[email protected] সোমবার, ২৫শে নভেম্বর ২০২৪, ১১ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

স্বপ্ন যাচ্ছে বাড়ি, ফাঁকা হচ্ছে আবাসিক হলসমূহ

এস এম মোজতাহীদ প্লাবন (নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি)

প্রকাশিত:
৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৯:৪৯

ছবি : সংগৃহীত

ফাঁকা হচ্ছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, হল ছাড়ছেন শিক্ষার্থীরা। নাড়ির টানে বাড়ি ফিরছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা, ক্যাম্পাসে নেই কোলাহল। সিয়াম সাধনার মাস রমজান ধীরে ধীরে শেষ হয়ে আসছে। ঘনিয়ে আসছে খুশির ঈদ। পরিবারের সঙ্গে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে এরই মধ্যে ক্যাম্পাস ছাড়তে শুরু করেছেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাককানইবি) শিক্ষার্থীরা।

দিন যত এগিয়ে আসছে নাড়ির টানে বাড়ি ফেরা শিক্ষার্থীর সংখ্যাও তত বাড়ছে। এতে ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো। ক্যাম্পাসের চিরচেনা কোলাহলেও পড়তে শুরু করেছে ভাটা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঈদের এক সপ্তাহ বাকি থাকতে এরই মধ্যে প্রায় অর্ধেক শিক্ষার্থী ক্যাম্পাস ছেড়েছেন। ক্যাম্পাসে এখন প্রতিদিনই শিক্ষার্থী কমছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্নিবীণা হল, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, দোলনচাঁপা হল ও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলসহ ছাত্র-ছাত্রীদের আবাসিক হলগুলোর সামনে দাঁড়ালেই এখন ব্যাগ-বস্তা ও বিভিন্ন মালপত্র চোখে পড়ছে। বিশেষত সকাল ও সন্ধ্যা সময় এ দৃশ্যটা বেশি দেখা যাচ্ছে। হলগুলো থেকে বের হওয়া শিক্ষার্থীদের চোখেমুখে দেখা যাচ্ছে গ্রামে ফেরার আনন্দের ঝিলিক। দীর্ঘদিন পর পরিবারের সঙ্গে দেখা হওয়ার উচ্ছ্বাস ঝরে পড়ছে তাদের কথাবার্তায়ও।

বঙ্গবন্ধু হলের শিক্ষার্থী শেখ শাকিল আহমেদ অন্তর বের হয়েছেন বগুড়ার উদ্দেশ্যে। পিঠে ও হাতে ব্যাগ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন হলের গেটে রিকশার অপেক্ষায়। কথা হলে তিনি বলেন, ক্লাস ও পরীক্ষার কারণে দীর্ঘদিন বাড়ি যাওয়া হয় না। অনেকদিন পর গ্রামে যাচ্ছি। স্বাভাবিকভাবেই খুব ভালো লাগছে। রমজানের শেষ কয়েকটা দিন আব্বা-আম্মার সঙ্গে ইফতার ও সেহরি করবো, এটা ভেবে খুব আনন্দ লাগছে।


দোলনচাঁপা হলের এক শিক্ষার্থী বলেন, বাড়িতে সবাই অনেক অপেক্ষা করে আছে। শেষ সময়ে এখন যেন আর তর সইছে না। কতক্ষণে বাড়ি পৌঁছাবো, নিজের মধ্যে অস্থিরতা কাজ করছে। পড়াশোনার কারণে পরিবার ছেড়ে দিনের পর দিন বাইরে থাকতে হয়। মাঝেমাঝে বাবা-মাকে খুব বেশি মিস করি। একে তো বাড়ি যাচ্ছি, তার ওপর ঈদ- সব আনন্দ যেন মিলেমিশে একাকার। খুব ভালো লাগছে।

তবে শিক্ষার্থীদের এই ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে বাড়ি যাওয়ার আনন্দঘন দৃশ্যের বিপরীতে কিছু বেদনাঘন চিত্রও রয়েছে। কারণ, ঈদের ছুটি শেষ হওয়ার সাথে সাথেই পরীক্ষা থাকায় অনেক শিক্ষার্থী বাড়ি গেলেও মানসিক ভাবে চাপে থাকতে হবে। কারও কারও বিসিএস লিখিত পরীক্ষা রয়েছে। যদিও আবাসিক হলগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এ ধরনের শিক্ষার্থীদের একটি সংখ্যা এখন বাড়ি না গিয়ে মেসে থাকবেন বলেও খোঁজ পাওয়া গেছে।

সকালের সময়ের কথা হয় এমনই একজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে। তিনি কুড়িগ্রামের এক উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে আসা শিক্ষার্থী। নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের এ শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের বাড়ি ময়মনসিংহ থেকে প্রায় সাড়ে তিনশো কিলোমিটার দূরে। বাড়িতে যেতে-আসতেই অনেক সময় চলে যায়। ঈদে যাতায়াত ও টিকিট পাওয়া নিয়েও কষ্ট। তাই আপাতত যাওয়ার চিন্তা নাই। মেসেই থাকবো।


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর