[email protected] শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ঠা আশ্বিন ১৪৩১

দুপুরে আঘাত হানতে পারে ‘মিধিলি’

fardoush

প্রকাশিত:
১৭ নভেম্বার ২০২৩, ০৮:৩৯

গভীর নিম্নচাপ ‘মিধিলি’র গতিপথ (ছবি-আবহাওয়া অধিদপ্তর)

গভীর নিম্নচাপ ‘মিধিলি’ বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আজ শুক্রবার সকালে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।

শুক্রবার সকালে আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। খবর সমকাল।

দুপুর থেকে সন্ধ্যার মধ্যে ১১ জেলায় আঘাত

ক্রবার দুপুর থেকে সন্ধ্যার মধ্যে দেশের ১১ জেলায় আঘাত হানতে পারে এ ঝড়। ভারতের আবহাওয়া বিজ্ঞানী আনন্দ কে দাস জানান, গভীর নিম্নচাপটি শুক্রবার সকাল নাগাদ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।

আর এটি ওই দিন বিকেলে বাংলাদেশ উপকূলে আঘাত হানতে পারে। এ ক্ষেত্রে ঝড়টি বাংলাদেশের মোংলা ও পটুয়াখালীর খেপুপাড়ার মাঝ দিয়ে স্থলভাগে উঠে আসতে পারে।

আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও আশেপাশের এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপ ‘মিধিলি’ উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে।

এটি গত মধ্যরাতে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৫৫ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিম, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৫২০ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিম, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৪২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হতে পারে।

বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০-৬০

গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের কাছের এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে। 

ভারী বর্ষণ

 গভীর নিম্নচাপটির অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও আশেপাশের বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং এর অদূরবর্তী দ্বীপও চরের ওপর দিয়ে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারি বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে।

সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সংকেত

 চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এছাড়া উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশের দিকেই আসছে। পটুয়াখালীর খেপুপাড়া থেকে চট্টগ্রামের উপকূলের মাঝবরাবর এটি চলে যাবে।

ভোলা জেলার দিকেই এর মূল অংশ যেতে পারে। নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলেও এটি খুব বড় আকারের হবে না বলে ধারণা করছেন আজিজুর রহমান। তিনি বলেন, এটি ছোট আকারের ঘূর্ণিঝড় হতে পারে। তবুও এর মোকাবিলার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

শীত নামাবে ‘মিধিলি’

নিম্নচাপের প্রভাবে এই বৃষ্টি সারাদেশে শীত নামিয়ে আনতে কিছুটা সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেসা। তিনি জানান, নিম্নচাপ কেটে যাওয়ার পর কয়েকদিনের ব্যবধানে আবারও বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এ মাসের শেষ দিকে আবার একটি নিম্নচাপ হতে পারে।

ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান জানান, ঘূর্ণিঝড়টি সর্বোচ্চ ৯০ কিলোমিটার গতিতে সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, খুলনা, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, ভোলা, বরগুনা, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও চট্টগ্রামে আঘাত হানতে পারে। 

তিনি জানান, যেহেতু এখন পূর্ণিমা নেই এবং বাতাসের গতিবেগও কম, সেজন্য জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কাও অনেক কম। আবহাওয়া দপ্তর থেকে বিপদসংকেত দেওয়া হবে। সেটি সাত মাত্রায় উঠলেই যেন দ্রুততার সঙ্গে ঝুঁকিপূর্ণ মানুষদের আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়।

আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখতে মাঠ প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে পর্যাপ্ত খাবার ও নিরাপদ খাবার পানির ব্যবস্থা রাখতেও নির্দেশনা দেওয়ার কথা জানান প্রতিমন্ত্রী।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকায় দমকা ও ঝোড়ো হওয়ার সঙ্গে প্রচুর বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। বিরূপ আবহাওয়ায় পাকা আমন ধান নষ্ট হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। 

গত ২৪ অক্টোবর রাতে ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূলে আঘাত হানে। এতে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূলে প্রাণহানি, বসতবাড়ি ও ফসল নষ্ট হয়।

বাংলা গেজেট/এফএস


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর