প্রকাশিত:
২৯ সেপ্টেম্বার ২০২৩, ২১:২১
ঢাকাই সিনেমার নব্বই দশকের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক ওমর সানী অভিযোগ করেছেন, তার ছেলে ফারদিন এহসান ভয়াবহ প্রতারণার শিকার হয়েছেন।অনলাইন প্ল্যাটফর্ম বিট কয়েন এবং ক্রিপ্টো কারেন্সির মাধ্যমে এক ব্যক্তির সঙ্গে ২ কোটি ৫ লাখ টাকার লেনদেন করে প্রতারিত হয়েছেন ফারদিন।
ওমর সানী ছেলের প্রতারিত হওয়ার এই ঘটনা ফেসবুকে শেয়ার করে গণমাধ্যম ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাহায্য চেয়েছেন।
ওমর সানী-মৌসুমী দম্পতির ছেলে ফারদিনের অভিযোগ, তার সঙ্গে গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে নিশাত বিন জিয়া রুম্মান নামের এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে পরিচয় হয়। সেই পরিচয়ের ৪ মাস পর ব্যবসার কথা বলে ফারদিনের কাছ থেকে পুঁজি হিসেবে টাকা ধার নেন নিশাত। কয়েক ধাপে নিশাতকে সর্বমোট ২ কোটি ৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা দেন ফারদিন। এ টাকাগুলো তিনি তাকে দিয়েছেন বিট কয়েন এবং ক্রিপ্টো কারেন্সির মাধ্যমে।
ফারদিন জানান, পরে তিনি খোঁজ নিয়ে দেখেন নিশাত নামের সেই ব্যক্তির কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নেই। এমনকি নেই ব্যবসায়ের বৈধ ট্রেড লাইসেন্সও। এরপর নিশাতের কাছে টাকা ফেরত চাইলে তিনি দিতে অস্বীকৃতি জানান।
ফারদিন বলেন, আমি ধাপে ধাপে তাকে ব্যবসায়িক বিনিয়োগে ধার হিসেবে ২ কোটি ৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা প্রদান করেছি। তার বিপরীতে তাকে বলেছি যে আমাকে সিকিউরিটি হিসেবে আমার বিনিয়োগ মূল্যের ব্যাংকের চেক প্রদান করতে হবে এবং সেই চেক প্রদান করে সে আমার থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে পুরো টাকা বুঝে নেন। কিন্তু এক মাস যেতে না যেতেই তার বিভিন্ন বাহানা শুরু হয়। এটি একটি ব্যবসায়িক চুক্তি, একজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে আরেকজন ব্যবসায়ীর। প্রথম মাসে আমিসহ সবাইকেই চুক্তি মোতাবেক অর্থ প্রদান করলেও তারপর থেকে শুরু হয় বিভিন্ন বাহানা। অধিক অর্থ লাভের লোভে কোনো অ্যাপস বা সফটওয়্যারে কোনো টাকা দেওয়া হয়নি। আমি এবং তার পাশাপাশি আরও যারা ভুক্তভোগী আছেন সবাই তাকে একজন স্বনামধন্য ব্যবসায়ী এএলএম জিয়াউল হকের ছেলে নতুন একটি ব্যবসা করতে চাচ্ছে সেই সুবাদেই অর্থ বিনিয়োগ করে। যখন এই ছেলে আমাকে এবং অন্যদেরকে টাকা দিতে ব্যর্থ হয় তখন তার বাবার সঙ্গে আমরা দেখা করলে তার বাবা আমাদেরকে আস্তে আস্তে টাকা দিয়ে দেবেন বলে আশ্বাস দেন। তারপর গোপন সূত্রে আমি জানতে পারি তারা সবাইকে একই কথা বলে সবার থেকে কিছু সময় আদায় করে নিচ্ছিলেন।
ফারদিন বলেন, তার (নিশাত) বাবা আমার কাছে পাঁচ দিনের সময় চেয়েছিলেন। তিনি সুইজারল্যান্ডে যাবেন সেখান থেকে এসে আমার সঙ্গে মিটিং করার কথা থাকলেও আজও তা হয়নি। বিভিন্ন সময় তার কাছে আমার টাকা ফেরত চাইতে গিয়ে আমাকে এবং আমার অফিসের কর্মচারীদের হয়রানির শিকার হতে হয়। কিন্তু আমরা যখন আমাদের টাকা চাচ্ছি তখন তিনি তার পার্টনার সাহিল মোস্তাভি এবং তার স্ত্রী আফরা বাসনিন (যিনি এই পুরো স্ক্যামের মধ্যে জড়িত) দুবাই ঘুরে বেড়াচ্ছে। নিশাত বিন জিয়া প্রতারণা করে দুবাই অর্থ পাচার করে। পরে আরও জানা যায়, প্রতারণার টাকা দিয়ে তার উচ্চবিলাসী জীবন দেখিয়ে গত ৮ মাসে প্রায় ৩০ কোটি টাকা আত্মসাৎ এবং পাচার করে।
ফারদিন বলেন, এই ভণ্ড প্রতারকের ভণ্ডামি দেখে এক মাস আগে তার প্রদানকৃত সব চেকগুলো নিয়ে তাকে লিগ্যাল নোটিশ প্রদান করেন। সেই সঙ্গে ডিবি অফিসে অভিযোগ দেন। অর্থ পাচারকারীর মূলহোতা সাহিল মোস্তাভি (দুবাই প্রবাসী তবে এখন বাংলাদেশে) এবং প্রতারণা পরিচালনা করতেন নিশাত বিন জিয়া রুম্মান এবং তার স্ত্রী আফরা বাসনিন।
ওমর সানির ছেলে আরও বলেন, লিগ্যাল নোটিশে উল্লেখ করা আছে- আগামী ৩০ দিনের মধ্যে অর্থ পুরোপুরি ফেরত না দিলে চেকের উপরে এনআই অ্যাক্ট মামলা দিতে বাধ্য থাকিব।
বাংলা গেজেট/এমএএইচ
মন্তব্য করুন: