[email protected] রবিবার, ২৪শে নভেম্বর ২০২৪, ৯ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

হাত দিয়ে টান দিলেই উঠে যায় সড়কের কার্পেটিং

Abdur Rahman

প্রকাশিত:
২৯ মে ২০২৪, ২০:০২

ছবি : সংগৃহীত

প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে বান্দরবান সদর উপজেলার ভাগ্যকুল মাজার গেইটের ব্রিজ থেকে আলী নগর স্কুল পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার সড়কের সংস্কার কাজে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সড়কে কার্পেটিং করার পরদিনই হাত দিয়ে টান দিলেই উঠে আসছে কার্পেটিং।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাত দিয়ে টান দিলেই উঠে আসছে সড়কের কার্পেটিং। মাত্র কয়েক দিন আগেই সংস্কার করা হয়েছে বান্দরবান সদর উপজেলার সুয়ালক ইউনিয়নের ভাগ্যকুল মাজার গেইট ব্রিজ হতে আলি নগর স্কুল পর্যন্ত সড়কের বিভিন্ন অংশ। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এলজিইডির অর্থায়নে ৯৬ লাখ টাকা ব্যয়ে শুরু হয় ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটির সংস্কার কাজ। এলাকাবাসীর অভিযোগ সড়ক সংস্কারের কাজে ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের খোয়া পাথর ও বিটুমিন। শুধু তাই নয় বৃষ্টির পানির মধ্যে কাদামাটি ও ময়লা পরিষ্কার না করেই করা হয়েছে কার্পেটিংয়ের কাজ। এছাড়া সড়কে থাকা পুরনো পাথরগুলো পরিষ্কার না করেই ব্যবহার করা হয় একই কাজে।

স্থানীয়দের অভিযোগের পরও তদারকি না করায় ঠিকাদার নিজের ইচ্ছে মত অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে কোন রকমে সম্পন্ন করছে কাজটি। তাই সংস্কারের এক সপ্তাহ না যেতেই উঠে যাচ্ছে সড়কের কার্পেটিং। এতে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে স্থানীয়দের মাঝে। তাই কাজটি বাতিল করে পুনরায় সংস্কারের দাবি তাদের।

ভাগ্যকুল এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা করিমুদ্দিন বলেন, কার্পেটিং করেছে মাত্র কিছুদিন হয়েছে। এর মধ্যে হাতে টান দিলেই কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে। তার চেয়ে আগের রাস্তাই ভালো ছিল। সরকারের কোটি কোটি টাকা খরচ করে রাস্তা নির্মাণ করার কোনো মানেই নেই। সরকারের টাকা অপচয় ছাড়া আর কিছু না।

আলীনগর এলাকার বাসিন্দা আব্দুল হামিদ বলেন, কাজ শেষ হতে না হতেই কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে। এ কাজ এক মাসও টিকবে না। সঠিকভাবে কাজ না করার কারণে সড়কের এই অবস্থা। এ ধরনের রাস্তা আমরা জীবনেও দেখি নাই। এ বিষয়ে সাইটে দায়িত্বে থাকা মেহেদী নামে এলজিইডির প্রতিনিধির কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সংস্কার কাজের কার্পেটিং এভাবেই করা হয়। তারপরও আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি, কী কারণে কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে।

বান্দরবান স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জিয়াউল ইসলাম বলেন, আমরা বিষয়টি শুনেছি, আমাদের তদন্ত টীম রাস্তাটি পরিদর্শন করে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করবে। সড়কে অনিয়ম বা নির্মাণের কাজ সংগঠিত হয়েছে এমন প্রমাণ পাওয়া গেলে তদন্ত সাপেক্ষে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এলজিইডির তথ্যমতে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বান্দরবান সদর উপজেলার ভাগ্যকুল মাজার গেইটের ব্রিজ হয়ে আলী নগর স্কুল পর্যন্ত সড়কের সংস্কারের উদ্যোগ নেয় এলজিইডি। ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়ক উন্নয়নকাজে ব্যয় ধরা হয় ৯৬ লাখ। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স নু-কনষ্ট্রাকশনের লাইসেন্সে কাজটি বাস্তবায়ন করছেন মৌলভী সুলতান আহমেদ। ২০২৫ সালের জুন মাসে কাজটি শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর