[email protected] সোমবার, ২৫শে নভেম্বর ২০২৪, ১১ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

পরমাণু বোমা তৈরির দ্বারপ্রান্তে ইরান

মর্নিং টাইমস

প্রকাশিত:
১৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৫:৫১

ছবি সংগ্রহীত

মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় শত্রু ইরান। তাই দেশটির পরমাণু প্রকল্প নিয়ে সবচেয়ে বেশি উদ্বেগ তেল আবিবের। বিশ্লেষকরা বলছেন, পরমাণু বোমা তৈরির একেবারে দ্বারপ্রান্তে ইরান। দেশ দুটির মধ্যে অব্যাহত উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে একাধিকবার ইহুদি সংখ্যাগরিষ্ঠ ইসরায়েলকে মানচিত্র থেকে মুছে ফেলারও হুমকি দিয়েছে খামেনির দেশ। গত শনিবার ইসরায়েলের অভ্যন্তরে সরাসরি হামলা চালায় ইরান। এরপর থেকেই নতুন করে প্রশ্ন ওঠে— ইরান কীভাবে এতটা সাহস করে হামলা চালাল, তবে কি পরমাণু অস্ত্র বানানোর দৌড়ে সফল হয়েছে দেশটি?

সম্প্রতি ইরানের পরমাণু অস্ত্র সক্ষমতা নিয়ে সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টে একটি নিবন্ধ লিখেছেন মার্কিন সাংবাদিক জবি ওয়ারিক। যেখানে তিনি দাবি করেন, ইরান পরমাণু বোমা তৈরির একেবারে দ্বারপ্রান্তে। সাংবাদিক জবি ওয়ারি লেখেন, ইরানের সঙ্গে করা পরমাণু চুক্তি থেকে বেরিয়ে এসে বড় ভুল করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। ফলে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের নজর এড়িয়ে পরমাণু অস্ত্র তৈরির পথে এগিয়ে যাচ্ছে দেশটি।

নিবন্ধে উল্লেখ করা হয় বর্তমানে নিজেদের নাতাঞ্জ ও ফোরদো পরমাণু প্রকল্পে ৬০ শতাংশ হারে ইউরোনিয়াম সমৃদ্ধ করছে ইরান। পরমাণু অস্ত্র বা বোমা তৈরি করতে প্রয়োজন ৯০ শতাংশ বা তার বেশি সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম। ইরান যে গতিতে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে, তাতে শিগগিরই পরমাণু অস্ত্র তৈরির সক্ষমতা অর্জন করবে।

জবি ওয়ারিক লেখেন, পশ্চিমা বিশ্ব দীর্ঘদিন ধরেই ইরানের পরমাণু প্রকল্প নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে। জবাবে ইরান বলে আসছিল—তাদের এই প্রকল্প শান্তিপূর্ণ এবং বেসামরিক উদ্দেশ্যে নির্মিত। তবে, সম্প্রতি ইরানি কর্মকর্তরা বিষয়টিকে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করতে শুরু করেছেন। দেশটির পরমাণু শক্তি সংস্থার প্রধান মোহাম্মদ এসলামির একটি বক্তব্য ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়। প্রথমবারের মতো ইরানের কোনো ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হিসেবে তিনি বলেন,আগ্রাসন রুখতে ইরান এই অস্ত্র ব্যবহার করবে।

এমনিতেই গাজা যুদ্ধের কারণে উত্তপ্ত মধ্যপ্রাচ্য। তার ওপর ইরানের পরমাণু প্রকল্প ইসরায়েলের কপালে চিন্তার নতুন ভাঁজ ফেলে দিচ্ছে। যদিও তেহরানকে থামাকে সম্ভাব্য কিছুই করে যাচ্ছে তেল আবিব। ইরানের পরমাণু বিজ্ঞানীদের হত্যা, প্রকল্পের অভ্যন্তরে নাশকতা এবং আমেরিকাকে নিয়ে ‘স্টাক্সনেট' নামের ভাইরাস দিয়ে সাইবার হামলাও চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে পরমাণু প্রকল্পের কাজ ধীর হলেও থামানো যায়নি উপসাগরীয় দেশটিকে।

নিবন্ধে বলা হয়— পরমাণু অস্ত্র বানানোর আগেই ইরানকে যদি থামানো না যায়, তাহলে গোটা মধ্যপ্রাচ্যে গণবিধ্বংসী এই অস্ত্র বানানোর হিড়িক পড়ে যাবে। এই দৌড়ে সবার আগে নাম লিখাবে সৌদি আরব। দেশটির কার্যত শাসক মোহাম্মদ বিন সালমান এরই মধ্যে ঘোষণা দিয়েছেন— ইরান পরমাণু বোমা বানালে বসে থাকবে না সৌদিও। অন্যদিকে আঞ্চলিক শক্তিধর তুরস্ককেও তখন থামিয়ে রাখা যাবে না। ভয়াবহ সেই প্রতিযোগিতার ফলে আবারও বিস্তার ঘটবে পরমাণু অস্ত্রের, যা গোটা বিশ্বের জন্যই হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর