প্রকাশিত:
২৮ অক্টোবার ২০২৩, ১৫:৫৮
কয়েক মাস স্বাভাবিক থাকার পর হঠাৎ করে ঢাকাসহ অনেক অঞ্চল থেকেই বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের খবর পাওয়া যাচ্ছে। বাদ যাচ্ছে না সরকারি ছুটির দিন শুক্রবার, শনিবারেও। চাহিদা যখন ১০ হাজার মেগাওয়াটের নিচে তখনও লোডশেডিংয়ের খবর পাওয়া গেছে।
সাধারণত অক্টোবর মাসের এই সময়ে শীতের আবহ চলে আসে। উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে সকাল ও সন্ধ্যায় শীতের পোশাক পরতে হচ্ছে। রাজধানী ঢাকাতেও রাতের দিকে আবহাওয়া অনেকটাই শীতল লক্ষণীয়। ভোররাতে ২১ ডিগ্রি তাপমাত্রায় নেমে আসছে।
এমন সময়ে বিদ্যুতের চাহিদা অনেক কমে যায়, যে কারণে লোডশেডিংমুক্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। সেই রাতেও বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের খবর পাওয়া যাচ্ছে। রাজধানীর অভিজাত এলাকা খ্যাত ধানমন্ডিতে শুক্রবার রাতে দুই থেকে তিন দফায় বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের তথ্য নিশ্চিত করেছেন স্থানীয়রা।
অন্যদিকে সরকারি ছুটির দিনে শিল্পকারখানা বন্ধ থাকায় চাহিদা কমে যায়। এতে করে উৎপাদনে সংকট থাকে না। স্বাভাবিকভাবেই অন্যান্য দিনের তুলনায় সরকারি ছুটির দিনে বিদ্যুৎ সরবরাহ উন্নত থাকে। গ্রাহকের পাশাপাশি বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারাও থাকেন অনেকটা স্বস্তিতে। কিন্তু শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র বাংলামোটর এলাকায় দফায় দফায় বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের শিকার হয়েছেন গ্রাহকরা। দুপুর এবং বিকেলে তিন দফায় লোডশেডিংয়ের তথ্য নিশ্চিত করেছেন শামসুল আলম নামের একজন বাসিন্দা।
ধানমন্ডি ও বাংলামোটর এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহের দায়িত্বে রয়েছে ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি)। কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান বলেছেন, বিদ্যুৎ সরবরাহে কোন ঘাটতি ছিল না। তবে সরকারি ছুটির দিনগুলোতে চাপ কম থাকায় নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ কাজ পরিচালনা করা হয়। সে কারণে কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকতে পারে। এ জন্য আগেই মাইকিং করে জানিয়ে দেওয়া হয়। তবে টেকনিক্যাল কোন কারণে স্থানীয়ভাবে সমস্যা হয়ে থাকতে পারে। আমি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবো কেনো এমন হলো।
অন্যদিকে মিরপুর মুসলিম বাজার এলাকার সুমন নামের এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, শনিবার ভোররাতে বিদ্যুৎ চলে যায়। সকাল ১১ টার পরে এসেছে বিদ্যুৎ। বিদ্যুৎ না থাকায় বৈদ্যুতিক মোটর চালাতে পারেন নি তারা। যে কারণে পানির সংকট দেখা দেয় তাদের ভবনে। কালশী এলাকার বাসিন্দা মোস্তাফিজ বার্তা২৪.কমকে বলেছেন, কিছুদিন ধরে বিদ্যুৎ সরবরাহ অনেকটা ভালো ছিল। শুক্রবার সকাল ৯ টার দিকে হঠাৎ লোডশেডিং শুরু হয়। প্রায় দেড় ঘণ্টা ছিল লোডশেডিং।
পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের দৈনিক উৎপাদন ও চাহিদার রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২৭ অক্টোবর শুক্রবার সন্ধ্যা ৭ টায় সর্বোচ্চ চাহিদা ছিল ১০ হাজার ৯৪৩ মেগাওয়াট। আর সকাল ৮ টায় চাহিদা নেমে এসেছিল ৮ হাজার ৯৭৬ মেগাওয়াটে। ঠিক দুপুরে চাহিদা ছিল ৯ হাজার ৮৬০ মেগাওয়াট। ওই দিন ২৪ ঘণ্টায় মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়েছে ২৪২ দশমিক ৮৮৪ মিলিয়ন কিলোওয়াট আওয়ার। যা গড় করলে দাঁড়ায় ১০ হাজার ১২০ মেগাওয়াট।
উৎপাদন সক্ষমতার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ সরবরাহ করতে গিয়ে নানা রকম পকেট তৈরি হচ্ছে। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে অবশ্য বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, উৎপাদন ১৬ হাজার মেগাওয়াট করতে গেলেই নানা রকম পকেট তৈরি হচ্ছে। আমাদের প্রথম লক্ষ্য ছিল সবার ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া। সেই পরিকল্পনায় সফল হয়েছি। এখন চ্যালেঞ্জ হচ্ছে সাশ্রয়ী মূল্যে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ নিশ্চিত করা। এ জন্য সরকার স্মার্ট গ্রিডের দিকে যাচ্ছে। নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুতের জন্য স্মার্ট গ্রিড জরুরি। আমরা ইতোমধ্যেই সেদিকে যাওয়ার কাজ শুরু করেছি।
বাংলা গেজেট/এমএএইচ
মন্তব্য করুন: