বাইডেন বেশ আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে আবেগে কেঁদেও ফেলেন তিনি।
নিজেকে সামলে নিয়ে উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ‘কঠিন সময় শেষ হয়েছে, এখন ভালো সময়।’ প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার পর নিজের সর্বোচ্চটা দিয়ে দেশের জন্য কাজ করেছেন বলেও জানান তিনি।
সম্মেলনে বাইডেন আরও বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট হিসাবে দেশের সেবা করতে পারাটা আমার জন্য সম্মানের। এই কাজকে আমি ভালোবেসেছি। তবে সবচেয়ে বেশি ভালোবেসেছি দেশকে।’
একই সঙ্গে, গণতান্ত্রিক ধারা বজায় রাখতে আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী কমলা হ্যারিসকে বিজয়ী করার আহ্বান জানিয়েছেন বাইডেন। প্রেসিডেন্ট পদ থেকে বিদায় নেওয়ার আগে দলের জাতীয় সম্মেলনে এটাই তার শেষ ভাষণ। ফলে প্রেসিডেন্ট হওয়ার দৌড় থেকে হঠাৎ সরে যাওয়া নিয়ে বাইডেন কী বলেন সেদিকেই নজর ছিল সবার।
বৃহস্পতিবার সম্মেলনের শেষ দিনে কমলা মঞ্চে উঠবেন বলে শোনা যাচ্ছিল। তবে তার আগে প্রথম দিনই সেখানে উপস্থিত হয়ে সবাইকে চমকে দেন কমলা। হাজার হাজার নেতাকর্মী উঠে দাঁড়িয়ে করতালি দিয়ে কমলাকে সম্মেলনে স্বাগত জানান।
বাইডেনের ঐতিহাসিক নেতৃত্বের জন্য তাকে ধন্যবাদ জানাতে নির্ধারিত সময়ের আগে সম্মেলনে এসেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। বাইডেনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বক্তব্য শুরু করেন কমলা। তিনি বলেছেন, বাইডেন আপনার ঐতিহাসিক নেতৃত্বের জন্য ধন্যবাদ। আমরা আপনার কাছে চিরকৃতজ্ঞ।
এ সময় সমবেত জনতার উদ্দেশে কমলা আরও বলেছেন, ‘আমরা যুদ্ধ করি, আমরা জিতে যাই।’ কমলার পরে মঞ্চে হাজির হন ডেমোক্রেটিক পার্টির আরেক প্রভাবশালী নেতা হিলারি ক্লিনটন।
কমলার মতো তিনিও বাইডেনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে ভাষণ শুরু করেন। একই সঙ্গে কমলাকে উদ্দেশ করে ক্লিনটন বলেছেন, সময় এসেছে ‘কাঁচের ছাদ’ ভেঙে দেওয়ার। আরও বলেছেন, তিনি (কমলা) প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচন করছেন। তার দৃঢ়সংকল্প আমাকে এবং আরও লাখ লাখ মানুষকে আরও বড় স্বপ্ন দেখার সাহস জোগায়। ডেমোক্রেটিক জাতীয় সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন মিশিগানের সিনেটর গ্যারি পিটার্সও।
তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, কমলা হ্যারিস যুক্তরাষ্ট্রে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসাবে প্রচার শুরুর পর থেকেই মিশিগানে উত্তেজনা বিরাজ করছে। মিশিগান কমলাকে প্রেসিডেন্ট হিসাবে চায় না বলে দাবি করেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসাবে ডেমোক্রেটিক পার্টির আনুষ্ঠানিক মনোনয়ন গ্রহণ করবেন কমলা। নভেম্বরের নির্বাচনে জিতলে কৃষ্ণাঙ্গ এবং এশীয় ঐতিহ্যের কমলা হ্যারিসই হবেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট।
এদিকে সম্মেলন চলাকালে আশপাশের এলাকায় প্রায় দেড় হাজার মানুষকে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ করতে দেখা গেছে। গাজা যুদ্ধে ইসরাইলকে সমর্থন দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন আন্দোলনকারীরা। বিক্ষোভ শেষে পদযাত্রাও করেন তারা। ইসরাইলকে সাহায্য করা বন্ধের পাশাপাশি গাজায় দ্রুত যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানান বিক্ষোভকারীরা।
মন্তব্য করুন: