প্রকাশিত:
২১ অক্টোবার ২০২৩, ১৯:৫৫
পতন কাটিয়ে ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফিরেছে দেশের শেয়ারবাজার। গত সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে চার কার্যদিবসই শেয়ারবাজার ছিল ঊর্ধ্বমুখী। এতে সপ্তাহজুড়ে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। ফলে বেড়েছে মূল্যসূচক। একই সঙ্গে বাজার মূলধন বড় অঙ্কে বেড়েছে।
সপ্তাহজুড়ে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বাড়ায় প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা বেড়ে গেছে। একই সঙ্গে প্রধান মূল্যসূচক বেড়েছে ১৯ পয়েন্টের ওপরে। আর দৈনিক গড় লেনদেন বেড়েছে ২৪ শতাংশের বেশি। এর মাধ্যমে টানা দুই সপ্তাহ বাড়লো বাজার মূলধন ও সূচক।
এর আগে গত ২২ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ভিসা নিষেধাজ্ঞার বিষয় জানানো হয়। এরপর দেশের শেয়ারবাজারে টানা দুই সপ্তাহ কমে মূল্যসূচক। এমনকি গত সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসেও মূল্যসূচকের পতন হয়। তবে শেষ চার কার্যদিবস টানা ঊর্ধ্বমুখী থাকে সূচক।
এতে গত সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৯৭টির শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৫৪টির, অপরিবর্তিত রয়েছে ২২৮টির দাম। দাম অপরিবর্তি থাকা এসব প্রতিষ্ঠানের বেশিরভাগ ফ্লোর প্রাইসে (সর্বনিম্ন দাম) আটকে রয়েছে। ক্রেতা না থাকায় এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট বিক্রি করতে পারছেন না বিনিয়োগকারীরা।
বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বাড়ায় সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৮২ হাজার ১৩২ কোটি টাকা। যা গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৭ লাখ ৭৭ হাজার ১৮৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ, সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ৪ হাজার ৯৪৭ কোটি টাকা বা শূন্য দশমিক ৬৪ শতাংশ।
আগের সপ্তাহে বাজার মূলধন বাড়ে ৪০৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ, দুই সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন বেড়েছে ৫ হাজার ৩৫৫ কোটি টাকা। তার আগের দুই সপ্তাহের পতনে বাজর মূলধন কমে ২ হাজার ৩২৪ কোটি টাকা। বাজার মূলধন বাড়ার অর্থ তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার ও ইউনিটের দাম সম্মিলিতভাবে ওই পরিমাণ বেড়েছে।
এদিকে, ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১৯ দশমিক ৬৬ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৩১ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৭ দশমিক ৬৩ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ১২ শতাংশ। তার আগের দুই সপ্তাহে সূচকটি কমে ৪৮ দশমিক শূন্য ২ পয়েন্ট।
অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক কমেছে এক দশমিক ১০ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৩ দশমিক ৮৯ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ১৮ শতাংশ।
আর ইসলামি শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ সূচক বেড়েছে ৫ দশমিক ২৮ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৩৯ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ২ দশমিক ৪৭ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ১৮ শতাংশ।
প্রধান মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৫০০ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৪০৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ, প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বেড়েছে ৯৭ কোটি ৫৬ লাখ টাকা বা ২৪ দশমিক ২১ শতাংশ।
আর সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৫০২ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে মোট লেনদেন হয় ২ হাজার ১৫ কোটি ৪ লাখ টাকা। সে হিসাবে মোট লেনদেন বেড়েছে ৪৮৭ কোটি ৭৫ লাখ টাকা বা ২৪ দশমিক ২১ শতাংশ।
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে সি পার্ল বিচ রিসোর্টের শেয়ার। কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১২০ কোটি ২ লাখ টাকা, যা মোট লেনদেনের ৪ দশমিক ৮০ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সোনালী পেপারের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৯৬ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। ৯৫ কোটি ৮৯ লাখ টাকা লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে জেমিনি সি ফুড।
এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ফু-ওয়াং ফুড, সোনালী আঁশ, দেশবন্ধু পলিমার, ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স, খান ব্রদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ এবং এমারেল্ড অয়েল।
বাংলা গেজেট/এমএএইচ
মন্তব্য করুন: