[email protected] বুধবার, ১৫ই মে ২০২৪, ৩১শে বৈশাখ ১৪৩১

নাশকতার তথ্য নিচ্ছে বিএনপি

রাজনীতি ডেস্ক

প্রকাশিত:
২৫ নভেম্বার ২০২৩, ১০:১৭

ফাইল ছবি

সরকারের পদত্যাগের দাবিতে ও ঘোষিত তফসিল প্রত্যাখ্যান করে বিএনপির চলমান আন্দোলনে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে যানবাহনে আগুন, নাশকতা, হামলাসহ বিভিন্ন ঘটনার তথ্য সংগ্রহ করছে দলটি। খবর দেশরূপান্তর।

দেশরূপান্তর জানাচ্ছে, বিএনপি দাবি করছে, সরকার এসব ঘটনার দায় তাদের ওপর চাপাচ্ছে। এ অবস্থায় দলটির পক্ষ থেকে সেল খোলা হয়েছে। বিএনপির দপ্তর ও মিডিয়া সেল ঘটনাগুলোর স্থির ও ভিডিও চিত্র সংগ্রহ করছে।

গতকাল শুক্রবার দেশ রূপান্তরকে এসব কথা জানিয়েছেন বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল নেতা। তাদের দাবি, ‘আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে এখন পর্যন্ত বিএনপি যখনই আন্দোলনে নেমেছে, তখনই আন্দোলন ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে রাজপথে বাসে আগুন দেওয়াসহ নানা নাশকতার ঘটনা ঘটাচ্ছে।’

বিএনপির ওই নেতারা মনে করেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এসব নাশকতার ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত। এ অবস্থায় চলমান আন্দোলনে নাশকতা ঘটিয়ে বিএনপির ওপর যাতে দায় চাপাতে না পারে, সে জন্য ঘটনাগুলোর তথ্য জানতে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এর অংশ হিসেবে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্ট, নাশকতার ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে। এর কিছু দলটির মিডিয়া সেলের পেজে প্রকাশ করা হচ্ছে। কিছুটা দপ্তরে রাখা হচ্ছে। ২০ নভেম্বর এসব তথ্য-উপাত্তের কিছু অংশ ঢাকার বিভিন্ন দূতাবাসে পাঠানো হয়েছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, ‘এবার বিএনপি শান্তিপূর্ণ আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। অথচ সরকারের পক্ষ থেকে নাশকতার ঘটনা ঘটিয়ে বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা করে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।’

দেশের জনগণ এসব বিশ^াস করে না দাবি করে মঈন খান বলেন, ‘বিএনপি দায়িত্বশীল দল হিসেবে এসব ঘটনার তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করছে। এই তথ্য-উপাত্ত পেলেই বোঝা যাবে কারা এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে।’

গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সহিংস ঘটনা থেকে শুরু করে চলমান হরতাল-অবরোধে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর, বিস্ফোরণ এবং গুপ্তহত্যার ঘটনা ঘটেছে। প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা, বাসে আগুন লাগানোর ঘটনাসহ বিভিন্ন ধরনের নাশকতার ঘটনা ঘটেছে।

এসব ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলের জ্যেষ্ঠ একাধিক নেতাসহ সারা দেশের অসংখ্য নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

এরই মধ্যে ৮ নভেম্বর বুধবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ‘প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা, বিআরটিসি বাসে আগুনসহ ২৮ অক্টোবরের পর থেকে চলমান অবরোধের সময় নাশকতার দায় স্বীকার করেছেন রিমান্ডে থাকা বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।’

এরপর বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী গণমাধ্যমে এক বিবৃতিতে বলেন, ‘বিএনপি নেতারা নাশকতা করছেন বলে ডিবি পুলিশের পক্ষ থেকে যে বক্তব্য দেওয়া হয়েছে তা সঠিক নয়। কারণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে নেতাদের আদালতে পাঠানোর সময় আইনজীবীদের নেতারা জানিয়েছেন যে তারা এমন স্বীকোরোক্তি দেননি।’

তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের বিষয়ে বিএনপির দপ্তর সংশ্লিষ্ট এক নেতা দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা গেছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের আশপাশেই বাসে আগুন লাগানোর ঘটনা ঘটছে।’

তিনি বলেন, ‘৬ নভেম্বর চট্টগ্রামের চাতরি চৌমহনী বাজারে পুলিশ বক্সের কাছে, ৩১ অক্টোবর ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবের কাছে, বাংলা মোটর মোড়ে, ২৮ অক্টোবর কাকরাইলের কাছে বাসে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটে।’

এ ছাড়া ৬ নভেম্বর চট্টগ্রামে একটি ট্রাকে আগুন দেওয়ার ঘটনায় ফেনীর স্থানীয় যুবলীগ নেতা নুরুল উদ্দিন টিপুকে গ্রেপ্তার ও ১৪ নভেম্বর নাটোরের তাশরীক জামান রিফাত নামে আওয়ামী লীগের কর্মীকে মুখোশসহ গ্রেপ্তারের পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে ওই নেতা দাবি করেন।

দলটির সহদপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু বলেন, সম্প্রতি ঢাকায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও সিলেটের সাবেক মেয়র আরিফুল হকের বাসভবন লক্ষ্য করে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার ভিডিও চিত্র বিভিন্ন মাধ্যম থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।

এ ছাড়া রাজধানীর বিভিন্নস্থানে বাসে অগ্নিকা-ের ঘটনার ভিডিও চিত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। কিছু কিছু ভিডিও বিএনপির মিডিয়া সেলের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশ করা হচ্ছে। দপ্তরের পাশাপাশি বিএনপির পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটির সদস্যরা বিভিন্ন মাধ্যম থেকে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করছেন।

বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার রাতে ফেনী সদর উপজেলার বড় বাজার এলাকায় বালিগাঁও ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সহযোগী দুই নেতা বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়ি লক্ষ্য করে প্রকাশ্যে গুলি করছেন এমন একটি ভিডিও সংগ্রহ করা হয়েছে।

বিএনপি নেতারা জানান, ২০ নভেম্বর ঢাকায় বিভিন্ন দেশের দূতাবাস, বিশেষ করে পশ্চিমা দূতাবাসগুলোতে চিঠি দিয়েছে বিএনপি। চিঠিতে নাশকতা হামলার ঘটনার জন্য সরকারি দল ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দায়ী করে আন্তর্জাতিক তদন্ত দাবি করা হয়েছে।

বাংলা গেজেট/এফএস


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর