প্রকাশিত:
৫ জুন ২০২৪, ২০:৫৬
‘আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখার জন্য সাবেক পুলিশপ্রধান বেনজীর আহমেদ সর্বশক্তি নিয়োগ করেছিলেন’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগে ওনার (বেনজীর) নাম ছিল কি না জানি না। আওয়ামী লীগকে ডিফেন্ড করার জন্য, ক্ষমতায় রাখার জন্য তিনি সর্বশক্তি নিয়োগ করেছিলেন। নির্বাচনের সময় তিনি প্রকাশ্যে বলেছেন যে, সেই সরকারকে ভোট দেবেন, যারা উন্নয়ন করছে, উন্নয়ন করতে যাচ্ছে। আমরা উন্নয়নের পক্ষে আছি। বেনজীরের এই কথাগুলো বলার কথা না, কিন্তু কথাগুলো বলেছেন। যত রকম করে পারেন বিরোধী দলকে নির্যাতন-নিপীড়ন করেছেন। বেআইনিভাবে হত্যা, জুডিশিয়াল কাস্টডিতে হত্যা ও গুম-খুন করেছেন। সব মিথ্যা মামলা ও গায়েবি মামলা তার সময়ের।’
বেনজীর আহমেদকে নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দেওয়া বক্তব্যের প্রেক্ষিতে বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আলোচনা সভার আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী ওলামা দল। সংগঠনের আহ্বায়ক মাওলানা কাজী মো. সেলিম রেজার সভাপতিত্বে ও মাওলানা মোহাম্মদ কাজী আবুল হোসেনের সঞ্চালনায় সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, কেন্দ্রীয় নেতা কামরুজ্জামান রতন, এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম জামাল, আব্দুল বারী ড্যানি, মাওলানা শাহ মো. নেসারুল হকসহ ওলামা দলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বেনজীর সাহেব ছিলেন পুলিশ বাহিনী ও র্যাবের প্রধান। সব পত্রিকায় যখন তার অপকীর্তি, চুরি-দুর্নীতি বেরিয়ে আসছে, তখন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেব বলছেন, সে কি আওয়ামী লীগ করে?’
সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আরেকজন সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ। তাকে তারা (আওয়ামী লীগ) অনেককে ডিঙ্গিয়ে, তার দুই ভাই চিহ্নিত সন্ত্রাসী জেনেও সেনাবাহিনীর চিফ (প্রধান) করেছিল। তাদের যে কাজ, তারা সেটা করে দিয়েছিল, নির্বাচন পার করে দিয়েছিল।’
বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে মাঠে নামতে দেওয়া হচ্ছে না অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমাদের ৬০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ২৮ অক্টোবরের পরে ২৭ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যখনই আমরা আন্দোলন করি, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাস্তায় নামি, তখনই তারা একেবারে হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে। পুলিশ-র্যাব আক্রমণ করে।’
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী (শেখ হাসিনা) কয়দিন আগে বলেছেন সাদা চামড়ার লোকরা নাকি তাকে বলেছে যে, কোনো একটা দেশের এয়ারবেজ করতে দেওয়ার জন্য। সেখানে তাদের জঙ্গি বিমান নামবে। আর বাংলাদেশের একটি অংশ চট্টগ্রাম ও মিয়ানমারকে নিয়ে নতুন একটি খ্রিস্টান রাষ্ট্র তৈরি করতে তারা চেষ্টা করছে। প্রধানমন্ত্রীর উচিত হবে এই মুহূর্তে জনগণের কাছে এর প্রকৃত ব্যাখ্যা তুলে ধরা। কারা এটা চাইছে? কেন চাইছে? আর আপনারা কেন এতদিন পর প্রকাশ করছেন? এটা আমরা জানতে চাই। কারণ, আমাদের দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রশ্ন।’
ফখরুল বলেন, ‘আপনাদের (আওয়ামী লীগ) হাতে স্বাধীনতা কোনো দিনই নিরাপদ না। আপনাদের এর আগের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তো বলেই ফেললেন, পাশের একটি দেশের ব্যাপারে। যে তাদের সঙ্গে সম্পর্ক স্বামী-স্ত্রীর মতো। তারা (ভারত) যে অন্যায়ভাবে আমাদের সব ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করছে, সে ব্যাপারে আওয়ামী লীগ কিছু করতে পারছে না। আমাদের পানির হিস্যা দেয় না। সীমান্তে আমাদের হত্যা করা হয়, সেই সম্পর্কে একটা টু শব্দ করে না।’
‘নতুন শিক্ষা কারিকুলামের মাধ্যমে ধর্মহীন রাষ্ট্রে পরিণত করার চেষ্টা করা হচ্ছে’ এমন অভিযোগ তুলে তিনি আরও বলেন, ‘প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠ্যবইয়ে এমন এমন কারিকুলাম আনছে, যা আমার কালচারের বিরুদ্ধে, আমার কৃষ্টির বিরুদ্ধে, আমার ধর্মের বিরুদ্ধে।’
মন্তব্য করুন: