প্রকাশিত:
২৩ আগষ্ট ২০২৩, ০২:০১
বিজ্ঞানীদের সামনে এখন নতুন জিনিস এসে দাঁড়িয়েছে সেটি হলো বাংলাদেশকে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে নিয়ে যাওয়া বলে মন্তব্য করেছেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান। তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রথমে বললে এতোটা বুঝতো না। প্রথম প্রথম মানুষ ঠাট্টা করতো। সেই ডিজিটাল বাংলাদেশকে এখন কেউ ঠাট্টা করে না। মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) সকালে শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানায় নির্মিত নভোথিয়েটার পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন।
ইয়াফেস ওসমান বলেন, আজ থেকে ১৫ বছর আগের এবং যে পরিবর্তন বাংলাদেশে দেখা যাচ্ছে প্রত্যেকাটি জিনিস বিজ্ঞানকে ধরে এগিয়েছে। মানুষের জীবনের যে উন্নয়ন সৌভাগ্যক্রমে এটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় থেকে শুরু হয়। শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ আর কল্পনা নয়, শেখ হাসিনার ভিশন-২১ নিছক কোন গল্প না। সেই পর্যায়ে দেশ চলে গেছে। তিনি বলেন, রাজশাহীকে শিক্ষানগর বলা হয়। যার জন্য রাজশাহীতে এই নভোথিয়েটার অত্যান্ত প্রয়োজন। সেই কারণে রাজশাহীতে জায়গাটি নির্ধারণ করেছি। এর পেছনে আপনাদের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন নিজেও ব্যক্তিগত ভাবে চেষ্টা করেছেন। সেই কারণে আমি মনে করি এটা আগে হওয়া দরকার ছিলো।
তিনি আরও বলেন, ভবিষ্যতের জন্য বলবো এখানে যারা শিক্ষা নিতে আসে, বিজ্ঞানে পড়ে তাদের জন্য এটা বড় সুযোগ তৈরী হলো। আশা করি এখানে যারা শিক্ষা নিতে আসে এবং আপামর রাজশাহীবাসী উপভোগ ও শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবে। শিক্ষা কোনো ব্যবসার জায়গা নয়। নভোথিয়েটারের দায়িত্ব কোনো ব্যবসায়ীকে দেয়া হবে না। সার্বিক পরিবর্তনের জন্য শিক্ষা। শিক্ষার জন্য যদি ব্যয় করেন তবে ফেরত পাবেন অনেক বেশি। নভোথিয়েটারের মূল লক্ষ্য হলো আধুনিক মানুষ তৈরি করা। নভোথিয়েটার রাজশাহীর সম্পদ- এটা রক্ষণাবেক্ষণ আপনাদের দায়িত্ব।
প্রযুক্তি মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের যে পরিবর্তন হয়েছে প্রত্যেকটাই বিজ্ঞানের পথ ধরে। অর্থাৎ বিজ্ঞানের মাধ্যমে মানুষের জীবনের ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। রাজশাহী একটি শিক্ষানগরী। স্থানীয় এবং বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত শিক্ষার্থীদেরকে বিজ্ঞানমনস্ক করে গড়ে তুলতে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে নভোথিয়েটার। সৌভাগ্যক্রমে বিজ্ঞান মন্ত্রণালয় থেকে ডিজিটাল বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
জানা গেছে, এই নভোথিয়েটারে আধুনিক প্রযুক্তির ডিজিটাল প্রজেক্টর সিস্টেমযুক্ত প্ল্যানেটরিয়াম, সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ডিজিটাল এক্সিবিটস, ফাইভ-ডি সিমিউলেটর থিয়েটার, টেলিস্কোপ, কম্পিউটারাইজড টিকেটিং অ্যান্ড ডেকোরেটিং সিস্টেমসহ নানা সুবিধা থাকবে। ভবন নির্মাণ শেষ হলে দ্রুত অন্যান্য যন্ত্রাংশ সংযোজন হবে নভোথিয়েটারে। ২০১২ সালের ৯ জানুয়ারি রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের (রাসিক) মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন রাজশাহীতে নভোথিয়েটার স্থাপনে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে চিঠি লিখেন। মূলত এরপর থেকেই শুরু নভোথিয়েটারের স্বপ্নযাত্রা। প্রকল্পটি ২০১৫ সালের আগস্টে পরিকল্পনা কমিশনের প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভায় অনুমোদন পায়। ওই বছরের ডিসেম্বরে যায় একনেকে। এরপর ২০১৬ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি একনেক সভায় পাস হয় এই প্রকল্প। প্রথমে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন সময়কাল ধরা হয়েছিল ২০১৫ সালের জুলাই থেকে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত। একনেক সভায় সময়সীমা ৬ মাস বাড়িয়ে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর নির্ধারণ করা হয়। ২০১৭ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি এটির নকশা দেখানো হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে।
এ সময় জেলা প্রশাসক শামীম আহম্মেদ, নভোথিয়েটার ও গণপূর্ত বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলা গেজেট/এমএএইচ
মন্তব্য করুন: