প্রকাশিত:
৫ জুন ২০২৪, ২২:২০
দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) সময় চেয়ে আবেদন করেছেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ। বুধবার (৫ জুন) তার পক্ষে আইনজীবী ১৫ দিনের সময় চেয়ে এ আবেদন করেন। দুদক কমিশনার জহরুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ফলে বৃহস্পতিবার (৬ জুন) তিনি দুদকে যাচ্ছেন না।
এর আগে মঙ্গলবার (৪ জুন) দুদক কমিশনার জহরুল হক জানান, বেনজীর আহমেদ ৬ জুন না এলে, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ধরে নেবে তার কোনো বক্তব্য নেই। তবে তিনি চাইলে অনুসন্ধান কর্মকর্তা ১৫ দিন সময় দিতে পারবে।
দুদক আইনজীবী অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান জানান, গত ৬ মাসে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ তার অ্যাকাউন্ট থেকে কত টাকা তুলেছেন, সেই টাকা কোথায় নিয়েছে সে বিষয়ে খোঁজ চলছে। ভুক্তভোগীরা চাইলে তার বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ এবং থানায় মামলা করতে পারবেন।
প্রসঙ্গত, গত ২৬ মে বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী জিশান মির্জা, বড় মেয়ে ফারহিন রিস্তা বিনতে বেনজীর ও ছোট মেয়ে তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীরের নামে বিভিন্ন সম্পত্তির দলিল, ঢাকায় ফ্ল্যাট ও কোম্পানির আংশিক শেয়ারসহ ১১৯টি স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দেন আদালত।
ক্রোকের নির্দেশ পাওয়া সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে ১১৯টি দলিল। যার মধ্যে ঢাকায় ৪টি ফ্ল্যাট। এর মধ্যে ২০৪২ স্কয়ার ফিট ২টি এবং ২০৫৩ স্কয়ার ফিট ২টি। ৪টি নিজ নামীয় কোম্পানি, ৪টি বিও অ্যাকাউন্ট। ১৫টি আংশিক মালিকানাধীন কোম্পানির শেয়ার।
গত ২৩ এপ্রিল সংবাদ সম্মেলন করে দুদকের সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন জানান, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন নিয়ে গত ৩১ মার্চ একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। পরবর্তী সময়ে আরও কিছু গণমাধ্যমে তার (বেনজীর) বিষয়ে একই ধরনের অভিযোগ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই সব প্রতিবেদনে উঠে আসা অভিযোগগুলোর বিষয়ে দুদক কার্যক্রম শুরু করেছে।
এদিকে বারবার ঠিকানা বদলাচ্ছেন দেশান্তরী বেনজীর আহমেদ। সূত্রমতে বর্তমানে তিনি তুরস্কে। ৬ জুনের আগে দেশে ফেরার সম্ভাবনা নেই। তাই দুদকের তলবে তার হাজিরা নিয়ে রয়েছে সংশয়। এদিকে বান্দরবানে মিলেছে বেনজীরের আরও ১০০ একর জমির সন্ধান। যেখানে গরুর খামার ও মাছের চাষ করতেন তিনি।
দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন এই তথ্য প্রায় নিশ্চিত। কেউ বলছেন দুবাই, কারও মতে তিনি সিঙ্গাপুর। নতুন করে বাজারে চাউর হয়েছে এক সময় শিনা টান করে চলা বেনজীরের এখন নতুন আস্তানা তুরস্কে। একাধিক আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর তথ্য বলছেন, তুরস্কের যে বাসায় অবস্থান করছেন বেনজীর তা তার পুরোনো বন্ধুর। যিনি পুলিশের ঠিকাদারি কাজ করতেন আইজিপি থাকা অবস্থায়। তবে তার অবস্থান নিয়ে কোনো তথ্যই নেই তার আইনজীবীর কাছে।
দুদক আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, আমি মনে করি যেহেতু বিষয়টি নিয়ে দুদকের অনুসন্ধান চলছে, তাই ভুক্তভোগী দুদকে দরখাস্ত দিলে সবচেয়ে ভোলো হয়। এছাড়া কারও থেকে যদি টাকা নিয়ে থাকে তাহলে টাকা উদ্ধারের জন্য তো অন্য পথ অবলম্বন করতে হবে, সিভিল মামলা করতে হবে। অ্যাকাউন্ডগুলোর ওপর পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে।
মন্তব্য করুন: