প্রকাশিত:
২৩ সেপ্টেম্বার ২০২৩, ১৯:৫৪
স্বাধীনতাবিরোধীরা যাতে কোনোমতেই ক্ষমতা আসতে না পারে সে জন্য সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, আমরা সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যাব, যারা চক্রান্ত করবে তাদের বিরোধিতা করব। সম্মিলিত কাজ করে যেতে হবে।’
আজ শনিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম-মুক্তিযুদ্ধে ৭১-এর ষষ্ঠ জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান। খবর বাসস।
অনুষ্ঠানে সেক্টরস কমান্ডারস ফোরামের কার্যনির্বাহী সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নুরুল আলম, সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাক্তার সারওয়ার আলী, সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ম. হামিদ এবং মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা হারুন হাবিব বক্তব্য দেন।
তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। আমাদের ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রীয় প্রতিটি কাজে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়ে, বলিষ্ঠ নেতৃত্বের মাধ্যমে এগিয়ে যেতে হবে।’ দেশের কষ্টার্জিত স্বাধীনতাকে অর্থবহ করতে হলে এবং স্বাধীনতার সুফল জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছতে মুক্তিযোদ্ধাদের উত্তরসূরিসহ সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করারও অনুরোধ করেন রাষ্ট্রপতি।
বীর মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘দীর্ঘ সংগ্রামের ফলশ্রুতিতে আপনারা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন এই আন্দোলনের মধ্যমণি এবং নেতা।’ রাষ্ট্রপতি তার ভাষণে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও উন্নয়নে মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান তুলে ধরেন।
সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয়তাবাদী চেতনায় বিশ্বাসী ছিলেন। তিনি জানতেন কিভাবে ধারাবাহিকভাবে রাজনীতি করতে হয়। তার রাজনীতিতে কোনো রসায়ন কাজ করেনি। বঙ্গবন্ধু ছিলেন জাতির পিতা। তিনি মানুষের অন্তরের কথা তিনি বুঝতেন এবং জানতেন।’
বাংলাদেশের রাজনীতি ইতিহাসের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘১৯৪৮ সালে মাতৃভাষা বাংলা অধিকার আদায়ের আন্দোলনের মাধ্যমে যে দুর্গম পথের যাত্রা শুরু হয়েছিল বা ৫২-এর ভাষা আন্দোলন ৫৪-এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ৫৮-এর সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন, ৬২-এর শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলন, ৬৬-এর ছয় দফা, ৬৯-এর নির্বাচন ও ৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে তার পরিসমাপ্তি ঘটে।
আপনারা জানেন, বঙ্গবন্ধু ছোটবেলা অনেক মানবিক ছিলেন। যারা ক্ষুধার্ত তাদের অন্ন দিতেন। তিনি প্রতিটি ধাপে বাঙালি চেতনাকে লালন করেছেন। তার অসাম্প্রদায়িক চেতনা, তার এই জাতীয়তাবাদী মনোভাব, সামাজিক ন্যায়বিচার ও মানবিক মূল্যবোধ―সব কিছুতেই ছিলেন অনন্যসাধারণ।’
১৯৭১ সালের গণহত্যার প্রসঙ্গ টেনে রাষ্ট্রপতি বলেন, ১৯৭১ সালের বাংলার মাটিতে সংঘটিত এই গণহত্যা বিংশ শতাব্দীর জঘন্যতম বৃহৎ গণহত্যা। ১৯৭১ সালের ১৩ জুন বিশ্ব সাংবাদিক এন্থনি মাসকারেনহাসের লেখা যুক্তরাজ্যের ‘দি সানডে টাইমস’ পত্রিকা ‘গণহত্যা’ বিস্তারিত বিবরণ ছাপা হয়েছে। বাঙালির গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির দাবিতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে জোরালো করা প্রয়োজন। এই দাবি নিয়ে সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের কার্যক্রমকে স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, সরকারও এ ক্ষেত্রে সার্বিক সহযোগিতা করবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশে এখন মর্যাদার আসনে আসীন। দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে বেগবান করতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে কাজ করার কথা বলেন রাষ্ট্রপতি।
বাংলা গেজেট/এফএস
মন্তব্য করুন: