প্রকাশিত:
৫ অক্টোবার ২০২৩, ২১:৪১
বাংলাদেশ চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অনেক উন্নত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম।
বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) সকালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সিনেট ভবনে ' 'International conference on the role of scienec and technology towards 4IR' শীর্ষক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ড. শামসুল আলম বলেন, দেশে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে যে উন্নয়ন হয়েছে তা শুধু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে নয় প্রাইভেট বিশ^বিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, মেরিন বিশ্ববিদ্যালয়, নার্সিং ও পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে উন্নয়ন ঘটেছে, যা চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
দেশের উন্নয়ন তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী প্রথম বারের মতো দেশ ও জাতির জন্য একটি রূপকল্প ঘোষণা করেছিলেন, যেখানে বলা হয়েছে, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে একটি মধ্যম আয়ের দেশ। সৌভাগ্যক্রমে সঠিক পরিকল্পনা এবং সমষ্টিক অর্থনীতির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার ফলে রূপকল্প ২০২১ এর বেশিরভাগ লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে। ২০১৫ সালের জুলাইয়ের ১ তারিখে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরিত হয়েছে। গত পনেরো বছরে মাথাপিছু আয় প্রায় চার গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০০৯ সালে আমাদের মাথাপিছু আয় ছিল ৮৪৩ ডলার যা এখন ২ হাজার ৭৬৩ ডলার। বাংলাদেশ ২০৩২ সালে হবে ট্রিলিয়ন ডলার অর্থনীতির দেশ আর ২০৪১ সালে হবে স্মার্ট ও উন্নত দেশ। এসময় মন্ত্রী কর্ণাফুলী টানেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, আধুনিক ফ্লাইওভার, বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালসহ বড় বড় প্রজেক্ট বাস্তবায়ন হয়েছে বলে উল্লেখ করেন।
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা যখন দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসেন তখন আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ছিল সাড়ে চার হাজার মেগাওয়াট, যা এখন ২৫ হাজার মেগাওয়াট ছাড়িয়েছে। এখন ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ পৌঁছে গেছে, দুর্গম এলাকা ছাড়া দেশের সকল গ্রাম পাকা সড়ক দ্বারা সংযুক্ত হয়েছে।
বিশ্বের আউটসোর্সিং এর ৫০ ভাগ বাংলাদেশের দখলে উল্লেখকরে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে প্রায় সাড়ে ছয় লাখ শিক্ষার্থী ইন্টারনেট ব্যবহার করে আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে বছরে ৫৫০ মিলিয়ন ডলার আয় করছে। অনলাইন ব্যবসা করে বাংলাদেশের পণ্য বিশে^র কাছে তুলে ধরছে। বাংলাদেশে ১৪ কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে, ১৮ কোটি মোবাইল সিম ব্যবহৃত হয়। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে উন্নয়নের ফলে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশের স্মার্ট এবং উন্নত দেশের কাতারে দাঁড়াতে কোনো বাঁধা থাকবে না বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সামাজিক উন্নয়নের প্রসঙ্গে ড. শামসুল আলম বলেন, এ সময়ে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে জেন্ডার সমতা অর্জিত হয়েছে। আমাদের দেশে ১৮ থেকে ৫৯ বছর বয়সী কর্মে নিযুক্ত জনগোষ্ঠীর ৪৩ ভাগ মহিলা, যারা সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করছে, ভারতে এটা ২০ ভাগ এবং পাকিস্তানে ১৫ ভাগ। মাতৃমৃত্যুর ক্ষেত্রে আমাদের দেশে লাখে ১৮৭ জন মা শিশু জন্ম দিতে মারা যায়, পাকিস্তানে এসংখ্যা ৩০০ এর বেশি এবং ভারতে ২৩৭ জন। আমাদের স্বাস্থ্যসেবা ও জীবন-যাপন পদ্ধতির উন্নতির ফলে মৃত্যু হ্রাস পেয়েছে। নবজাতক ও শিশু মৃত্যুর হারও কমে গেছে। আমাদের গড় আয়ু ৭২ বছর, এটাও দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্বোচ্চ। এই সেমিনার নতুন জ্ঞান সৃষ্টি করে আমাদের চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পথ দেখাবে বলে প্রতিমন্ত্রী প্রত্যাশ ব্যক্ত করেন।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ড. মো: সাহেদ জামানের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মো: হুমায়ূন কবীর, উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মো: সুলতান-উল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রফেসর ড. মো: সাইদুর রহমান প্রমুখ।
বাংলা গেজেট/এমএএইচ
মন্তব্য করুন: