[email protected] মঙ্গলবার, ২৬শে নভেম্বর ২০২৪, ১১ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

হেফাজতের আল্টিমেটাম ও নতুন কর্মসূচি ঘোষণা

রাজনীতি ডেস্ক

প্রকাশিত:
২৫ অক্টোবার ২০২৩, ১৭:৩০

ছবি: সংগৃহীত

গ্রেপ্তার হওয়া সব নেতা-কর্মীর মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করার জন্য সাত দাবিসহ তিন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে নেতা-কর্মীদের মুক্তি ও মামলা প্রত্যাহার না করলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।

বুধবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরীর সভাপতিত্বে ওলামা মাশায়েখ সম্মেলনের ঘোষণাপত্র পাঠ করেন হেফাজতের মহাসচিব মাওলানা সাদিকুর রহমান।

সম্মেলনে জানানো হয়, আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে চট্টগ্রাম, সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরে শানে রেসালাত সম্মেলন করা হবে। আগামী ৩ মাসের মধ্যে সারা দেশে হেফাজতে ইসলামের জেলা, উপজেলা ও মহানগর কমিটি গঠন করা হবে।

ঘোষণাপত্রে ফিলিস্তিনে ইহুদীবাদী ইসরাইলের হামলা ও নির্বিচারে নিরীহ নারী-শিশু ও পুরুষদের হত্যার তীব্র নিন্দা জানানো হয়। সেই সঙ্গে ইসরাইলের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা বলা হয়।

হেফাজতে ইসলামের ৭ দাবি

১. ইহুদিবাদী অবৈধ সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসরাইল ফিলিস্তিনি মুসলমানদের ওপর নির্বিচারে হামলা, ধারাবাহিক নিপীড়ন ও হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে নৃশংসতার চূড়ান্ত সীমা অতিক্রম করেছে। এই হানাদার দখলদার বাহিনী গাজায় হাজারও শিশু, নারী এবং বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করে ক্রমাগত মানবাধিকার লঙ্ঘন করেই চলছে। তাই আজকের সম্মেলন নিরীহ ফিলিস্তিনিদের ওপর অবিলম্বে ইসরায়েলি হামলা বন্ধ ও ইসরায়েলের সঙ্গে সব পর্যায়ের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করা, তাদের সব পণ্য বর্জন করা ও বাণিজ্যিকভাবে তাদের বয়কট করার জন্য বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব রাষ্ট্রের প্রতি জোরাল আহ্বান জানাচ্ছে।

২. প্রায় তিন বছর ধরে মিথ্যা ও বানোয়াট মামলায় কারাগারে বন্দি আছেন হেফাজতের যুগ্মমহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক, অর্থ সম্পাদক মুফতি মুনীর হোসাইন কাসেমী, মুফতি ফখরুল ইসলাম ও মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানীসহ আরও অনেক আলেম। মিথ্যা ও সাজানো মামলায় তাদের এত দীর্ঘ সময় সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে সরকার বন্দি করে রেখেছে। আজকের সম্মেলন কারাবন্দি সব হেফাজত নেতা-কর্মীদের আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে মুক্তি দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছে।

৩. ২০১৩ সাল থেকে অদ্যাবধি হেফাজতে ইসলামের নেতা কর্মীদের নামে দায়ের করা সব মিথ্যা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।

৪. ইসলামবিরোধী সব অপশক্তি প্রতিরোধ, দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও মজলুম মানবতার অধিকার প্রতিষ্ঠায় সর্বস্তরের আলেম ও তৌহিদি জনতাকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে।

৫. আল্লাহ, রাসুল সা. ও ইসলাম ধর্মের অবমাননা এবং মুসলমানদের বিরুদ্ধে কুৎসা রোধে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান রেখে জাতীয় সংসদে আইন পাস করতে হবে।

৬. সরকারিভাবে কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণা এবং তাদের প্রচারণা ও ষড়যন্ত্রমূলক সব অপতৎপরতা বন্ধ করতে হবে।

৭. ঐতিহ্যবাহী দারুল উলুম দেওবন্দের ফতোয়া অনুযায়ী ভারতের মাওলানা সাআদ সাহেবের বিভিন্ন বয়ান শরীয়তের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং চরম বিতর্কিত ও তার মনগড়া চিন্তার ওপর প্রতিষ্ঠিত। তাই বাংলাদেশে মাওলানা সাদ সাহেবের আগমন স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে। শুরায়ি নেজামের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমার সার্বিক ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে ওলামায়ে কেরামকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সহযোগিতা করতে হবে। এক্ষেত্রে নতুন কোনো পরিস্থিতি তৈরি করতে দেওয়া যাবে না। সরকার এ বিষয়ে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে আজকের সম্মেলন জোর দাবি জানাচ্ছে।

হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচি

১. আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে কারাবন্দি হেফাজতের সব নেতা-কর্মীর মুক্তি ও হেফাজত নেতাকর্মীদের নামে দায়ের করা সব মিথ্যা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। অন্যথায় কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

২. আগামী ৩ মাসের মধ্যে সারা দেশে হেফাজতে ইসলামের জেলা, উপজেলা ও মহানগর কমিটি গঠন করা হবে।

৩. আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে চট্টগ্রাম, সিলেট, বি.বাড়িয়া, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরে শানে রেসালাত সম্মেলন করা হবে। পর্যায়ক্রমে অন্য সকল জেলাতেও অনুষ্ঠিত হবে।সূত্র: ইত্তেফাক

বাংলা গেজেট/বিএম


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর