[email protected] শুক্রবার, ২২শে নভেম্বর ২০২৪, ৮ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে স্বাস্থ্য সেবা

জামালপুর

প্রকাশিত:
১৩ আগষ্ট ২০২৩, ০০:৪৯

ফাইল ছবি

জামালপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের বহির্বিভাগের ভবনটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। এমতাবস্থায় স্বাস্থ্য সেবার কার্যক্রম চলছে ঝুঁকিপূর্ণ ভাবে। জরাজীর্ণ এই ভবনটিতে যেকোন সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। একরকম আতঙ্ক নিয়ে সেবা নিচ্ছেন রোগীরা। একই কথা বলছেন চিকিৎসক ও সংশ্লিষ্টরা।

জামালপুর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসকের চেম্বার, প্যাথলজি ও রোগীদের বসার জায়গাসহ ২৫টি কক্ষ এখন মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। ভবনের বিভিন্ন জায়গায় দেয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছে। ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ে রড বেরিয়ে পরেছে। দরজা-জানালাগুলোও জরাজীর্ণ। শুধু হাসপাতালের বহির্বিভাগেই নয় তৃতীয় এবং চতুর্থ তলাবিশিষ্ট দুটি আবাসিক ভবন ও সেবা তত্ত্বাবধায়কের একতলা ভবনেও দেখা যায় একই দৃশ্য।

জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের বহির্বিভাগ ভবনটি ১৯৬১ সালে নির্মিত হয়। ২০২১ সালে গণপূর্ত বিভাগ ভবনটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে। তখন থেকে ভবনের বিভিন্ন স্থানে লাল রঙের সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরিত্যক্ত ঘোষণার দুইবছর পার হলেও বিকল্প ব্যবস্থা নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

হাসপাতালের পরিত্যক্ত বহির্বিভাগে ছুটির দিন বাদে প্রতিদিন সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত জামালপুর জেলাসহ আশেপাশের জেলা থেকে গড়ে চার থেকে পাঁচ হাজার রোগী ও তাদের স্বজনরা আসে। এ ছাড়াও এই ভবনে ফার্মেসি, টিকিট কাউন্টার, প্যাথলজি, এক্সরে, সিটি স্ক্যান, আল্ট্রাসনোগ্রাম, ব্লাড ব্যাংকের লোকজন ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন।

হাসপাতালের গাইনি বিভাগে চিকিৎসা নিতে এসেছেন শর্মিলা পাল। তিনি বলেন, এতবড় হাসপাতাল অথচ শৌচাগারের ছাদ জরাজীর্ণ। সেখানে দেওয়ালের পরেস্তার ভেঙে পরছে।

শাহজান আলী নামের এক বয়স্ক রোগী জানান, আমি এসেছি চোখের চিকিৎসা নিতে। লম্বা লাইনের দাঁড়াতে না পেরে পাশে বসার চেয়ারে বসে জিড়িয়ে নেওয়ার সময় হঠাৎ আমার সামনে ছাদ থেকে বড় একটা পলেস্তারা খসে পড়লো। আমি যে কী পরিমাণ ভয় পেয়েছি তা বোঝাতে পারবো না।

হাসপাতালের দন্ত চিকিৎসা বিভাগের প্রধান (আবাসিক) ডা. ইকরামুল হক জানান, আমি যে কক্ষে রোগী দেখে যাচ্ছি সেটি গণপূর্ত বিভাগ পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছে। আমরা অধিক ঝুঁকির মধ্যে চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছি। দূর-দুরান্ত থেকে আসা রোগী এবং তাদের স্বজনেরাও ঝুঁকিতে পরছেন। এই মুহূর্তে আমাদেরকে অন্যত্র স্থানান্তর করা প্রয়োজন।

সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, আমরা গণপূর্ত বিভাগের পরিত্যক্ত ভবনে দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছি। রোগীদের প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা-নিরীক্ষা এই ভবনে করে আসছি। আমরা সকলেই ঝুঁকির মধ্যে সেবা কার্যক্রম করে যাচ্ছি।

গণপূর্ত উপবিভাগীয় প্রকৌশলী এফএম আশ্রাফুল আউয়াল রানা বলেন, বর্তমানে ভবনের অবস্থা খুবই নাজুক। আমরা কয়েকদফা মেরামত করার পরও পলেস্তার খসে পরছে। কোনোভাবেই সংরক্ষণ করা যাচ্ছে না। বারবার সংস্কার করার পরও পলেস্তার খুলে খুলে পরে যাচ্ছে। টেম্পার কমে যাওয়ায় ছাদের রড বের হয়ে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে বড় ধরনের দুর্ঘটনার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই অফিসিয়ালি জামালপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের বহির্বিভাগকে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ঘোষণা করি। সেই সঙ্গে জনসাধারণের জ্ঞাতার্থে বিভিন্ন জায়গায় সতর্কবার্তা লিখে দিয়েছি।

জামালপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল সহকারী পরিচালক ডা. মো. মাহফুজুর রহমান সোহান জানান, ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের কথা বিবেচনা করে গণপূর্ত ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে আমরা লিখিতভাবে ভবনের কথা জানিয়েছি। বিকল্প কোনো জায়গা না থাকার কারণে এই মুহূর্তে বহির্বিভাগকে অন্যত্র স্থানান্তর করতে পারছি না। সূত্র: দেশ রূপান্তর

বাংলা গেজেট/বিএম


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর