[email protected] শুক্রবার, ২২শে নভেম্বর ২০২৪, ৮ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

নওগাঁয় ধর্ষণ মামলায় দুইজনের যাবজ্জীবন

নিজস্ব প্রতিবেদক, নওগাঁ

প্রকাশিত:
২৯ আগষ্ট ২০২৩, ০২:৪৮

নওগাঁয় ধর্ষণ মামলার আসামি কাজল মালী।

নওগাঁয় আলাদা ধর্ষণ মামলায় দুই আসামির যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেছে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ আদালত। নওগাঁর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মো. মেহেদী হাসান তালুকদার সোমবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে এ রায় প্রদান করেন

সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার কাশিপুর গ্রামের শ্রী কাজল মালী এবং পোরশা থানার গোবরাকুড়ি এলাকার মো. হ্যাপি।

আসামী শ্রী কাজল মালীর পক্ষে অ্যাডভোকেট সোমেন্দ্র নাথ কুন্ডু এবং রাষ্ট্রপক্ষে নিয়োজিত বিশেষ কৌঁসুলি মো. মকবুল হোসেন মামলা পরিচালনা করেন। অপরদিকে আসামি হ্যাপির মামলায় রাষ্টপক্ষের বিশেষ কৌঁসুলি ছিলেন মো. মকবুল হোসেন।

আদালতে মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ২০২০ সালের ২৭ মার্চ দুপুর আড়াইটার দিকে নওগাঁ জেলার পত্নীতলা উপজেলার কাশিপুর গ্রামের শারীরিক প্রতিবন্ধী নারী তার বাড়ির পিছনে শুকনো পাতা ঝাড় দিতে যান। ওই সময় একই গ্রামের শ্রী কাজল মালী পেছন দিক থেকে জাপটে ধরে মুখে গামছা ঢুকিয়ে দেন।

পরে তার শোবার ঘরে নিয়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। ঘটনায় শারীরিক প্রতিবন্ধী নারীর স্বামী ১ এপ্রিল পত্নীতলা থানায় একটি মামলা করেন। আদালতে আসামি ঘটনার দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। তদন্ত শেষে আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।

২০২২ সালে ৮ জুন মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়ে চলতি বছরের ৩ আগস্ট ১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ সমাপ্ত করা হয়। গত বৃহস্পতিবার উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শোনা করা হয়।

এরপর রায় ঘোষণার জন্য দিন ঠিক হলে আদালতের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মো. মেহেদী হাসান তালুকদার প্রকাশ্যে আসামিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন। এ ছাড়া আসামিকে ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে ছয়মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ প্রদান করেন। আসামি পূর্ব থেকেই জেল হাজতে থাকায় তাকে সাজা পরোয়ানা পড়ে শোনানো হয়। জরিমানার অর্থ ভুক্তভোগী নারীকে প্রদানের নির্দেশ দেন আদালতের বিচারক।

অপরদিকে ২০১৪ সালের ১০ জানুয়ারি পোরশা থানার এক মাদ্রাসাছাত্রী তার নানীর বাড়ির উদ্দেশে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে কাশিতাড়া এলাকার হারুন শাহের আমবাগানে নিয়ে একব্যক্তি ওই ছাত্রীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। রক্তাক্ত ও মুমূর্ষু অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় লোকজন তার নানাকে খবর দেন।

পরে নানা এসে তাকে উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেন। ছাত্রীর নানা থানায় অভিযোগ করলে তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে পোরশা থানার গোবরাকুড়ি এলাকার হ্যাপির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

আদালতে চলতি মাসের ২৩ তারিখ পর্যন্ত ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে যুক্তিতর্ক শোনা করা হয়। আসামি পলাতক থাকায় নিয়ম অনুযায়ী তার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন আইনজীবী এস. এম সারোয়ার হোসেন।

উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে আদালতে সোমবার সকালে পলাতক আসামিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে ছয় মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করার রায় ঘোষণা করেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মো. মেহেদী হাসান তালুকদার।

রায় ঘোষণার সময় আসামি পলাতক থাকার সাজা পরোয়ানাসহ তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালতের বিচারক। জরিমানার টাকা ভুক্তভোগীকে দেয়ার নির্দেশ দেয় আদালত।

 

বাংলা গেজেট/এফএস

 


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর