প্রকাশিত:
১ মে ২০২৪, ২২:০৫
‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার’ আশ্রমের চেয়ারম্যান মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি পুলিশ। বুধবার (১ মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ডিবি পুলিশের একটি দল ঢাকার মিরপুর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।
এর আগে গত ২৫ এপ্রিল ‘মানবিক মুখোশের আড়ালে ভয়ংকর মিল্টন সমাদ্দার’ এবং ‘জীবনের ধাপে ধাপে প্রতারণা’ শিরোনামে দুটি সংবাদ প্রকাশ করে দৈনিক কালবেলা। এরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে নিয়ে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। মুখ খুলতে শুরু করেন ভুক্তভোগীরা। এরপর মাঠে নামেন ডজন ডজন সাংবাদিক। উঠে আসে তার একের পর এক ভয়ংকর প্রতারণার আর অপকর্মের তথ্য।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিল্টন সমাদ্দারের সেবামূলক কর্মকাণ্ডের রয়েছে ব্যাপক প্রচারণা। যেখানে দেখা যায়, অসহায়-দুস্থ মানুষের সেবায় তিনি গড়ে তুলেছেন ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ নামের একটি বৃদ্ধাশ্রম। রাস্তা থেকে অসুস্থ ও ভবঘুরেদের কুড়িয়ে ওই বৃদ্ধাশ্রমে আশ্রয় দেন, করেন সেবা-শুশ্রূষা। জনসেবামূলক এসব কর্মকাণ্ডের স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন সরকারি-বেসরকারি নানা পুরস্কারও।
তবে ভালো কাজ যতটুকু করেছেন, প্রচার করেছেন তার চেয়েও কয়েক গুণ। মানুষের কিডনিসহ বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কেটে বিক্রির মতো ভয়ংকর অপকর্মের পাশাপাশি রয়েছে বহু অভিযোগ।
অনুসন্ধানে মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠে এসেছে তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে-
মিল্টন সমাদ্দারের দাবি, আশ্রমে বৃদ্ধদের চিকিৎসা দেওয়া হয় না। কিন্তু অনুসন্ধানে দেখা যায়, তার আশ্রমে চিকিৎসার খরচ বাবদ প্রতিমাসে ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকা খরচ হয়; যা অস্বাভাবিক।
আশ্রমের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত প্রায় ৯০০ মরদেহ দাফন করা হয়েছে বলে দাবি করেন মিল্টন। এসব মরদেহ রাজধানীর মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থান, রায়ের বাজার বুদ্ধিজীবী কবরস্থান ও আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে বলে দাবি তার।
তবে কালবেলার অনুসন্ধানে উঠে আসে মিল্টনের প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সব মিলিয়ে ৫০টি মরদেহ দাফন করা হয়েছে। এ ছাড়া রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে ১৫টির মতো মরদেহ দাফনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। কিন্তু আজিমপুর কবরস্থানে ওই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত কোনো মরদেহের দাফন হয়নি। তবে মিল্টন সমাদ্দারের দাবি অনুযায়ী ৯০০ মরদেহ দাফন করা হলে বাকি ৮৩৫টি মরদেহ কোথায় দাফন করা হয়েছে, তার কোনো সুদুত্তর পাওয়া যায়নি।
মন্তব্য করুন: