[email protected] শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ঠা আশ্বিন ১৪৩১

মানবতাবিরোধী অপরাধে বাগেরহাটের ৭ জনের মৃত্যুদণ্ড

সারাদেশ ডেস্ক

প্রকাশিত:
৩০ নভেম্বার ২০২৩, ১২:৪৩

সংগৃহিত ছবি

মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বাগেরহাটের খান আকরামসহ সাতজনের মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। আজ বৃহস্পতিবার ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহীনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। খবর সমকাল।

মামলার সাত আসামি হলেন- খান আকরাম হোসেন (৬০), শেখ মোহম্মদ উকিল উদ্দিন (৬২), মো. মকবুল মোল্লা (৭৯) কারাবন্দি। পলাতক রয়েছেন- খান আশরাফ আলী (৬৫), রুস্তম আলী মোল্লা (৭০), শেখ ইদ্রিস আলী (৬১) ও শেখ রফিকুল ইসলাম বাবুল (৬৪)। 

মামলায় প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর রানা দাস গুপ্ত, তার সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা চমন। আসামিদের বিরুদ্ধে সাতটি অভিযোগ আনা হয়। 

২০১৭ সালের ৩১ মে আসামিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ আমলে নেওয়ার পর চার্জ গঠনের মাধ্যমে বিচারকাজ শুরু হয়। দীর্ঘ বিচারপ্রক্রিয়া শেষে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখা হয়।

আসামিদের বিরুদ্ধে সাত অভিযোগ

অভিযোগ-১: ১৯৭১ সালের ২৬ মে ১৫-২০ জন রাজাকার ও ২৫-৩০ জন পাকিস্তানি দখলদার সেনাবাহিনীর সদস্যসহ বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ থানার চাপড়ী ও তেলিগাতীতে নিরীহ নিরস্ত্র মুক্তিকামী মানুষদের ওপর অবৈধভাবে হামলা চালিয়ে ৪০-৫০টি বাড়ির মালামাল লুণ্ঠন করে, বাড়িঘর অগ্নিসংযোগে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে, দুইজন নিরীহ নিরস্ত্র মানুষকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুরুতর জখম করে এবং ১০ জন নিরীহ নিরস্ত্র স্বাধীনতার পক্ষের মানুষকে গুলি করে হত্যা করে।

অভিযোগ-২: ১৯৭১ সালের ৭ জুলাই আসামিরা বাগেরহাটের কচুয়া থানার হাজরাখালী ও বৈখালী রামনগরে হামলা চালিয়ে অবৈধভাবে নিরীহ নিরস্ত্র স্বাধীনতার পক্ষের চার লোককে আটক ও অপহরণ করে আবাদের খালের ব্রিজে হত্যা করে লাশ খালে ফেলে দেয়।

অভিযোগ-৩: ১৯৭১ সালের ১৩ নভেম্বর বাগেরহাট জেলার মোড়লগঞ্জ থানার ঢুলিগাতী গ্রামে হামলা চালিয়ে দুইজন নিরস্ত্র বীর মুক্তিযোদ্ধাকে অবৈধ আটক, নির্যাতন ও গুলি করে হত্যা করে।

অভিযোগ-৪: ১৯৭১ সালের ১৭ নভেম্বর বাগেরহাটের কচুয়া থানার বিলকুল ও বিছট গ্রামে হামলা চালিয়ে চারজন নিরীহ নিরস্ত্র স্বাধীনতার পক্ষের লোককে আটক ও অপহরণ করে কাঠালতলা ব্রিজে এনে নির্যাতনের পর গুলি করে হত্যা করে লাশ নদীতে ফেলে দেয়।

অভিযোগ-৫: ১৯৭১ সালের ৩০ নভেম্বর বাগেরহাটের কচুয়া থানাধীন বিলকুল গ্রাম থেকে নিরস্ত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা মুনসুর আলী নকীবকে অন্যায় আটক ও অপহরণ করে মোড়েলগঞ্জ থানার দৈবজ্ঞহাটির গরুর হাঁটির ব্রিজের ওপরে নিয়ে নির্যাতনের পর গুলি করে হত্যা করে।

অভিযোগ-৬: ১৯৭১ সালের ১৬ অক্টোবর বাগেরহাটের কচুয়া থানাধীন উদানখালী গ্রামে হামলা চালিয়ে স্বাধীনতার পক্ষের নিরীহ নিরস্ত্র উকিল উদ্দিন মাঝিকে অবৈধভাবে আটক করে হত্যা করে এবং তার মেয়ে তাসলিমাকে অবৈধভাবে আটক ও অপহরণ করে কচুয়া রাজাকার ক্যাম্পে নিয়ে আসে। কচুয়া রাজাকার ক্যাম্প ও আশেপাশের রাজাকার ক্যাম্পে দীর্ঘদিন অবৈধভাবে সলিমাসহ চারজনকে আটকিয়ে রেখে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ১৬ ডিসেম্বর বিকেল ৪টায় বাংলাদেশ দখলদার মুক্ত হলে মুক্তিযোদ্ধারা রাজাকার ক্যাম্প তল্লাশি করে ভিকটিম তাসলিমাকে উদ্ধার করে তার বাড়িতে পৌঁছে দেন।

অভিযোগ-৭: বাগেরহাটের কচুয়া থানার গজালিয়া বাজারে হামলা চালিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরীহ নিরস্ত্র শ্রীধাম কর্মকার ও তার স্ত্রী কমলা রানি কর্মকারকে অবৈধভাবে আটক করে নির্যাতন করতে থাকে। আসামিরা শ্রীধাম কর্মকারকে হত্যা করে কমলা রানি কর্মকারকে অপহরণ করে কচুয়া রাজাকার ক্যাম্পে এনে আটকে রাখে।

বাংলা গেজেট/এফএস


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর