প্রকাশিত:
১৪ জুলাই ২০২৪, ১৬:০৯
সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে বঙ্গভবন অভিমুখে শিক্ষার্থীদের গণপদযাত্রাটি পুলিশি বাধার মুখে পড়েছে।
রোববার (১৪ জুলাই) দুপুর দেড়টার দিকে পদযাত্রাটি গুলিস্তানের জিরোপয়েন্টে এসে অবস্থান নেয়।
এর আগে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনে গ্রন্থাগারের সামনে বেলা ১১টার আগে থেকেই ছোট ছোট দলে জড়ো হতে শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। পরে দুপুর ১২টার পর সেখান থেকে বঙ্গভবন অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করেন তারা।
ঢাবির পাশাপাশি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও এই গণপদযাত্রায় অংশ নেন। কিন্তু আগে থেকেই গুলিস্তানের জিরো পয়েন্টে ব্যারিকেড দিয়ে রাখে পুলিশ। ব্যারিকেডের কারণে সেখানেই বসে পড়েন আন্দোলনকারীরা।
আন্দোলনের সমন্বয়করা জানান, আমরা ঢালাওভাবে বঙ্গভবন অভিমুখে যাব না। আমাদের ১০ জন প্রতিনিধি স্মারকলিপি নিয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করতে যাবেন বঙ্গভবনে। এই সময়ে বাকি শিক্ষার্থীরা জিরোপয়েন্ট থেকে সচিবালয়ের সামনের সড়কে অবস্থান করবেন।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা প্রচলিত ছিল। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা, ১০ শতাংশ নারী কোটা, অনগ্রসর জেলার বাসিন্দাদের জন্য ১০ শতাংশ কোটা, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের জন্য ৫ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য ১ শতাংশ আসন সংরক্ষিত ছিল।
ওই বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোটা সংস্কারের দাবিতে বড় বিক্ষোভ হয়। কোটাব্যবস্থার সংস্কার করে ৫৬ শতাংশ কোটা থেকে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার দাবি জানিয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা। পরে সে বছরের ৪ অক্টোবর কোটাপদ্ধতি বাতিলবিষয়ক পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
এর মাধ্যমে ৪৬ বছর ধরে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে যে কোটাব্যবস্থা ছিল, তা বাতিল হয়ে যায়। পরে ২০২১ সালে সেই পরিপত্রের মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের অংশটিকে চ্যালেঞ্জ করে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান উচ্চ আদালতে রিট করেন। সেই রিটের রায়ে চলতি বছরের ৫ জুন পরিপত্রের ওই অংশ অবৈধ ঘোষণা করা হয়। এরপর চাকরিপ্রত্যাশী সাধারণ শিক্ষার্থীরা মাঠে নামেন।
টাকা কয়েকদিন আন্দোলনের পর গত ৯ জুলাই কোটা পুনর্বহাল নিয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী। পরেরদিন হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের ওপর এক মাসের স্থিতাবস্থা জারি করেন আপিল বিভাগ। এ আদেশের ফলে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা পরিপত্র বহাল থাকছে। তবে শিক্ষার্থীরা আপিল বিভাগের এই আদেশ প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
মন্তব্য করুন: