প্রকাশিত:
১৭ সেপ্টেম্বার ২০২৩, ০৪:৩৭
বর্ষা পেরিয়ে এসেছে শরৎ। আর শরৎকাল মানেই শুভ্র রঙের খেলা। নীল আকাশে সাদা মেঘ আর নদীর বুকে জেগে ওঠা চরে দোল খাওয়া কাশবন মনে জাগায় অন্যরকম অনুভূতি। শারদীয় এ ঋতুতে ভ্রমণবিলাসীদের প্রথম পছন্দ কাশবন। কাশফুলের ছোঁয়া পেতে দূর দূরান্ত থেকে ছুটে আসে প্রকৃতিপ্রেমী মানুষ।
রাজশাহীর অন্যতম বিনোদন কেন্দ্র নগরীর মুক্তমঞ্চ এলাকা। তবে তার সামনেই জেগে উঠেছে পদ্মার বিশাল চর। এ চরে এখনও বসতি গড়ে না ওঠায় কোথাও কোনো বাড়ি-ঘর নেই। দু’চোখ ভরে শুধু কাশবনের ছড়াছড়ি। পদ্মার চরে সমুদ্র সৈকতের মতো এমন নৈসর্গিক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়েছে। যেকোনো মানুষের মনকে আকৃষ্ট করতে বাধ্য করছে নিমিষেই। এ কারণে বিনোদনপ্রেমীরা প্রতিদিন ভিড় করছেন এখানে। দূর-দূরান্ত থেকে মানুষজন ছুটে আসছেন। চোখ ধাঁধাঁনো কাশফুলের শ্বেত- শুভ্র-স্নিগ্ধতা পদ্মা-সৌন্দর্যে নতুনমাত্রা যোগ করেছে। পদ্মার চরে কাশফুলের ঢেউ যেন অন্যরকম মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে। এ যেন জেগে ওঠা পদ্মার চরে নতুন মিনি পর্যটনকেন্দ্র।
রাজশাহী নগরীসহ উপজেলাগুলোর পদ্মার পাড় ঘেঁষেও এমন সৌন্দর্যের হাতছানি। বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত নগরীর পদ্মা গার্ডেন, টি-বাঁধ, আই বাঁধ, মুক্তমঞ্চসহ পাউবোর ট্রি-গোয়েনে সৌন্দর্য পিপাসু মানুষের ঢল নামছে।
নগরীর পদ্মা গার্ডেন, টি-বাঁধ, আই বাঁধ, মুক্তমঞ্চ ঘুরে দেখা যায়, পদ্মাপাড়ে সারিসারি নৌকা দাঁড় করানো রয়েছে। মাঝিদের হাঁকডাকে মুখরিত চারিধার। নগরীর পঞ্চবটি এলাকা থেকে টি-বাঁধ পর্যন্ত নৌকা ভ্রমণের সঙ্গে শুভ্র কাশফুলের ছোঁয়া নিতে অনেক ভ্রমণপিপাসুই এখানেই আসছেন। মুক্তমঞ্চ ও সীমান্ত নোঙরের পাশে খুব সহজেই কাশফুলের সঙ্গে মিশে যাওয়ার সুযোগ মিলছে।
শুধু সৌন্দর্যের মাঝে নিজেকে হারিয়েই যাচ্ছেন না, স্মৃতির পাতায় প্রিয়জনের সঙ্গে ফ্রেমবন্দিও করতে দেখা যাচ্ছে। পরিবার নিয়ে পদ্মা পাড়ে ঘুরতে এসেছিলেন রাফসান-এলিনা দম্পতি। ছোট্ট ফুটফুটে বাচ্চার সঙ্গে কাশফুলের সৌন্দর্য উপভোগে মেতেছিলেন।
পদ্মার চরে পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘুরতে এসেছেন নগরীর সাগরপাড়া এলাকা আব্দুস সবুর আলী। তিনি বলেন, পদ্মার চর, ফুলে ফুলে ভরা চরের সাদা কাশবন এবং চরের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া সরু খালে প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের সৃষ্টি করেছ। পর্যটকদের কাছে পদ্মার বিশাল চর বড় বিনোদন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। এজন্য পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসেছি।
বাবার সাথে তাল মিলিয়ে লাইজু আক্তার আঁখি বলেন, পরিবারের সঙ্গে ঘুরতে গিয়ে কাশবনের মাঝে ছবি তুলেছি। সবাই মিলে অনেক আনন্দ করেছি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের স্মৃতির ওয়ালেও তা ধরে রেখেছি।
রাজশাহী কলেজ শিক্ষার্থী জাকিয়া ইয়াসমিন জুঁই জানান, মাঝে মাঝেই পদ্মার পাড়ে বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে ঘুরতে আসা হয়। পদ্মার পাড়ের বাতাস, বাতাসে কাশফুলের ঢেউ, বিকেলে প্রকৃতির ভিন্ন এক রূপ। এগুলো নিমিষেই মন ভালো করে দেয়।
মুক্তমঞ্চ এলাকায় ঝালমুড়ি বিক্রি করেন শাহালাল হোসেন। তিনি জানান, প্রতিদিন কমবেশি মানুষ পদ্মার চরে ঘুরতে আসেন। স্থানীয়দের পাশাপাশি দূর-দূরান্ত থেকে শত শত মানুষ চরে এসে বনভোজন করেন। এখন আবার নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। জেগে উঠেছে পদ্মার চর। এতে করে দ্বিগুণ মানুষের ঢল নেমে এসেছে। আমাদের ব্যবসা এতে আরও ভালো জমে উঠেছে।
বাংলা গেজেট/এমএএইচ
মন্তব্য করুন: