[email protected] মঙ্গলবার, ২৬শে নভেম্বর ২০২৪, ১২ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

কমেডি অভিনয়ের কৃতিত্ব খালেদ খানের

বিনোদন ডেস্ক

প্রকাশিত:
১৪ নভেম্বার ২০২৩, ২১:১৬

ফাইল ছবি

আগামীকালই জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০২২-এর বিজয়ীরা প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে ট্রফি হাতে তুলে নেবেন। এ বছর সেরা কৌতুক অভিনেতা ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পাচ্ছেন মঞ্চ, টিভি ও চলচ্চিত্র অভিনেতা দীপু ইমাম। ‘অপারেশন সুন্দরবন’ সিনেমায় ‘টাই হারুন’ চরিত্রে মজার অভিনয় করে এই পুরস্কার পাচ্ছেন তিনি। পুরস্কার হাতে তোলার প্রাক্কালে কথা বলেছেন এই অভিনেতা।

জাতীয় পুরস্কার গ্রহণের আগ মুহূর্তের অনুভূতি কেমন?

এই অনুভূতি সত্যিই বলে বোঝানো যাবে না। শুধু এটুকু বলতে পারি, আমার প্রথম সন্তান হওয়ার পর যেমন সুখের অনুভূতি হচ্ছিল, জাতীয় পুরস্কারের অনুভূতিও ততোটাই তিব্র। কারণ আমাদের শিল্পীদের জন্য শুধুমাত্র এই একটিই রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি। যা নির্দিষ্ট কাজের জন্য পাওয়া যায়। বাকী দুটি রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি (একুশে ও স্বাধীনতা পদক) অবশ্য আজীবনের কাজের স্বীকৃতি। সেটির মূল্যায়ণ আলাদা।

মঞ্চ থেকে উঠে এসে নানা মাধ্যমে অভিনয় করেছেন। পুরস্কার পাচ্ছেন কৌতুক চরিত্রে। এ ধরনের চরিত্র কি আগে করা হয়েছিল?

হ্যা। আমি কৌতুক চরিত্রে মঞ্চে খুবই প্রশংসিত হই আমার নাটকের দল সুবচনের ‘রূপবতী’ নাটকে। এটির নির্দেশক মঞ্চের যুবরাজ’খ্যাত খালেদ খান। নাসরিন জাহানের লেখা সেই নাটকে জমিদারের ভূমিকায় অভিনয় করি। চরিত্রটি এতোটাই মজার ছিল যে দর্শক তো বটেই, অসংখ্যবার রিহার্সেল দেখার পরও সহকর্মীরা আমার অভিনয় দেখে হেসে লুটোপুটি খেত!

‘জমিদার’ চরিত্রটি কি নিজের মতো করেই প্রেজেন্ট করেছিলেন?

আমার অভিনয়ে হাতেখড়ি মামুনুর রশীদের হাতে। সুবচনের নামকরা নাটক ‘রাষ্ট্র বনাম’ নির্দেশনা দিয়েছিলেন তিনি। এই নাটকের সহকারী নির্দেশক ছিলেন আজাদ আবুল কালাম। এরপর ড. ইস্রাফিল শাহীন, ফয়েজ জহিরদের কাছে অভিনয়ের অনেক কিছুই শিখেছি। কিন্তু কমেডি অভিনয়ে পুরো কৃতিত্বটাই খালেদ খানের। কারণ ‘রূপবতী’ নাটক করার আগে আমি কখনো কমেডি চরিত্র করিনি। আমি মঞ্চে যা করেছিলাম পুরোটাই খালেদ খানের আবিষ্কার।


‘অপারেশন সুন্দরবন’-এর ‘টাই হারুন’ চরিত্রটি কিভাবে পোট্রে করলেন?

আসলে এই চরিত্রটি নাকি নাজিমুদৌলা আমার কথা ভেবেই লিখেছিলেন। এমনকি নির্মাতা দীপন যখন স্ক্রিপ্টটি পড়ে তখন এই চরিত্রের জন্য আমার নামটি তার মাথায় এসেছিল। কারণ সে আমার অভিনয় সম্পর্কে জানে। তাছাড়া আমার সিনেমায় হাতেখড়িই তার ‘ঢাকা অ্যাটাক’ সিনেমার মাধ্যমে। যাই হোক, যখন আমি চরিত্রটি পড়ি, আমারও খুব পছন্দ হয়। কিভাবে করব অল্প সময়েই মাথার মধ্যে সেট হয়ে যায়। ওই যে বলছিলাম, মঞ্চে এ ধরনের চরিত্রের লম্বা সময়ের প্রস্তুতি নেওয়া ছিল। ফলে শুটিংয়ে কোন বেগ পেতে হয়নি। তবে একটা সিরিয়াস গল্পে আমার চরিত্রটি কতোখানি ফানি হবে, একটু ভাড়ামি হলেই গল্পের স্বাদ নষ্ট হতে পারে, এসব দিকে পরিচালক দীপন খেয়াল রেখেছিলো। আমার চরিত্রের নাম ছিল ‘টাই হারুন’। গুগলে ইংরেজিতে ‘টাই হারুন’ লিখলেই চলে আসে- ‘এই চরিত্রটিতে অভিনয় করেছেন দীপু ইমাম!’ টাই হারুন চরিত্রটি এতোটাই সাড়া ফেলেছে যে গুগলও সেটিকে নোটিশ করেছে।

এই প্রাপ্তিতে কাদের প্রতি আপনার কৃতজ্ঞতা রয়েছে?

আমি ভীষণভাবে কৃতজ্ঞ পরিচালক দীপন, সংলাপ রচয়িতা নাজিমুদৌলা ও অপারেশন সুন্দরবন সিনেমায় আমার সকল কো-আর্টিস্টসহ পুরো টিমের কাছে। তাছাড়া প্রোযজনা প্রতিষ্ঠান র‌্যাবের মঈন ভাই, রইসুল ভাই এবং অন্যান্য সকল সদস্যের কাছেও আমি কৃতজ্ঞ। আরও কৃতজ্ঞতা আমার বন্ধু হায়দার ও জুয়েল ভাইয়ের কাছে। হায়দারই আমাকে প্রথম মিডিয়াতে এনেছে। এখনো কোনো কাজের অফার পেলে হায়দারের সাথে আলাপ করি। আর শ্রদ্ধেয় বিপ্লব ভাইয়ার কাছে আমি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ। তিনি সব সময় মানসিক শক্তি ও সাহস দিয়ে গেছেন আমাকে। সবশেষে পরিবারের কথা বলতে চাই। আমার স্ত্রী সিমি এবং ছেলে সামিন বছরের পর বছর আমার সাথে অনেক কষ্ট করেছে। তাদের সাপোর্ট ছাড়া আমি এতদুর আসতে পারতাম না। ‘অপারেশন সুন্দরবন’ সিনেমার সময় আমার ছেলের এসএসসি পরীক্ষা চলছিল। তাকে ফেলে রেখে প্রায় ১৭/১৮ দিন নেটওয়ার্কের বাইরে চলে গেছিলাম। একদিনের জন্যও আমি ফোন দিয়ে খোঁজ নিতে পারিনি তার পরীক্ষা কেমন হচ্ছে। এক সেকেন্ডের জন্য তাদের গলাটা শুনতে পাইনি। সেই সব ত্যাগের স্বীকৃতি আমার এই জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।

 

বাংলা গেজেট/এমএএইচ


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর