[email protected] শুক্রবার, ২২শে নভেম্বর ২০২৪, ৮ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

সরকারকে পরাজিত না করে কেউ ক্ষান্ত হবে না

রাজনীতি ডেস্ক

প্রকাশিত:
৯ অক্টোবার ২০২৩, ২১:০৩

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি

দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সাজা দিয়ে আমাদের কি রুখে দেওয়া যাবে, তখন নেতাকর্মীরা বলেন- না। তখন মহাসচিব বলেন, এই সরকারকে পরাজিত না করে এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত না করে কেউ ক্ষান্ত হবে না।

আজ সোমবার (৯ অক্টোবর) বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। খবর কালবেলা।

মির্জা ফখরুল বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে দেশের বাইরে সুচিকিৎসার জন্য তার পরিবারের সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করেছিল। কিন্তু এখন প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তার হাতে কিছু নেই! আদালতের কথা বলেন। বেগম খালেদা জিয়ার কিছু হলে এ দেশের মানুষের এই ফ্যাসিস্টদের কাউকে ছাড়বে না। এই আওয়ামী এখন কোনো রাজনৈতিক দল নয়, তারা ফ্যাসিস্ট। এরা সম্পূর্ণভাবে দেউলিয়া হয়ে গেছে। এরা আর মানুষের দল নয়।

সাজা দিয়ে আমাদের কি রুখে দেওয়া যাবে, তখন নেতাকর্মীরা বলেন- না। তখন মহাসচিব বলেন, একেকটা সাজায় একেকটা নেতা বের হয়ে আসছে। বিএনপি একটি ফিনিক্স পাখির মতো। এই সরকারকে পরাজিত না করে এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত না করে কেউ ক্ষান্ত হবে না।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘সবকিছু বন্ধ করে বসে থাকব’- এমন মন্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, কথা শুনলে মনে হয় আমরা একটা রাজতন্ত্রে বাস করছি। এই দেশটার মালিক মনে হয় শেখ হাসিনা।

এদিন দুপুরের পর থেকেই নয়াপল্টন ও এর আশপাশের এলাকা বিএনপি নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে সরগরম হয়ে ওঠে। দুপুর ২টায় আনুষ্ঠানিকভাবে কর্মসূচি শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা দেরিতে শুরু হয়। রাজধানীর বিভিন্ন ইউনিট থেকে ছোট ছোট মিছিল আসে। স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে নয়াপল্টন। হাতে হাতে ব্যানার, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড দেখা যায়। স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে সমাবেশ স্থল। লোকে লোকারণ্য হয়ে যায় কাকরাইল থেকে ফকিরাপুল এলাকা পর্যন্ত।

সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, এই সরকার কোনো মানবিক সরকার নয়, এই সরকার দানবীয় সরকার। কারণ একজন প্রধানমন্ত্রী হয়ে শেখ হাসিনা এমনভাবে কথা বলতে পারে না। কোনো ধর্মই কোনো মৃত্যুসজ্জার মানুষকে নিয়ে এই মন্তব্য করতে পারে না। এই আওয়ামী লীগ বাকশালের পেটে ঢুকে গিয়েছিল। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান এই আওয়ামী লীগকে রাজি করতে অনুমোদন দিয়েছিলেন। ভুলে গেলে চলবে না। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে যখন গ্রেপ্তার করা হয়, এর উদ্দেশ্য ছিল একটাই তাকে হত্যা করা।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আমাদের একটাই দাবি, সেটা হলো এই শেখ হাসিনার নিঃশর্ত পদত্যাগ। আজকে শেখ হাসিনা এই আদালত আর বিচার বিভাগকে কাজে লাগিয়ে আবার ১৮ ও ১৪ সালের মতো ফাঁকা মাঠে গোল দিয়ে নির্বাচন করতে চায়। জয়ী হতে চায়। বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, পতিতার একটা চরিত্র আছে, কিন্তু এই দেশের আইনমন্ত্রীর সেই চরিত্র নেই। তার মানে তাদের চরিত্র পতিতার কাছেও হার মানায়!

নেতাদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, শুধু বক্তৃতা আর বড় বড় সমাবেশ করে এই শেখ হাসিনা সরে যাবে না। নিজ নিজ এলাকায় জনগণ নেমে পড়ুন, তাহলেই সম্ভব। তা ছাড়া সম্ভব নয়।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, বেগম খালেদা জিয়া এ দেশের ভোটে নির্বাচিত প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী। এই আওয়ামী লীগ তা সহ্য করতে পারে না। তাই তাকে কারাগারে আটক করে রেখেছে।

তিনি বলেন, এই সরকার গণতন্ত্রকামী মানুষকে সহ্য করতে পারে না। এই সরকার দেশে একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করছে। সব বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের ওপর জুলুম, নিপীড়ন করে শেষ করে দিতে চায়।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা রায় দিয়ে রেখেছে। আল্লাহ না করুক, বেগম খালেদা জিয়ার কিছু হলে, এ দেশের মানুষ এই সরকারকে ছারখার করে ফেলবে।

তিনি বলেন, আমাদের অনেক নেতাকে মিথ্যা রায় দেওয়া হচ্ছে। কারণ একটাই- যাতে কেউ নির্বাচন করতে না পায়। কারণ আওয়ামী লীগ নির্বাচনকে ভয় পায়।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, পরিকল্পিভাবে আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে হত্যার দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। ফ্যাসিস্টের অন্যতম উদাহরণ একটি দেশ- বাংলাদেশ। এই ফ্যাসিস্টের কারণে তার মুক্তি মিলছে না। এই ফ্যাসিস্টের হাত থেকে মুক্তি নিতে আমাদের রাস্তায় নামতে হবে।

আওয়ামী লীগ কি সংলাপে যাবে? এমন প্রশ্ন রেখে বলেন, তাদের ভোট চুরির প্রকল্পের কি হবে। সেজন্যই আওয়ামী লীগ সংলাপে যাবে না। এই ভোটচোরদের বিতাড়িত করতে না পারলে কারও অস্তিত্ব থাকবে না। আজ আমাদের ১৭ জন নেতাকে এই ফ্যাসিস্টের আদালত ৫ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন।

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনারের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু, শামসুজ্জামান দুদু, আযম খান, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ।

বাংলা গেজেট/এফএস

 


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর