প্রকাশিত:
২৬ সেপ্টেম্বার ২০২৩, ২১:৩২
আমরা নিজেরাই আমাদের সবচেয়ে বড় শত্রু বলে মন্তব্য করেছেন যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ। তিনি বলেন, জানুয়ারিতে যদি পা পিছলে যায়, তাহলে আমরা বিএনপি-জামায়াতের কাছে পরাজিত হবো না। আমরা পরাজিত হবো আমাদের নিজেদের কাছে।
মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজশাহীর লালনশাহ মুক্তমঞ্চ পাঠানপাড়া এলাকায় জেলা ও মহানগর যুবলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের অগ্রগতির পথে দুটি অন্তরায়। একটা হচ্ছে- স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তি বিএনপি-জামায়াত খুনিচক্র এবং দ্বিতীয় শত্রু কিন্তু আমরা নিজেরাই। নিজেদের নিষ্ক্রিয়তা, অসততা, অলসতা, অনৈক্য, ব্যক্তিগত লোভ-লালসা, হিংসা-প্রতিহিংসা আমাদের প্রধান শত্রু।
পরশ বলেন, ‘বাংলাদেশের সবখানে উন্নয়ন পৌঁছে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। এরপরও আমরা যদি বিএনপি-জামায়াতের মিথ্যাচার আর অপপ্রচারের কাছে হেরে যাই, তাহলে এর চেয়ে লজ্জার আর কিছু থাকে না। বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি প্রতিযোগিতাপূর্ণ নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসবে যদি আমরা নিজ নিজ দায়িত্ব ঠিকমতো পালন করতে পারি।’
তিনি বলেন, ‘যুবলীগের নেতাকর্মীদের যে কোন ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত থাকতে হবে। এই লক্ষ্যে আমরা তখনই সফল হবো, যখন নিজেদের মধ্যে ভেদাভেদ এবং গ্রুপিং বন্ধ করতে পারব। বর্তমান কঠিন বাস্তবতায় নিজেদের মধ্যে গ্রুপিং এবং বিভক্তি কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। নিজের ভাইয়ের পেছনে না লেগে প্রকৃত শত্রুদের মোকাবিলা করতে হবে। আমাদের প্রকৃত শত্রু স্বাধীনতাবিরোধী চক্র বিএনপি-জামায়াত।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি জামায়াত বাংলা ভাই সৃষ্টি করেছিল। ২০০৪ সালে এই বাগমারা থেকে উত্থান হয়েছিল জেএমবির। দুই যুগ পরও এখনও রাজশাহীর মানুষের মুখ থেকে জেএমবির আতঙ্ক মুছে যায়নি। বিএনপি-জামায়াত আমাদের বলে আমরা নাকি অত্যাচারী এবং কর্তৃত্ববাদী সরকার। হাস্যকর, হাস্যকর ছাড়া আর কিছু বলার নাই। এই সকল মিথ্যাচার করে তারা আমাদের সরকারকে বিব্রত করার চেষ্টা করছে। এমন পরিস্থিতিতে ঘুমন্ত নেতৃত্ব দিয়ে এখন আর আমাদের চলবে না। এখন দরকার একটিভ নেতৃত্ব যারা মিথ্যাচারের জবাব দেবে।’
পরশ আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের দুর্ভাগ্য। আসলে এ দেশের মানুষের দুর্ভাগ্য। যখনই এ দেশের গরীব-দুঃখী মানুষের ভাগ্যোন্নয়নের সুযোগ দেখা দিয়েছে তখনই স্বাধীনতাবিরোধীরা এই দেশের দুঃখী মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে। এখন দুঃখী মানুষেরা একটু সৌভাগ্যের মুখ দেখছে, আবার শুরু হয়েছে এ দেশের দুঃখী মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলার চক্রান্ত। কিন্তু নির্বাচন বানচালের কোন ষড়যন্ত্র যুবসমাজ মেনে নেবে না। আর যদি কোন অনির্বাচিত অথবা অসাংবিধানিক সরকারকে ক্ষমতা বসানোর স্বপ্ন দেখে থাকেন, সেই স্বপ্ন দিবাস্বপ্ন ছাড়া আর কিছু না। বাংলাদেশের যুবসমাজ তা হতে দেবে না।’
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। প্রধান বক্তা ছিলেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল।
বিশেষ অতিথি ছিলেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন, কার্যনির্বাহী সদস্য নুরুল ইসলাম ঠান্ডু, নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী কামাল, জেলার সভাপতি অনিল কুমার সরকার, সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াদুদ দারা, মহানগরের ডাবলু সরকার, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মীর ইকবাল, রাজশাহী-৩ আসনের এমপি আয়েন উদ্দিন, রাজশাহী-৪ আসনের এমপি এনামুল হক, রাজশাহী-৫ আসনের ডা. মনসুর রহমান, সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি আদিবা আনজুম মিতা ও যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. সাজ্জাদ হায়দার লিটন।
বিশেষ বক্তা ছিলেন যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিশ্বাস মতিউর রহমান বাদশা ও রফিকুল আলম সৈকত জোয়ার্দ্দার। সভাপতিত্ব করেন মহানগর যুবলীগের সভাপতি রমজান আলী।
বাংলা গেজেট/এমএএইচ
মন্তব্য করুন: