প্রকাশিত:
১৫ আগষ্ট ২০২৩, ০০:২৪
ফ্যাসিবাদের অন্যতম প্রধান অস্ত্র হচ্ছে গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করা, সরকার সেই কাজ করে আসছে বলে মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘দেশে এত গণমাধ্যম দেখা যাচ্ছে, কিন্তু তারা কাজ করতে পারছে না। তারা স্বাধীন নয়। স্বাধীনতার পর ৫২ বছরেও গণমাধ্যম স্বাধীন নয়।’
সোমবার (১৪ আগস্ট) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম: দুঃশাসনের দেড় যুগ’ শীর্ষক বিএনপি আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘দেশে করপোরেট মিডিয়া তৈরি করা হয়েছে। বড় বড় ব্যবসায়ীরা এর মালিক। তারা নিজেদের ব্যবসা, ব্যাংকের সুবিধা, টাকা পাচারসহ নিজেদের সব স্বার্থে ব্যবহারের জন্য এই করপোরেট সংস্কৃতি তৈরি করেছে। গণতন্ত্র ছাড়া মুক্ত গণমাধ্যম সম্ভব নয়।
বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করেন, সরকার সমাজকে নষ্ট সমাজে পরিণত করেছে। রাজনীতি, সংসদ, গণমাধ্যমই নয়—প্রতিটি ক্ষেত্রকে নষ্ট করেছে সরকার। এই সরকার ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে বাকশাল প্রতিষ্ঠার জন্য সব আয়োজন সম্পন্ন করেছে।
বিএনপি আয়োজিত এই সেমিনারে ‘বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম: দুঃশাসনের দেড় যুগ’ নামে একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইসমাইল জবিউল্লাহ।
সেমিনারের মূল প্রবন্ধে বলা হয়েছে, দমনপীড়নমূলক কালাকানুন তৈরি করে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে এই সরকার। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের পর সরকারবিরোধী পোস্টে লাইক, কমেন্ট বা শেয়ার দিলেও আইনের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।
গণমাধ্যমের সম্পাদকীয় নীতিতে হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। ভয়ের সংস্কৃতি চালুর পর সংবাদপত্রে এখন রাজনৈতিক কার্টুন দেখা যায় না। সরকারের সমালোচকদের কণ্ঠরোধ করতে বরেণ্য সাংবাদিক, কলামিস্ট ও সম্পাদকদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
গত দেড় দশকে বর্তমান সরকারের সময়ের ৮টি আইনের কথা উল্লেখ করে সেগুলোকে গণমাধ্যমবিরোধী ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণমূলক বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।
সেমিনারে বক্তারা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বদলে সাইবার নিরাপত্তা আইনকে ‘ভাঁওতাবাজি ও আইওয়াশ’ বলে উল্লেখ করেন। তারা বলেন, বিএনপি দেশ পরিচালনার সুযোগ পেলে মুক্ত গণমাধ্যম নিশ্চিত করবে। তারা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ সব কালাকানুন বাতিল করবে এবং মিডিয়া কমিশন গঠন করবে।
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদের সঞ্চালনায় সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, আবদুল মঈন খান, অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, অধ্যাপক শহীদুজ্জামান, গণ অধিকার পরিষদের নুরুল হক, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ ইব্রাহিম, বিএফইউজের এম আবদুল্লাহসহ প্রমুখ। সূত্র: প্রথম আলো
বাংলা গেজেট/বিএম
মন্তব্য করুন: