[email protected] বৃহঃস্পতিবার, ১৯শে সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ঠা আশ্বিন ১৪৩১

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের ১০ পরামর্শ

জাতীয় ডেস্ক

প্রকাশিত:
১১ আগষ্ট ২০২৩, ০৩:০৯

রাজধানীতে ‘ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের চ্যালেঞ্জ: উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গুর সংক্রমণ ও মৃত্যু অতীতের সব রেকর্ড ভেঙেছে। শুধু রাজধানী ঢাকা নয়, জেলা থেকে উপজেলা, এমনকি ইউনিয়ন পর্যায়েও ছড়িয়ে পড়েছে ডেঙ্গু। এমন অবস্থায় ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ১০ পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। 

বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) সকালে রাজধানী মহাখালীর নিপসম অডিটোরিয়ামে পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ আয়োজিত ‘ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের চ্যালেঞ্জ: উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক সেমিনারে ১০টি  পরামর্শ বা করণীয় উপস্থাপন করা হয়।

এর মধ্যে আছে- ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধি, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সাধারণ মানুষের সম্পৃক্ততা বাড়ানো, পরিস্থিতি মোকাবিলায় কৌশলগত অগ্রাধিকার ঠিক করা, স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় দক্ষতা বাড়ানো, হাসপাতালে রোগী ব্যবস্থাপনায় সৃজনশীল উদ্যোগ, মশা নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত ব্যবস্থাপনা চালু, মশারি বিতরণ, মশার ওপর নিয়মিত নজরদারি, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে গোটা সরকার ব্যবস্থার সম্পৃক্ততা এবং জোরালো তদারকি ও নিয়মিত কাজের মূল্যায়ন।

সেমিনারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক নাজমুল ইসলাম বলেন, ৫০০ শয্যার হাসপাতালে যখন ১৬০০ রোগী ভর্তি হয়। তাহলে সঠিকভাবে রোগী ব্যবস্থাপনা করা সম্ভব নয়। শুরু থেকে রেফারেল পদ্ধতি চালু হলে রোগীর অবস্থা বুঝে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হতো। এখন ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে দোষারোপের সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে এসে জনগণের সম্পৃক্ততার বাড়তে হবে। এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৭৮ হাজার রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এর বাইরে সারাদেশে পাঁচগুণের বেশি মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে। তারা রোগী বাড়াতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। এদের শনাক্ত করে চিকিৎসা নিশ্চিত করা জরুরি।

অধ্যাপক ড. নাজমুল ইসলাম বলেন, বর্ষা দেরিতে আসায় ডেঙ্গুর ভয়াবহতা আমাদের বুঝতে সময় লাগছে। আমাদের সারাদেশে জরিপের মাধ্যমে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা যাচাই করা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পরেছে। আমাদের আশপাশের দেশগুলো যেভাবে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সফল হয়েছে সেই ধারণা নিয়েও কাজ করতে হবে এবং সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নিয়ে জনগণের অংশগ্রহণ বাড়িয়ে ডেঙ্গু সমাধানে এগিয়ে যেতে হবে।

সেমিনারে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক  ডা. সানিয়া তাহমিনা ও জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের (নিপসম) কীটতত্ত্ব বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মো. গোলাম সারোয়ার।

বক্তব্যে তারা বলেন, আমরা ডেঙ্গু নিয়ে একটি সংকটাপন্ন সময় পার করছি। বাংলাদেশে ডেঙ্গুর বিস্তার গত বছর থেকে পাঁচ গুণ বেড়েছে। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের জন্যই পৃথিবীর জ্বর হয়েছে এবং সেই জ্বরে বাংলাদেশও আক্রান্ত। ২০১৯ সালের থেকেও ২০২৩ সালে ভয়াবহভাবে ডেঙ্গু বিস্তার লাভ করেছে। এই বছর আজকে পর্যন্ত মৃত্যু ৩৬৪ জন। সারাদেশে এর থেকেও  অনেক বেশি মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে এবং মারা যাচ্ছে যা রিপোর্টে আসছে না। এজন্য সমন্বিতভাবে সরকারি বেসরকারি সংস্থা ও জনগণকে এই মারাত্মক ডেঙ্গু বিস্তার রোধে এগিয়ে আসতে হবে।

সেমিনারে সরকারি বেসরকারি পর্যবেক্ষণ, ব্যবস্থাপনা এবং জন সাধারণের মধ্যে সচেতনতাই ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রধান ভূমিকা পালন করতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. শাহ্‌ মনির হোসেন।

তিনি বলেন, সরকারের একার পক্ষে কখনোই ডেঙ্গু দূর করা সম্ভব না। এজন্য সুশীল সমাজ,  গণমাধ্যম এবং সর্ব সাধারণকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। সামগ্রিকভাবে দেশের সেবাদানকারী এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো মিলে সঠিক পরিকল্পনা করে, তা বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে আমরা এই সমস্যা থেকে উত্তরণ পেতে পারি।

সভায় ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ ও পরিস্থিতির ওপরে প্যানেল আলোচনায় জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. মোহাম্মদ মুশতাক হোসেন বলেন, ডেঙ্গু মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। যা জনস্বাস্থ্যর  নীতিমালা অনুযায়ী মোকাবিলা করতে হবে। ডেঙ্গু রোগীদের সম্ভব হলে আলাদাভাবে চিকিৎসা করতে হবে।

সাংবাদিক শিশির মোড়ল বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে সরকারের নির্দিষ্ট গাইড লাইন আছে। কিন্তু তা সঠিকভাবে অনুসরণ করা হচ্ছে না। যৌথভাবে কাজ করে এই ভয়াবহ অবস্থা থেকে উঠে আসতে হবে।বাংলা গেজেট/এফএস

 


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর