প্রকাশিত:
৪ নভেম্বার ২০২৩, ২০:০৬
ঢালিউডের প্রিয়দর্শিনী মৌসুমী। কিংবদন্তি অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামান তার মধ্যে পেতেন বলিউডের লাস্যময়ী মধুবালার আদল। মিস ফটোজেনিক হয়ে রূপালী পর্দায় আসা অপার সৌন্দর্য্য ও মেধার সমন্বিত নাম মৌসুমী। আজ এই নন্দিত তারকার জন্মদিন। ৫০ পেরিয়ে ৫১-তে পা দিয়েছেন তিনি। শিল্পীর বিশেষ দিনে বিশেষ সাক্ষাৎকার-
জন্মদিন নিয়ে আপনার চিন্তা ভাবনা কেমন?
জন্মদিন এলে খুব ভালো লাগে। তবে আমি কখনোই ধুমধাম করে জন্মদিন পালন করতে পছন্দ করি না। এমন অনেক জন্মদিনে আমি কর্মব্যস্ত থেকেছি। তবে সব সময়ই কেউ না কেউ আমার জন্মদিনকে নানা আয়োজনে স্পেশ্যাল করেছেন। এবারও আমার পক্ষ থেকে তেমন কোন আয়োজন নেই। জানি না, সানি (নায়িকার স্বামী জনপ্রিয় চিত্রনায়ক ওমন সানি), কিংবা সন্তানরা কোন সারপ্রাইজ দেবে কিনা। তবে একাধিক কেক কাটতে হচ্ছে, আরও হবে। এসব তো আনন্দের কথা। কিন্তু জন্মদিনে আমার আরেকটি চিন্তা মাথায় ঘোরে। কতোটুকু জীবনকে সার্থক করতে পারলাম। মানুষের জন্য কতোটুকু করতে পারলাম। মৃত্যুর আরও কাছাকাছি চলে আসছি। বাবা-মাকে খুব মিস করি। এসব নানা ভাবনা আমার মধ্যে খেলা করে।
তিন দশকের পথচলাকে কিভাবে মূল্যায়ন করবেন?
১৯৯৩ সালের ২৫ মার্চ বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’। সোহানুর রহমান সোহানের এই ছবির মাধ্যমে দেশের চলচ্চিত্রপ্রেমীরা আমাকে আর সালমান শাহকে দু’হাতে বরণ করে নেন। প্রথম ছবিতেই এতো ভালোবাসা পাব কোনদিন চিন্তাও করিনি। আমাদের জুটি জায়গা করে নেয় মানুষের মনের মণিকোঠায়। এমনটা হবে ভাবেননি। শুধু কাজের প্রতিই মনোযোগ ছিল। সেই কাজের ভেলায় ভাসতে ভাসতে পেরিয়ে গেল তিন তিনটি দশক। কখন যে এতটা সময় পার হয়ে গেছে, ভাবতেই বিস্ময় জাগে। তবে ছোটবেলা থেকে অভিনয় নিয়ে স্বপ্ন দেখতাম। অভিনয়ে এতটা পথ পাড়ি দিয়েছি, তাতেই আমি তৃপ্ত।
আপনার রাজনীতিতে আসার ব্যাপারে গুঞ্জন শোনা যায়...
আমি যে কাজই করতে চাই মানুষের সেবার কথা ভেবেই করি। রাজনীতির বিষয়টিও তাই। এই যে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলাম, সেটিও শিল্পীদের মঙ্গলের কথা চিন্তা করেই। ফলে আমার নিয়ত যেহেতু সৎ তাই কোন কাজেই আমার আফসোস থাকে না। তবে এটা বলতে পারি রাজনীতি আমি একদমই বুঝি না। সেটা রাষ্ট্রীয় পলিটিকস হোক আর সিনেমার পলিটিকস। সব জায়গাতেই রাজনীতি থাকে কম বেশি। যেহেতু ওসব বুঝি না তাই ধারেকাছেও ঘেষি না। এজন্যই হয়ত আমার সঙ্গে কোন পলিটিকসও হয় না।
তরুন প্রজন্মকে এমন কোন পরামর্শ দেবেন যা তাদের ক্যারিয়ারে কাজে লাগবে...
নিজের পেশার সঙ্গে কখনোই অবিচার করা উচিত নয়। কখনোই বাস্তবে এক রকম আর ক্যামেরার সামনে আরেক রকম হওয়ার চেষ্টা করা যাবে না। সেটি দর্শক সবচেয়ে আগে ধরে ফেলে। আর যাদের সঙ্গেই আমি কাজ করব সে বয়সে ছোট হোক বড় হোক, তার প্রাপ্য সম্মানটুকু দিতে হবে। একটা সেটে যখন আপনি কাজ করবেন যদি সবার সঙ্গে হাসিমুখে সুন্দরভাবে কাজ করেন সেটা সবার মনে গেথে যায়। আর আপনি সবাইকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করেও কাজ করতে পারেন, আপনাকে কেউ কিছু সামনাসামনি বলতেও আসবে না। কিন্তু সেটি সবার মধ্যে এমন খারাপ মনোভাব তৈরী করে যা শিল্পীর ক্যারিয়ারে মারাত্মক প্রভাব ফেলে।
ভক্তদের উদ্দেশ্যে কি বলার আছে?
প্রথমেই বলব, আমার পক্ষ থেকে কোন ধরনের ভুল ভ্রান্তি হয়ে থাকলে সবাই আমাকে ক্ষমা করে দেবেন। কারণ মানুষ মরণশীল, যে কোন সময় মৃত্য আমাকে আলিঙ্গন করতে পারে। তাই সবার কাছে ক্ষমা প্রার্থনাটা সবচেয়ে জরুরী। আর আমার কিছু ইচ্ছে রয়েছে। আমি হজ পালন করতে চাই। সবাই দোয়া করবেন যেন এই ইচ্ছেটা পূরণ হয়। আমার মরার পর আমার লাশ যেন কাউকে দেখতে দেওয়া না হয়। যতো দ্রুত সম্ভব জানাযার পর যেন কবর দেওয়া হয় আমাকে। ভক্তদের কাছে অনুরোধ আপনাদের কাছে আমার অনেক ছবি রয়েছে। আমার মৃত্যুর পর সব ছবি আপনার মুছে ফেলবেন। আর পরবর্তী প্রজন্মের যদি আমার কোন কাজ গবেষনার জন্য দরকার পড়ে তাহলে মৌসুমী আর্কাইভ করে সেখানে বাছাইকৃত কাজ ও ছবি সংরক্ষন করবেন। ভক্তরাও তাদের কালেকশনে থাকা ছবিগুলো সেই আর্কাইভে জমা দিতে পারেন। আর মিডিয়ার কাছে আমার বিনীত অনুরোধ আপনারা আমার মৃত্যুর পর ধুম ধাড়াক্কা ভিডিও, নাচ গানের মাধ্যমে মৃত্যুর পর আমার খবর প্রকাশ করবেন না।
ঢালিউডে প্রিয় ১০ অভিনেতা
রাজ্জাক
আলমগীর
এটিএম শামসুজ্জামান
হুমায়ূন ফরিদী
আফজাল হোসেন
নাঈম
সালমান শাহ
ওমর সানি
মান্না
ফেরদৌস
ঢালিউডে প্রিয় ১০ অভিনেত্রী
শাবানা
ববিতা
কবরী
শবনম
সুবর্ণা মুস্তাফা
দিতি
শাবনাজ
শাবনূর
পপি
পূর্ণিমা
নিজের সেরা ১০ ছবি
কেয়ামত থেকে কেয়ামত
অন্তরে অন্তরে
দেনমহর
স্নেহ
মেঘলা আকাশ
মিস ডায়না
বিশ্বপ্রেমিক
লুটতরাজ
খায়রুন সুন্দরী
নিজের সেরা ৫ নায়ক
সালমান শাহ
ওমর সানি
মান্না
ফেরদৌস
আমিন খান
বাংলা গেজেট/এমএএইচ
মন্তব্য করুন: