প্রকাশিত:
২৪ অক্টোবার ২০২৩, ১৩:০১
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ট্রেন দুর্ঘটনার প্রায় ১৬ ঘণ্টা পর ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা-কিশোরগঞ্জ রেলপথে ট্রেন চলাচল পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ভৈরব রেলওয়ে জংশনের স্টেশন মাস্টার মো. ইউসুফ মিয়া।
তিনি জানান, ঢাকা ও আখাউড়া থেকে দুটি উদ্ধারকারি ট্রেন ঘটনাস্থলে পৌঁছে রাত ৮টার দিকে প্রথমে দুর্ঘটনা কবলিত মালবাহি ট্রেনটি ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনে সরিয়ে নেওয়া হয়। পরে সেই লাইনটি মেরামত শেষে রাত ১০টা ৪৫ মি. দিকে ঢাকা থেকে সিলেটগামী কালিনী এক্সপ্রেস ট্রেনটির মাধ্যমে সিঙ্গেল লাইনে ট্রেন চলাচল শুরু হয়।
পরে দুর্ঘটনাজনিত কারণে বিভিন্ন স্টেশনে আটকে থাকা ঢাকা-নোয়াখালি উপকূল, সিলেট-ঢাকা জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস ট্রেন ইত্যাদি ট্রেনগুলোর চলাচল শুরু হয়।
ভোর রাত সাড়ে ৪টার দিকে দুর্ঘটনা কবলিত ট্রেনটির দুটি বগি রেললাইন থেকে সরিয়ে নিয়ে রেলপথ মেরামতের কাজ শুরু করে কর্মীরা। সকাল ৭টা ১২ মিনিটে ঢাকা থেকে সিলেটগামী উপবন ও ৭টা ১৯ মি.দিকে চট্টগ্রাম থেকে ছেঁড়ে আসা ঢাকা মেইল ট্রেনটি ঢাকার দিকে যায়। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ট্রেন চলাচল পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে দুর্ঘটনার পর হতাহতের তালিকা নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হলেও গতকাল রাতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র ১৭ জন নিহত এবং অর্ধশত আহতের খবর নিশ্চিত করে। পরে স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার ২২জন নিহতের কথা জানায়। কিন্তু রাতে স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তরের সময় জানা যায় প্রকৃত নিহতের সংখ্যা ১৬ আর আহত ৭৫জন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা.বুলবুল আহমেদ জানান, ১৬টি মরদেহ রাতেই তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
আহতদের মাঝে ২০ জনকে ঢাকায়, ৪০ জনকে বাজিতপুর জহুরুল ইসলাম ও কিশোরগঞ্জের সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং ১২ জনকে অন্যান্য হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে এখানে রবিউল (১২) নামে এক অজ্ঞাত পরিচয় শিশুসহ তিনজন চিকিৎসাধীন আছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গতকাল ২৩ অক্টোবর সোমবার বিকাল ৪টার দিকে ভৈরব থেকে ছেঁড়ে যায় ঢাকাগামী আন্ত:নগর এগারো সিন্ধুর এক্সপ্রেস ট্রেনটি। ট্রেনটি স্টেশনের আউটার সিগন্যাল পার হওয়ার পূর্বেই ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী একটি মালবাহি ট্রেন ভৈরব স্টেশনে ঢুকার সময় এগার সিন্ধুর ট্রেনটির পিছনে ধাক্কা দেয়। এতে করে দুটি বগী চুর্ণবিচুর্ণ হয়ে লাইল থেকে ছিটকে পড়ে। এই ঘটনায় এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।
মালবাহি ট্রেনটি সিগন্যাল অমান্য করায় এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানায় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ইতোমধ্যে ওই ট্রেনটির চালক, সহকারি চালক ও পরিচালককে (গার্ড) সাময়িক বরখাস্ত করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। সূত্র: দেশ রূপান্তর
বাংলা গেজেট/বিএম
মন্তব্য করুন: