প্রকাশিত:
২১ অক্টোবার ২০২৩, ২০:৫৪
দেশের শেয়ারবাজারে বড় ধরনের চমক দেখিয়েছে লিব্রা ইনফিউশন। এক সপ্তাহেই কোম্পানিটির শেয়ার দাম বেড়েছে ২৭ শতাংশের ওপরে। আর এক মাসের কম সময়ের মধ্যে কোম্পানিটির শেয়ার দাম ৫০ শতংশের ওপরে বেড়েছে।
শেয়ার দামে বড় ধরনের চমক দেখালেও কোম্পানিটির লভ্যাংশের ইতিহাস খুব একটা ভালো না। মূলত শেয়ার সংখ্যা কম হওয়ায় কোনো বিশেষ চক্রের হস্তক্ষেপে এই দাম বেড়েছে বলে মনে করছেন শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা।
আর দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) থেকে কোম্পানিটির শেয়ার দাম বাড়াকে অস্বাভাবিক বলা হচ্ছে। এমনকি ডিএসই থেকে বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করে বার্তাও প্রকাশ করা হয়েছে। তবে সেই সতর্ক বার্তাতে কোনো কাজ হয়নি। উল্টো কোম্পানিটির শেয়ার দাম বাড়ার পালে আরও হাওয়া লেগেছে।
তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত ২৪ সেপ্টেম্বর লিব্রা ইনফিউশনের প্রতিটি শেয়ারের দাম ছিল ৮০৭ টাকা ৮০ পয়সা। এখান থেকে টানা বেড়ে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ১ হাজার ৩৪৬ টাকা ১০ পয়সায় উঠেছে। অর্থাৎ এক মাসের কম সময়ের মধ্যে কোম্পানিটির শেয়ার দাম বেড়েছে ৫৩৮ টাকা ৩০ পয়সা বা ৬৬ দশমিক ৬৪ শতাংশ।
এ দাম বাড়ার ধারা অব্যাহত ছিল গত সপ্তাহজুড়েও। এমনকি এক শ্রেণির বিনিয়োগকারীদের কাছে সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার বিনিয়োগের ক্ষেত্রে পছন্দের শীর্ষে ছিল। এতে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দাম বাড়ার শীর্ষ স্থানটি দখল করেছে কোম্পানিটির শেয়ার।
গত সপ্তাহে শেয়ারবাজারে পাঁচ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ার দাম বেড়েছে ২৭ দশমিক ৫৩ শতাংশ। টাকার অঙ্কে প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৯০ টাকা ৬০ পয়সা। এতে এক সপ্তাহে কোম্পানিটির শেয়ার দাম সম্মেলিতভাবে বেড়েছে ৪৩ কোটি ৬৪ লাখ ৫৭ হাজার ৯৫২ টাকা। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩৪৬ টাকা ১০ পয়সা, যা আগের সপ্তাহের শেষে ছিল ১ হাজার ৫৫ টাকা ৫০ পয়সা।
শেয়ার দাম বাড়ার পাশাপাশি কোম্পানিাটির শেয়ার প্রতিদিন মোটা অঙ্কের লেনদেন হয়েছে। গত সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২০ কোটি ৬৯ লাখ ১০ হাজার টাকা। আর প্রতি কার্যদিবসে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৪ কোটি ১৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
শেয়ারের এমন দাম বাড়া কোম্পানিটি ১৯৯৪ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। ২০২০ সালের পর কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের কোনো ধরনের লভ্যাংশ দেয়নি। ২০২০ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত বছরে সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের ৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয় কোম্পানিটি। তার আগে ২০১৯ সালেও ৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়। তবে ২০১৮ সালে ২০ শতাংশ বোনাস শেয়ার, ২০১৭ সালে ৩০ শতাংশ নগদ এবং ২০১৬ সালে ২৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয় কোম্পানিটি।
মাত্র ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা পরিশোধিত মূলধনের এ কোম্পানিটির শেয়ার সংখ্যা ১৫ লাখ ১ হাজার ৯২০টি। এর মধ্যে ৩৪ দশমিক ৪৩ শতাংশ আছে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের হাতে। বাকি শেয়ারের মধ্যে ৪৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ শেয়ার আছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে। আর প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ১৫ দশমিক ৭০ শতাংশ শেয়ার আছে।
লিব্রা ইউফিউশনের পর গত সপ্তাহে বিনিয়োগকারীদের পছন্দের তালিকায় ছিল খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার দাম বেড়েছে ২৪ দশমিক ৯১ শতাংশ। ১৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ দাম বাড়ার মাধ্যমে পরের স্থানে রয়েছে ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্স।
এছাড়া দাম বাড়ার শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় থাকা-আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের ১৬ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ, কে অ্যান্ড কিউ ১৫ দশমিক ৭৩ শতাংশ, দেশবন্ধু পলিমারের ১৫ দশমিক ৩৮ শতাংশ, সোনালী আঁশের ১৪ দশমিক ৬৯ শতাংশ, ইস্টার্ন লুব্রিকেন্ট ১৪ দশমিক ১৪ শতাংশ, কহিনুর কেমিক্যালর্সের ১২ দশমিক ৮৯ শতাংশ এবং বাংলাদেশ মনোস্পুল পেপারের ১০ দশমিক ১২ শতাংশ দাম বেড়েছে।
বাংলা গেজেট/এমএএইচ
মন্তব্য করুন: